বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ পর্যায়ে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার নম্বর বিন্যাস, সিলেবাসসহ অন্যান্য বিষয় চূড়ান্ত হওয়ার পর চলতি বছরেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হতে পারে।
আজ রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) একটি সূত্র জানায়, পরীক্ষা পদ্ধতি, নম্বরবিন্যাস, সিলেবাসের বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এনটিআরসিএর বোর্ড সভা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর এ বিষয়গুলো চূড়ান্ত করা হবে। এর আগে ১৯তম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা সম্ভব হবে না। এজন্য আরও দুই থেকে তিন সময় লাগতে পারে।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে এনটিআরসিএর এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এন্ট্রি লেভেলে শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। পরীক্ষা পদ্ধতি, নম্বর বিন্যাসসহ অন্যান্য বিষয় চূড়ান্ত হওয়ার পর নতুন বিধিমালা প্রণয়ন করা হবে। পরীক্ষার যাতবীয় বিষয় নির্দিষ্ট করতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হতে পারে। তবে এটি একেবারেই প্রাথমিক একটি ধারণা। বিধিমালা চূড়ান্ত হলে তখন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের চূড়ান্ত সময় জানানো যাবে।’
এদিকে আসন্ন ১৯তম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পরীক্ষা থেকে লিখিত পরীক্ষা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। কেবলমাত্র প্রিলিমিনারি এবং ভাইভার মাধ্যমে প্রার্থী বাছাইয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। অধিক সংখ্যক প্রার্থীর নিয়োগ কার্যক্রম দ্রুত শেষ করার পরিকল্পনা করায় এ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আরেক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এনটিআরসিএর নিয়োগ পরীক্ষায় ১৫-২০ লাখ প্রার্থী আবেদন করে থাকেন। বিপুল সংখ্যক প্রার্থীর লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হলে খাতা মূল্যায়নে দীর্ঘ সময় লাগবে। সেজন্য কেবলমাত্র এমসিকিউ পদ্ধতিতে মূল্যায়নের প্রস্তাব করা হয়েছে। ওএমআর শিট মূল্যায়ন করতে সময় লাগে না। ফলে দ্রুত প্রার্থী বাছাই করা সম্ভব হবে। এমসিকিউ পদ্ধতির পরীক্ষা হলেও প্রশ্নের মান কঠোর করা হবে।
তিন বিভাগের জন্যই ১০০ সাবজেক্টিভ এবং ১০০ জেনারেলের চিন্তা
স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি তিন বিভাগের জন্যই ২০০ নম্বরের পরীক্ষার প্রস্তাব করা হয়েছে। যদিও স্কুল-কলেজে এবং কারিগরিতে ১০০ নম্বর সাবজেক্টিভ এবং ১০০ নম্বর জেনারেল এবং মাদ্রাসারা জন্য ১৪০ নম্বর সাবজেক্টিভ এবং ৬০ নম্বর জেনারেল করা প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এভাবে বিভাজন করলে বৈষম্য তৈরি হতে পারে বলে মনে করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এজন্য তিন বিভাগের জন্য নম্বর প্যাটার্ন একই রকম রাখার চিন্তা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বলেন, ‘পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে আলোচনায় অনেকে অনেক ধরনের প্রস্তাব করেছেন। স্কুল-কলেজে এবং কারিগরির জন্য একরকম। আবার মাদ্রাসার জন্য আরেকরকম। তিন বিভাগের জন্য পৃথক পদ্ধতি করা হলে এক প্রকার বৈষম্য করা হবে। সেজন্য আমরা তিন বিভাগের জন্য একই রকম পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে ভাবছি। সামনে এনটিআরসিএর বোর্ড সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে। পরবর্তীতে মন্ত্রণালয়ের সভায় এটি চূড়ান্ত করা হবে।’
যুক্ত হতে পারে ভাইভার নম্বর
এনটিআরসিএর নিবন্ধন পরীক্ষায় কখনোই প্রার্থীদের ভাইভার নম্বর যুক্ত করা হয়নি। প্রথমবারের মতো ভাইভার নম্বর যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যদিও বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে যেহেতু নিবন্ধনের পরিবর্তে নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজন করা হবে, সেহেতু ভাইভার নম্বর যুক্ত করার ব্যাপারে ইতিবাচক শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এছাড়া পরীক্ষার একটি ধাপ কমে যাওয়ায় ভাইভার নম্বর যুক্ত করা হতে পারে।
এ বিষয়ে মাউশির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বিসিএসসহ সব ধরনের চাকরির পরীক্ষায় ভাইভার নম্বর যুক্ত করা হয়। আমরাও এনটিআরসিএর নিয়োগ পরীক্ষায় ভাইভার নম্বর যুক্ত করার মতামত দিয়েছি। ভাইভার নম্বর যুক্ত না হলে প্রার্থীদের প্রকৃত মেধা যাচাই করা সম্ভব হবে না। আশা করছি আমাদের মতামত শিক্ষা মন্ত্রণালয় গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে।