জাতীয় নির্বাচনকে অর্থবহ করতে পিআর (প্রপোরশনাল রেপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতির বিকল্প নেই বলে দাবি করেছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে ঢাকা-৪ সংসদীয় আসনের কদমতলী এলাকায় অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “মারকা দেখে নয়, এবার জনগণ দলীয় কর্মকাণ্ড মূল্যায়ন করে ভোট দেবে। জামায়াতে ইসলামী যদি পাঁচ বছর রাষ্ট্র পরিচালনা করে, তাহলে দেশ উন্নয়নের দিক থেকে ২৫ বছর এগিয়ে যাবে।”
বুলবুল বলেন, যেই দলের নেতাকর্মীরা ৫ আগস্ট পরবর্তী সারাদেশে খুন, গুম, লুটপাট, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, নৈরাজ্যের সৃষ্টি করেছে সেই দল এখন ভয়ে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন মেনে নিতে পারছে না। তারা জানে পিআর পদ্ধতিতে ভোট হলে কেন্দ্র দখল করা যাবে না, ভোট চুরি করা যাবে না, অস্ত্রের মহড়া দেওয়া যাবে না। তারা চাচ্ছে পুরোনো ব্যবস্থায় নির্বাচন হলে কোনোমতে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে কেন্দ্র দখলের মাধ্যমে ভোট চুরি করে যদি এক ভোটও বেশি আদায় করা যায় তাহলে বিজয় নিশ্চিত হয়ে যাবে।
জাতি যাদের নেতৃত্বে ফ্যাসিবাদ মুক্ত নতুন বাংলাদেশ পেয়েছে সেই তরুণ ছাত্রসমাজ দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে ভোটকেন্দ্র পাহারা দেবে উল্লেখ করে বুলবুল বলেন, পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিটি ভোটের হিস্যা বুঝে নেবে। এক ভোটের ব্যবধানে লাখ-লাখ ভোট নষ্ট হয়ে যাওয়ার পদ্ধতি বাতিল করতে হবেই, হবে।
তিনি আরও বলেন, অতীতে যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিল তাদের দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, দলীয়করণের ফলে ঢাকা-৪ সংসদীয় এলাকা রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এই এলাকার উন্নয়নের নামে বরাদ্দকৃত লাখ-লাখ কোটি টাকা ক্ষমতাসীনরা আত্মসাৎ করেছে। আগামীতে জামায়াতে ইসলামীকে দেশবাসী সুযোগ দিলে, রাষ্ট্রীয় ব্যয়ের প্রতিটি পয়সার হিসাব জনগণের সামনে তুলে ধরবে জামায়াতে ইসলামী।
ছাত্র শিবিরের সাবেক এ কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, জামায়াতে ইসলামী ৫ বছর রাষ্ট্র পরিচালনা করলে দেশ উন্নয়নের দিক থেকে ২৫ বছর এগিয়ে যাবে। কারণ জামায়াতে ইসলামীতে কোনো দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, আত্মীয়করণ, দলীয়করণ, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ নেই। জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি হচ্ছে মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায়। অন্য দলের মতো নির্বাচন আসলে লোক দেখানো সমাজ সেবা জামায়াত করে না। জামায়াতে ইসলামীর ৪ দফা কর্মসূচির অন্যতম একটি হচ্ছে সমাজ সংস্কার ও সমাজ সেবা। জামায়াতে ইসলামী দলমত, ধর্মবর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে ব্যাপক ভিত্তিক সমাজ সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
বেকারত্ব দূরীকরণে জামায়াতে ইসলামী যুব সমাজের জন্য কর্মমুখি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানের সৃষ্টি করছে উল্লেখ করে নূরুল ইসলাম বলেন, জামায়াত একটি প্রশিক্ষিত জাতি গঠনের লক্ষ্যে যুব সমাজকে নৈতিক ও আদর্শিক প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের মতো আরেকটি রাজনৈতিক দল যুব সমাজের হাতে মাদক আর অস্ত্র তুলে দিচ্ছে।
দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজমুক্ত একটি সুখী-সমৃদ্ধ মানবিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসতে তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
জামায়াতের কদমতলী পশ্চিম থানা আমির কবিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা-৪ আসনে মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন।