ঢাকা ০৮:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৫০ হাজার টাকা চাঁদা চেয়ে ‘ভাইরাল’ সেই মিজানের হোটেল ভাঙচুর

ভাইরাল হয়েই যেন বিপাকে পড়েছেন রাজধানীর ভাতের হোটেলের মালিক মিজান। একসময় রিকশাচালক এবং সিএনজিচালকদের ভরসার জায়গা ছিল তার ফুটপাতের ছোট্ট হোটেলটি নামও দিয়েছিলেন ‘গরীবের বুফে’। সুলভ মূল্যে ভাত-মাংসের আয়োজনে দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে দোকানটি। যে দোকানে নেই কোনো মালিক, কর্মচারী।

সবাই নিজ হাতে খাবার নিয়ে খেত।
কিন্তু হঠাৎ ইউটিউবারদের কনটেন্টে ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই যেন ধস নেমে আসে মিজানের ব্যবসায়। সম্প্রতি তার হোটেলে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু বিপদের এখানেই শেষ নয়।

গভীর রাতে মিজানকে খুঁজে না পেয়ে তার হোটেল ভাঙচুর করে গেছে দুর্বৃত্তরা। এমনকি চাঁদা দাবি করেছে ৫০ হাজার টাকা। দেওয়া হয়েছে প্রাণনাশের হুমকিও। এমন অবস্থায় দোকান ভাঙচুর কিংবা আরো বড় কোনো ক্ষতির আশঙ্কায় দিন পার করছেন ‘গরীবের বুফে’খ্যাত ভাতের হোটেলের মালিক মিজান।

মিজান জানান, অনেক বিপদে আছেন তিনি। ৮টায় মাগরিবের আগে বাসায় চলে যেতে হয় তাকে। রাতে যখন দোকান ভেঙেছে তখন তিনি ওখানে থাকলে তার অবস্থাও খারাপ হতো। অশ্রুসিক্ত চোখে মিজান জানান, কখন হুন্ডায় করে এসে কারা তাকে মেরে রেখে যাবে তিনি নিজেও জানেন না। তার কিছু হলে কেউ জানতেও পারবে না।

মিজানের হোটেলে খেতে আসা এক ব্যক্তির সঙ্গে চাঁদাবাজের মারামারি ঘটনা ঘটেছে। ঘটনা উল্লেখ করে সেই ব্যক্তি বলেন, ‘এরা (চাঁদাবাজ) এখানে এসে গ্লাস ভেঙেছে আর কিছু মাল সামানা নিয়ে গেছে। তারা বলেছে, চাঁদা দিতে হবে ৫০ হাজার টাকা। চাঁদা না দিলে দোকান করতে পারবে না। আমি তখন বললাম, এটা তার (মিজান) ব্যাপার, আপনি তার সাথে কথা বলেন। সে এক পর্যায়ে আমার কালার ধরে ফেলল। আমিও এক পর্যায়ে তাকে ধরে বসেছি। এই মারামারি করতে করতে রোডের মাঝখানে চলে গেছি। সবাই গাড়িগুলো থামিয়ে সেই লোকের সঙ্গে রাগারাগি করলো যে মুরব্বি লোকের সাথে তুমি কেন মারামারি করলে?’

এদিকে মিজানের দোকানে খেতে আসা ক্রেতারা অভিযোগ করেছেন খাবারের স্বাদ এখন আগের মতো নেই। গরুর মাংসে লবণ হয় না কিংবা পরিমাণমতো মসলা হয় না। ভাতও সিদ্ধ হয় না। ফলে অনেকেই খেতে এসে না খেয়েই ফিরে যাচ্ছেন। অভিযোগ করে অনেকেই বলছেন, ভাইরাল হওয়ার পর গরীবের বুফেতে আর আগের মতো খাবারের মান পাওয়া যায় না। তবে কেউ কেউ বলছেন, মিজান যেসব চাপের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তাতে করে রান্না করে খাওয়ানোই তার জন্য দুষ্কর হয়ে পড়ছে। বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত মিজানের জন্য নিরাপদে ব্যবসা করার পরিবেশ তৈরির আহ্বানও জানান অনেকে।

ঢাকাভয়েস/২৪জেএ

জনপ্রিয় সংবাদ

ক্লিন ইমেজ আ. লীগ নেতাদের মনোনয়ন দেবে জাপা: কো-চেয়ারম্যান

৫০ হাজার টাকা চাঁদা চেয়ে ‘ভাইরাল’ সেই মিজানের হোটেল ভাঙচুর

আপডেট সময় ০৫:৩০:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ভাইরাল হয়েই যেন বিপাকে পড়েছেন রাজধানীর ভাতের হোটেলের মালিক মিজান। একসময় রিকশাচালক এবং সিএনজিচালকদের ভরসার জায়গা ছিল তার ফুটপাতের ছোট্ট হোটেলটি নামও দিয়েছিলেন ‘গরীবের বুফে’। সুলভ মূল্যে ভাত-মাংসের আয়োজনে দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে দোকানটি। যে দোকানে নেই কোনো মালিক, কর্মচারী।

সবাই নিজ হাতে খাবার নিয়ে খেত।
কিন্তু হঠাৎ ইউটিউবারদের কনটেন্টে ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই যেন ধস নেমে আসে মিজানের ব্যবসায়। সম্প্রতি তার হোটেলে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু বিপদের এখানেই শেষ নয়।

গভীর রাতে মিজানকে খুঁজে না পেয়ে তার হোটেল ভাঙচুর করে গেছে দুর্বৃত্তরা। এমনকি চাঁদা দাবি করেছে ৫০ হাজার টাকা। দেওয়া হয়েছে প্রাণনাশের হুমকিও। এমন অবস্থায় দোকান ভাঙচুর কিংবা আরো বড় কোনো ক্ষতির আশঙ্কায় দিন পার করছেন ‘গরীবের বুফে’খ্যাত ভাতের হোটেলের মালিক মিজান।

মিজান জানান, অনেক বিপদে আছেন তিনি। ৮টায় মাগরিবের আগে বাসায় চলে যেতে হয় তাকে। রাতে যখন দোকান ভেঙেছে তখন তিনি ওখানে থাকলে তার অবস্থাও খারাপ হতো। অশ্রুসিক্ত চোখে মিজান জানান, কখন হুন্ডায় করে এসে কারা তাকে মেরে রেখে যাবে তিনি নিজেও জানেন না। তার কিছু হলে কেউ জানতেও পারবে না।

মিজানের হোটেলে খেতে আসা এক ব্যক্তির সঙ্গে চাঁদাবাজের মারামারি ঘটনা ঘটেছে। ঘটনা উল্লেখ করে সেই ব্যক্তি বলেন, ‘এরা (চাঁদাবাজ) এখানে এসে গ্লাস ভেঙেছে আর কিছু মাল সামানা নিয়ে গেছে। তারা বলেছে, চাঁদা দিতে হবে ৫০ হাজার টাকা। চাঁদা না দিলে দোকান করতে পারবে না। আমি তখন বললাম, এটা তার (মিজান) ব্যাপার, আপনি তার সাথে কথা বলেন। সে এক পর্যায়ে আমার কালার ধরে ফেলল। আমিও এক পর্যায়ে তাকে ধরে বসেছি। এই মারামারি করতে করতে রোডের মাঝখানে চলে গেছি। সবাই গাড়িগুলো থামিয়ে সেই লোকের সঙ্গে রাগারাগি করলো যে মুরব্বি লোকের সাথে তুমি কেন মারামারি করলে?’

এদিকে মিজানের দোকানে খেতে আসা ক্রেতারা অভিযোগ করেছেন খাবারের স্বাদ এখন আগের মতো নেই। গরুর মাংসে লবণ হয় না কিংবা পরিমাণমতো মসলা হয় না। ভাতও সিদ্ধ হয় না। ফলে অনেকেই খেতে এসে না খেয়েই ফিরে যাচ্ছেন। অভিযোগ করে অনেকেই বলছেন, ভাইরাল হওয়ার পর গরীবের বুফেতে আর আগের মতো খাবারের মান পাওয়া যায় না। তবে কেউ কেউ বলছেন, মিজান যেসব চাপের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তাতে করে রান্না করে খাওয়ানোই তার জন্য দুষ্কর হয়ে পড়ছে। বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত মিজানের জন্য নিরাপদে ব্যবসা করার পরিবেশ তৈরির আহ্বানও জানান অনেকে।

ঢাকাভয়েস/২৪জেএ