ঢাকা ১১:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

‘মসজিদ লক্ষ্য করে আপত্তিকর ভিডিও পোস্ট’ থমথমে হাটহাজারী: ১৪৪ ধারা জারি

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘মসজিদ লক্ষ্য করে আপত্তিকর ভিডিও’ পোস্ট করা নিয়ে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে দুই পক্ষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। এছাড়া ভিডিও পোস্ট করা যুবককে আটক করেছে পুলিশ।

শনিবার রাত ১০টার দিকে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মুবিন ১৪৪ ধারা জারির নির্দেশ দেন।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হাটহাজারীর মীরেরহাট থেকে ১১ মাইল এবং উপজেলা গেট থেকে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট পর্যন্ত এলাকায় রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ৩টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে।

হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মুমিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘আমি মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম আমার উপর অর্পিত ক্ষমতাবলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, জনসাধারণের জীবন ও সম্পদ রক্ষা এবং শান্তি-শৃঙ্খলা স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলাধীন মীরের হাট থেকে এগারো মাইল সাবস্টেশন পর্যন্ত এবং উপজেলা গেইট থেকে কৃষি প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট, হাটহাজারী পর্যন্ত রাস্তার উভয়পার্শ্বে এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় শনিবার রাত ১০টা হতে আগামীকাল রোববার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ১৪৪ ধারার আদেশ জারি করলাম।’

আদেশে আরও বলা হয়, ‘উক্ত সময়ে উল্লিখিত এলাকায় সকল প্রকার সভা সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল, গণজমায়েত, বিস্ফোরক দ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র ও সকল প্রকার দেশী অস্ত্র ইত্যাদি বহনসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় ৫ বা ততোধিক ব্যক্তির একত্রে অবস্থান কিংবা চলাফেরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করলাম।’

প্রসঙ্গত, জশনে জুলুসে যাওয়া গাড়িবহরের এক যুবক হাটহাজারী বড় মসজিদ লক্ষ্য করে আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি করে একটি ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করেন। ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে বিকেলে দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও কওমি লোকজন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। পরে ফটিকছড়ি থানা-পুলিশ ওই যুবককে আটক করে।

সন্ধ্যার পর দুই পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে ঢিল–ছোড়াছুড়ি অভিযোগ করে। একপর্যায়ে শিক্ষার্থী ও কওমি লোকজন হাটহাজারী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন। পরে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক আহমেদ দিদার কাসেমী মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে শিক্ষার্থীদের সড়ক ছেড়ে মাদ্রাসায় ঢুকে যেতে বলেন।

এরপর মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও কওমি লোকজন মাদ্রাসার সামনে অবস্থান নেন। অন্যদিকে সুন্নি জনতা অবস্থান নেয় হাটহাজারীর কাচারি সড়কে। উভয় পক্ষ টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। এতে বন্ধ হয়ে যায় হাটহাজারী-খাগড়াছড়ি সড়ক।

ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে উভয় পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

কাদের সিদ্দিকীর বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর

‘মসজিদ লক্ষ্য করে আপত্তিকর ভিডিও পোস্ট’ থমথমে হাটহাজারী: ১৪৪ ধারা জারি

আপডেট সময় ০৭:০২:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘মসজিদ লক্ষ্য করে আপত্তিকর ভিডিও’ পোস্ট করা নিয়ে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে দুই পক্ষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। এছাড়া ভিডিও পোস্ট করা যুবককে আটক করেছে পুলিশ।

শনিবার রাত ১০টার দিকে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মুবিন ১৪৪ ধারা জারির নির্দেশ দেন।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হাটহাজারীর মীরেরহাট থেকে ১১ মাইল এবং উপজেলা গেট থেকে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট পর্যন্ত এলাকায় রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ৩টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে।

হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মুমিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘আমি মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম আমার উপর অর্পিত ক্ষমতাবলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, জনসাধারণের জীবন ও সম্পদ রক্ষা এবং শান্তি-শৃঙ্খলা স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলাধীন মীরের হাট থেকে এগারো মাইল সাবস্টেশন পর্যন্ত এবং উপজেলা গেইট থেকে কৃষি প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট, হাটহাজারী পর্যন্ত রাস্তার উভয়পার্শ্বে এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় শনিবার রাত ১০টা হতে আগামীকাল রোববার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ১৪৪ ধারার আদেশ জারি করলাম।’

আদেশে আরও বলা হয়, ‘উক্ত সময়ে উল্লিখিত এলাকায় সকল প্রকার সভা সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল, গণজমায়েত, বিস্ফোরক দ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র ও সকল প্রকার দেশী অস্ত্র ইত্যাদি বহনসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় ৫ বা ততোধিক ব্যক্তির একত্রে অবস্থান কিংবা চলাফেরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করলাম।’

প্রসঙ্গত, জশনে জুলুসে যাওয়া গাড়িবহরের এক যুবক হাটহাজারী বড় মসজিদ লক্ষ্য করে আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি করে একটি ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করেন। ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে বিকেলে দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও কওমি লোকজন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। পরে ফটিকছড়ি থানা-পুলিশ ওই যুবককে আটক করে।

সন্ধ্যার পর দুই পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে ঢিল–ছোড়াছুড়ি অভিযোগ করে। একপর্যায়ে শিক্ষার্থী ও কওমি লোকজন হাটহাজারী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন। পরে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক আহমেদ দিদার কাসেমী মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে শিক্ষার্থীদের সড়ক ছেড়ে মাদ্রাসায় ঢুকে যেতে বলেন।

এরপর মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও কওমি লোকজন মাদ্রাসার সামনে অবস্থান নেন। অন্যদিকে সুন্নি জনতা অবস্থান নেয় হাটহাজারীর কাচারি সড়কে। উভয় পক্ষ টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। এতে বন্ধ হয়ে যায় হাটহাজারী-খাগড়াছড়ি সড়ক।

ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে উভয় পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।