দীর্ঘ ছয় বছর পর আগামী ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। ক্যাম্পাসজুড়ে নির্বাচনী আমেজে শিক্ষার্থীদের মুখে মুখে এখন প্রশ্ন— ভিপি ও জিএস হলে কত টাকা পাওয়া যায়?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডাকসুর ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) ও জেনারেল সেক্রেটারি (জিএস)-এর আলাদা কোনো বেতন নেই। তবে দায়িত্ব পালনের জন্য এককালীন অর্থ বরাদ্দ থাকে। এ অর্থ মূলত চা-নাস্তা ও সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার খাতে ব্যয় করার জন্য নির্ধারিত।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ভিপি ও জিএসের জন্য বছরে মোট ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ থাকে।
জানতে চাইলে ডাকসুর সাবেক জিএস গোলাম রাব্বানী দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘ভিপি এবং জিএসের জন্য মোট ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ থাকে। এর মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা ভিপির জন্য এবং পাঁচ লাখ টাকা জিএসের জন্য। এই টাকা মূলত চা-নাস্তার জন্য দেওয়া হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তাও করা হয়। আমার জন্য বরাদ্দ হওয়া টাকার মধ্যে দুই লাখ টাকা তুলেছিলাম। আমার নামে ডাকসুতে এখনো তিন লাখ টাকা রয়েছে। এই টাকা আসন্ন কমিটির ভিপি-জিএসকে দিয়ে দেব।’
জানা গেছে, ডাকসুর ভিপি-জিএস পদ দুটি সম্মান ও ক্ষমতার দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ পদ দুটির সবচেয়ে বড় গুরুত্ব হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ দুটি বডি ‘সিনেট’ এবং সিন্ডিকেট’ এর সদস্য হবেন তারা। সেখানে তারা ঢাবির হাজার হাজার শিক্ষার্থীর প্রতিনিধিত্ব করে ছাত্রদের বিভিন্ন দাবির কথা তুলে ধরতে পারবেন। পাশাপাশি ছাত্রদের স্বার্থপরিপন্থী যে কোনো বিষয়ে তারা সেখানে প্রতিবাদ করতে পারবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট এবং সিন্ডিকেটে দেশের ভিআইপি ব্যক্তিরা সদস্য হন। এ দুই বডিতে তারাও অন্য সদস্যদের মতোই ক্ষমতাবান হিসেবে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তাদের মতামত প্রদানের সুযোগ পাবেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন পরিকল্পনা ও বাজেটসহ যেকোনো কর্মসূচিতে তারা ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে সেখানে উপস্থিত থাকবেন তারা।
নীতি নির্ধারণী সভাগুলোসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে সব কাজ-কর্মেই কোনো না কোনোভাবে তাদের সম্পৃক্ততা থাকবে। সমাবর্তন বা যে কোনো কর্মসূচিতে তাদের প্রতিনিধিত্ব থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট অনুমোদন এবং বিভিন্ন উন্নয়নের যে পরিকল্পনা হয় সে সংক্রান্ত কমিটির সদস্য হিসেবেও থাকবেন তারা।
এছাড়া সিলেকশন বোর্ড, যেখানো কাউকে চাকরি দেওয়া বা চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়। সেখানেও একজন প্রতিনিধি হিসেবে তাদের কর্তৃত্ব থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো জরুরি ঘটনার ক্ষেত্রে জরুরি কোনো বৈঠক হলে ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে তারা ওখানেও থাকবেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব বডিতে থেকে নিয়মতান্ত্রিক কোনো বেতন-ভাতা পাবেন না তারা। তবে, সিনেট কিংবা সিন্ডিকেটের বৈঠকে যোগদান করলে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ভাতা পাবেন। তাছাড়া সিন্ডিকেট বা অন্যকোনো বডি থেকে তাদের কোনো দায়িত্ব দিলে সেজন্য যদি কর্তৃপক্ষ সম্মানী দেয় তা-ও তারা পাবেন।