প্রবাসী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সিআইপি পদকপ্রাপ্ত সাহাঙ্গীর সরদারের উপর ৩০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে কদমতলী থানা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
সাহাঙ্গীর সরদার দীর্ঘ ৩৬ বছর ধরে বিদেশে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। তিনি একাধিকবার সিআইপি পদকপ্রাপ্ত একজন স্বনামধন্য রেমিট্যান্স যোদ্ধা। প্রবাসে থাকলেও দেশের অর্থনীতিতে রেমিট্যান্স প্রেরণের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছেন।
পরিবারের অভিযোগ, গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে স্থানীয় বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলাম পলাশ, স্বপন মিয়া, কামরুল ইসলাম, জুয়েল ও তাদের সহযোগী আলম হোসেন, রানা, বশির, সাগির, সোহাগ, আশিকুল ইসলাম আদর্শসহ ছাত্রদল ও যুবদলের কয়েকজন নেতাকর্মী তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। একাধিকবার তাদের বসতবাড়ি ও নির্মাণাধীন বাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
গত ৪ আগস্ট সাহাঙ্গীর সরদার কদমতলীতে নিজ বাড়িতে অবস্থানকালে স্থানীয় বিএনপি নেতারা শতাধিক ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়ে বাড়ির গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং তাকে হত্যার চেষ্টা চালায়। পরবর্তীতে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তিনি সেদিন রাতেই দেশত্যাগ করতে বাধ্য হন।
ভুক্তভোগী সাহাঙ্গীর সরদার ঢাকা ভয়েস২৪ কে বলেন, আমি সারা জীবন ব্যবসা করেছি, দেশের অর্থনীতিতে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে অবদান রেখেছি। কিন্তু দেশে ফিরে নিজের কষ্টার্জিত অর্থে বাড়ি করার সময় বিএনপি নেতাদের হাতে আমাকে চাঁদাবাজির শিকার হতে হলো। তারা আমার জীবননাশের চেষ্টা করেছে। আমি দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছি। আমার পরিবার প্রতিদিন ভয়-আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। আমি সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং দেশের সৎ রাজনৈতিক নেতাদের কাছে আবেদন করছি—আমাদের যেন সুরক্ষা দেওয়া হয়। যদি প্রবাসীরা দেশে ফিরে নিরাপদ না থাকে, তবে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ হুমকির মুখে পড়বে।
সাহাঙ্গীর সরদারের স্ত্রী মোসা. সখিনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, তার স্বামী কখনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তবুও তাকে লক্ষ্য করে ধারাবাহিকভাবে হামলা, চাঁদাবাজি ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে। মামলা দায়ের করা হলেও পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার করছে না। প্রতিনিয়ত তাদের পরিবারের উপর বাড়ি দখল ও হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, “আমার স্বামী দেশের একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা, দীর্ঘ ৩৬ বছর সুনামের সাথে ব্যবসা করছেন। অথচ তাকে এখন চাঁদার জন্য দেশ ছাড়তে হয়েছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় দিন পার করছি। ড. ইউনুস ও তারেক রহমানের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি—দয়া করে এসব কুখ্যাত সন্ত্রাসীদের হাত থেকে আমাদের সুরক্ষা দিন।”
পরিবারের দাবি, তদন্ত করলে প্রকৃত ঘটনা স্পষ্ট হবে। তবে মামলার আসামিরা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না।