নোয়াখালী মেডিকেল কলেজে হিসাবরক্ষক বনি সদর ওরফে রাকিবের বিরুদ্ধে ভয়াবহ অনিয়ম, টেন্ডারবাজি ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে সিন্ডিকেট তৈরি করে তিনি কলেজের অর্থনৈতিক কার্যক্রম থেকে শুরু করে ফাইলপত্র নিয়ন্ত্রণ পর্যন্ত নিজের আয়ত্তে রেখেছেন বলে অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
অভিযোগ রয়েছে, নিয়মিতভাবে অফিসে উপস্থিত না থাকলেও কলেজের আর্থিক ও প্রশাসনিক ফাইলপত্র তিনি নিজেই নিয়ন্ত্রণ করেন। প্রধান সহকারী পদে কর্মকর্তারা যোগদান করলেও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তাদের কক্ষ, চেয়ার কিংবা ফাইল হস্তান্তর করেননি। এভাবে কলেজের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কার্যত জিম্মি করে রেখেছেন তিনি।
শাসক দলের ক্ষমতার সুবিধা নিয়ে তিনি দীর্ঘদিন টেন্ডারবাজি ও আর্থিক অনিয়ম করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি দলীয় পরিচয়ে সুবিধা ভোগ করলেও বর্তমানে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে একই অনিয়ম অব্যাহত রেখেছেন।
কলেজের আউটসোর্সিং কর্মীদের বেতন ও উৎসব ভাতাতেও তার সিন্ডিকেট জড়িত। কর্মীদের প্রকৃত বেতন ১৬ হাজার টাকার বেশি হলেও ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশে তাদের হাতে দেওয়া হয় মাত্র ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা। ঈদে বরাদ্দ বোনাসও কর্মীদের না দিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। বোনাসের দাবি তুললে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেন তিনি।
এছাড়া কলেজ অধ্যক্ষের স্বাক্ষরের নকল করে বিভিন্ন কাগজপত্রে স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগও উঠেছে। অধ্যক্ষ নিজেও নাকি এসব বিষয়ে অবগত নন।
রাকিবের অবৈধ সম্পদের পরিমাণও কল্পনাতীত। ৩য় শ্রেণির কর্মচারী হয়েও তিনি ঢাকায় জমি কিনে বহুতল ভবন নির্মাণ করেছেন বলে তথ্যসূত্রে জানা গেছে। এছাড়াও নোয়াখালী মাইজদী ও কুমিল্লায় তার নামে বিপুল সম্পত্তি রয়েছে।
মেডিকেল কলেজের সকল কেনাকাটা, বিশেষ করে স্টোর ও চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয়ে কোটি কোটি টাকা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অভিযোগকারীদের দাবি, রাকিবের নির্দেশ ছাড়া কলেজের কোনো বিলই পাশ হয় না।
স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলেছেন একজন হিসাবরক্ষক কীভাবে এত ক্ষমতাবান হয়ে উঠলেন? কোথা থেকে আসে তার এই দুঃসাহস?
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন, রাকিবের সম্পদের হিসাব তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হোক।