আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইসলামী দলগুলো সমঝোতায় পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। গেল কয়েকদিন তাদের বৈঠক দেখে তা স্পষ্ট হয়েছে। তবে কোনো জোট গঠন করবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয় দলগুলো।
এই সমঝোতায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণঅধিকার পরিষদও যুক্ত হতে পারে বলে আলোচনা রয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
এরইমধ্যে একই প্ল্যাটফর্মে আসতে আলোচনা চালাচ্ছে ক্রিয়াশীল বেশ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সংখ্যানুপাতিক ভোটের দাবি আদায়ে মাঠে সরব থাকার বিষয়েও একমত তারা।
আদর্শগত মিল না থকালেও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান এবং নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতের মতো বিষয়গুলো তাদের ঐক্যে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখছে বলে দাবি করছেন দলগুলোর নেতারা।
তবে একই মঞ্চে আসার আলোচনা চালালেও এটিকে অবশ্য কোনো জোট বলতে চাইছেন না তারা। আপাতত দাবি আদায়ে সংঘবদ্ধভাবে মাঠে থাকার পরিকল্পনা তাদের।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, বিএনপি ছাড়া প্রধান সব দলই সংখ্যানুপাতিক ভোটের বিষয়ে একমত। আমরা চেষ্টা করছি, যারা (সংখ্যানুপাতিক ভোটের) পক্ষের তাদের অনেকের সঙ্গে আমরা আবার কথা বলছি।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেন, ‘জোটের ব্যাপারে এখনো কারো সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়নি। তবে যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দল তাদের সবার সাথেই আমাদের সু-সম্পর্ক আছে।’
ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে ‘জুলাই সনদের আইনি’ ভিত্তির অভিন্ন দাবিতে একমত হলেও এটি কোনো রাজনৈতিক সমঝোতা বা জোট নয় বলে জানিয়েছেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন কিংবা মাঠের আন্দোলনে দলীয় মেরুকরণ নতুন নয়। অতীতেও বিএনপি-জামায়াত কিংবা আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টিসহ অন্য অনেক দলই জোটবদ্ধ হয়ে আন্দোলন ও নির্বাচন করেছে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলনসহ আটটি ধর্মভিত্তিক দলের একমঞ্চে আসার চেষ্টা চলছে, তবে তাদের মধ্যে কোনো জোট হবে কি না, তা দৃশ্যমান হবে তফসিল ঘোষণার পর।
যদিও দলগুলোর নেতারা বলছেন, জোট নয়, বরং নিজেদের মধ্যে ‘নির্বাচনি সমঝোতা’ তৈরিতে আলোচনা হচ্ছে। এখনই নির্বাচন নিয়ে ভাবছেন না তারা, শুরুতে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের দাবি আদায়ে একসাথে সরব থাকতে চায় দলগুলো।
ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন বলছেন, ‘জোট হবে না। এটি নির্বাচনী সমঝোতা, আসন বিন্যাস। যার যেখানে যোগ্য প্রার্থী আছে আলাপ-আলোচনা করে সেখানে ওই দলের প্রার্থী থাকবে, অন্য দলের লোকেরা তাকে সমর্থন করবে।’
সূত্র: বিবিসি বাংলা