ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের প্রার্থীর বিরুদ্ধে রিটকারী এক নারী শিক্ষার্থীকে প্রকাশ্যে গণধর্ষণের হুমকি ও রাবি শিক্ষার্থীকে হেনস্থার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল।
আজ মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঁঠালতলা থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে ভিসি ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে রূপ নেয়।
ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, “ছাত্রশিবিরের নেতারা ধারাবাহিকভাবে নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলছে। বিশেষ করে যারা শিবিরের বিপরীতে অবস্থান নেয় বা মত প্রকাশ করে, তাদেরকে লক্ষ্য করে অবমাননাকর মন্তব্য, হুমকি ও হয়রানিমূলক আচরণ করা হচ্ছে।
এসময় বক্তারা জানান, একজন নারী শিক্ষার্থী যখন ডাকসু নির্বাচনে শিবির প্রার্থীর বিরুদ্ধাচরণ করে রিট করেন, তখন তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ধর্ষণের হুমকি একটি ভয়ঙ্কর নজির। তারা বলেন, “এটি শুধু ব্যক্তি আক্রমণ নয়, বরং দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নারীর নিরাপদ অংশগ্রহণের ওপর একটি সরাসরি আঘাত।”
এসময় জবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন , ২৪ আগস্ট না হলে সাদিক, ফরহাদ কি প্রকাশ্যে আসতো? আগামীর সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য ৩১ দফা সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ যখন বিপদে পড়ে তখন কোনো কোনো জায়গা থেকে আওয়াজ উঠে যায়। এই বাংলাদেশে কোনো গণহত্যাকারীর ঠাঁই নেই, এই বাংলাদেশে কোনো গণধর্ষকের ঠাঁই নেই।
তিনি বলেন, কিছু কিছু কুলাঙ্গার মব তৈরির চেষ্টা করছে। নারীদের তীর্যকভাবে দেখিয়ে দিতে চাই। একাত্তরে যেভাবে নারীদের দেখিয়ে দিতো এরা এখন সেভাবে দেখিয়ে দিতে চায়। প্রতিটা ক্যাম্পাসে কিছু কিছু মানুষ গুপ্ত রাজনীতি করে মব তৈরি করে। শিবির অস্বীকার করছে আলী হোসেন তাদের লোক নয়। বাংলাদেশের মানুষ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল দেখতে চায় আপনারা কতজন লোক আছেন। ইন্টেরিম সরকারকে বলতে চাই ওদের এই গুপ্ত রাজনীতি আপনারা বন্ধ করুন। ছাত্রসংসদ নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার ভয়ে একদল লোক মব সৃষ্টি করে। এদেশে গণহত্যা, গণধর্ষণকারীদের ঠাঁই নেই।
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, আমরা গত ১৭ বছর নিজেদের ব্যানারে রাজনৈতিক মিছিল করেছি। এর ফলে আমাদের শত শত নেতাকর্মী হামলা, মামলা, গুম ও খুনের শিকার হয়েছেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের তিন নেতাকে গুম করা হয়। তারা এখনও নিখোঁজ। কিন্তু এতো অত্যাচারের পরও ছাত্রদল অন্যকোনো আশ্রয় নেয় নি।
শিবিরের অনেকে ছাত্রলীগের ছায়াতলে, ব্যানারে এমনকি পোস্টেড নেতা ছিলেন। এছাড়াও জুলাই-২৪ এর পর অনেক সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাত্রলীগের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন। তাদের অপকর্ম, অন্যায়কে প্রশয় দিয়েছেন। যারা ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করতে দাবি তুলেছিলেন, তারাও এখন শিবিরের সভাপতি-সেক্রেটারি। ৭১-এ আপনারা পাকিস্তানের পক্ষে কাজ করেছেন, এখনও তাদের আদর্শ ধারণ করছেন। আপনারা কখনোই বাংলাদেশ নামক দেশ চান নি।
এসময় সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জাফর আহমেদ, যুগ্ম আহ্বায়ক শাহরিয়ার হোসেন, মাহমুদুল হাসান খান, রবিউল আউয়াল, রফিকুল ইসলাম, নাহিয়ান বিন অনিক, রাসেল মিয়া, ওহিদুজ্জামান তুহিন, জাহিদুল ইসলাম, রাশেদ খান, রাহাতসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বক্তব্য রাখেন।###