ঢাকা ০১:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ১২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ভূমিদস্যুদের দখলে লক্ষ্মীপুরের ভুলুয়া নদী

ভূমিদস্যুদের দখল, অবৈধ বাঁধ ও বালু উত্তোলনে হারিয়ে যাচ্ছে লক্ষ্মীপুরের ঐতিহ্যবাহী ভুলুয়া নদী। “লক্ষ্মীপুরের এক সময়ের প্রমত্তা ভুলুয়া নদী দখল–দূষণে মৃতপ্রায় হয়ে পড়েছে।

দখল, দূষণে ভরাট ও পলি জমে নদীটি প্রকৃত রূপ হারিয়েছে। একইসঙ্গে দখলদারদের দৌরাত্ম্যে দিন দিন নদীটির পরিধি কমে আসছে। ফলে জেলার ঐতিহ্যর অন্যতম অধ্যায় ভুলুয়া নদী বর্তমানে প্রকৃত বৈশিষ্ট্যচ্যুত হয়ে অতীত ইতিহাস হয়ে যাচ্ছে।

এতে একদিকে যেমনি এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের জীবন-জীবিকা, কৃষ্টি-সভ্যতা, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির মূল ভিত্তি নষ্ট হচ্ছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। অন্যদিকে নদীকেন্দ্রিক জীববৈচিত্র্য চরম হুমকির মুখে পড়েছে বলে মনে করছেন তারা।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার একটি নদী হচ্ছে ভুলুয়া। নদীটির দৈর্ঘ্য ৭১ কিলোমিটার, প্রস্থ ৮৫ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থেকে লক্ষ্মীপুর সদর, কমলনগর ও রামগতি উপজেলা হয়ে মেঘনা নদীতে মিলিত হয়েছে এ নদী। এক সময়ে এ নদীতে উত্তাল ঢেউয়ে প্রবাহমান ছিল পানি। নদীর আশে পাশের লাখো মানুষ কৃষি উৎপাদনসহ নানা প্রয়োজনে ব্যবহার করতো নদীর পানি। বড় বড় সাম্পান নৌকা, জাহাজ চলাচল করতো এ নদীতে। বহু জাতের প্রাকৃতিক মাছের সমাহার ছিল।

বর্তমানে নদীটির বিভিন্ন স্থানে কিছু অসাধু প্রভাবশালী দখল করে মাঝখানে বাঁধ দিয়ে বর্ষা মৌসুমে মাছ চাষ করে আসছে। কেউ কেউ নদীর তীর ঘেষে ঘরবাড়ি তুলে দখল করে রেখেছে। বিভিন্ন ময়লা আবর্জনা ফেলে দূষণ করছে নদীর পানি। এতে করে নদীটি ভরাট ও পলি জমে জমে পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে শুকিয়ে গেছে নদী। এখন প্রায় মৃত হয়ে পড়েছে এ নদীটি।

চর বাদাম, চর আলগী,চর পোড়াগাছা ও চর কাদিরা ইউনিয়নে বর্তমানে প্রায় সাড় ৩ লাখ মানুষ পানি বন্দী রয়েছে। ‘ঢাকা ভয়েস ‘ কে এমনটি জানিয়েছে ভুক্তভোগী জনসাধারণ।

চর বাদাম ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার, মো. মাহফুজুর রহমান ‘ঢাকা ভয়েস ‘ কে বলেন, ভুলুয়া নদী দখল হয়ে যাওয়ার কারণে। রামগতি ও কমলনগর উপজেলার প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষ পানি বন্দী হয়ে আছে। তিনি আরো বলেন, ভুলুয়া নদী দ’খ’লে’র নেপথ্যে রয়েছে, চর পোড়াগাছা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নূরুল আমিন হাওলাদার। মাহফুজ মেম্বার বলেন, নূরুল আমিন চেয়ারম্যান ভুলুয়া নদীর জায়গা দখল করে, সেখানে মানুষের বাড়ি-ঘর তুলে দেওয়ার বিনিময়ে হাতিয়ে নিয়েছে মোটা অঙকের টাকা। ‘ঢাকা ভয়েস’ কে এমনটি জানিয়েছে তিনি।

অন্যদিকে চর বাদাম ইউনিয়ন পরিষদের আরেক মেম্বার মো. জামাল উদ্দিন ‘ঢাকা ভয়েস’ কে দিয়েছেন চাঞ্চল্যকর তথ্য তিনি বলেন, আমিন চেয়ারম্যান ও তার ছেলে রুবেল হাওলাদার মানুষের কাছথেকে টাকা নিয়ে সেখানে ভুলুয়া নদীর মধ্যে মানুষকে বাড়ি-ঘর তুলে দিয়েছে। এভাবে বাবা-ছেলে মিলে ভুলুয়া নদী দখল করে পেলেছে। এই কারণে নদী সরু হয়ে খালের রূপ ধারণ করেছে, অন্যদিকে ভুলুয়া নদীর পাড়ের মানুষেরা নদীতে জাল বসিয়ে মাছ ধরে। ভুলুয়া নদী তে প্রতি ১০ ফুট পর পর একটি করে জাল পাবেন।জালের কারণে পানির স্রোত ঠিক মতো যেতে পারে না। পানি যেতে না পারায় পানি বন্দী হয়ে রয়েছে লক্ষ লক্ষ মানুষ। উপজেলা প্রশাসন নিরব দষর্কের ভূমিকা পালন করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, চর পোড়াগাছা ইউনিয়নের এক সচেতন নাগরিক ‘ঢাকা ভয়েস’ কে দিয়েছেন ভুলুয়া নদী দ’খ’লে’র আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য। সচেতন নাগরিক ‘ঢাকা ভয়েস’ কে বলেন, নাজু দালাল, ইউসুফ মেম্বার, সবুজ মেম্বার, দুলাল মেম্বার (এরা সবাই চর পোড়াগাছা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার) ভুলুয়া নদীর জায়গা দখল করে। মানুষের বাড়ি-ঘর করার জায়গা দিয়ে মানুষের কাছথেকে হাতিয়ে নিয়েছে মোটা অঙকের টাকা। তিনি আরো বলেন আজাদ নগর ব্রীজের পাশে ভূমিদস্যু “কামা পাশা” ভুলুয়া নদীর জায়গা দখল করে অর্ধশত পরিবারকে জায়গা দিয়ে তাদের কাছথেকে হাতিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। আর এই ভুলুয়া নদীর পাড়ের মানুষগুলো “কামাল পাশার” লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে কাজ করে। এই ভুলুয়া নদীতে বাড়ি-ঘর হয়ে যাওয়ার কারণে পানি নামতে না পারা লক্ষ লক্ষ মানুষ পানি বন্দী হয়ে আছে মাসের পর মাস।তাঁর কথা অনুযায়ী এসব অবৈধ দখল মুক্ত করে নদীটি খনন করা হলে লক্ষ লক্ষ মানুষ বাঁচবে এবং শান্তিতে থাকতে পারবে এমনটি ‘ঢাকা ভয়েস’ কে জানিয়েছেন।

ভুলুয়া নদী দ’খ’লে’র নেপথ্যে যারা রয়েছে। এবার ‘ঢাকা ভয়েস ‘ এর অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে ভুলুয়া নদী দ’খ’লকারি কিছু বালুখেকো ও ভূমিদস্যুর নাম। এই ভূমিদস্যুদের তালিকায় রয়েছে, কামাল পাশা ( কখনো আওয়ামী লীগ কখনো বিএনপি ), নাজু দালাল ( সভাপতি চর পোড়াগাছা ইউনিয়ন শ্রমিক লীগ ), নূরুল আমিন হাওলাদার, চেয়ারম্যান চর পোড়াগাছা ইউনিয়ন পরিষদ ( সহসভাপতি, চর পোড়াগাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ), রুবেল হাওলাদার ( সাধারণ সম্পাদক, চর পোড়াগাছা ইউনিয়ন যুবলীগ ), ইউসুফ মেম্বার (সদস্য, চর পোড়াগাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ), সবুজ মেম্বার (সদস্য, চর পোড়াগাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ), দুলাল মেম্বার ( সদস্য, চর পোড়াগাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ), সারু মস্তুরি, বুদ্ধিয়া, জনু মিয়া, খালেদ।

স্থানীয়দের অভিযোগের বিষয়ে,চেয়ারম্যান নূরুল আমিন হাওলাদারের কাছে জানতে চাইলে, তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে ‘ঢাকা ভয়েস’ কে বলেন এবিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। আমার এলাকার নেতারা কিছু টাকা-পয়সা নিয়ে মানুষকে ভুলুয়া নদীর পাড়ে বাড়ি-ঘর তুলে দিয়েছে এমনটি আমি শুনেছি। ভুলুয়া নদী দ’খ’লে’র সাথে আমি ও আমার ছেলে রুবেল হাওলাদার জড়িত নয়। কেউ যদি প্রমাণ দিতে পারে আমি জড়িত তাহলে আমি ৫লক্ষ টাকা পুরষ্কার দিবো। গণমাধ্যম কর্মীকে ধমক দিয়ে নূরুল আমিন চেয়ারম্যান বলেন, আপনি আমাকে কি বুঝান? আমি ১০ বছর মেম্বার ১৫ বছর চেয়ারম্যান ৩৫ বছর ধরে জনপ্রতিনিধি হিসাবে আছি। কেউ বলতে পারবে না কারো কাছথেকে ১০ টাকা খেয়েছি।

সচেতন নাগরিকের অভিযোগের বিষয়ে নাজু দালালের কাছে জানতে চাইলে তিনি, অভিযোগ অস্বীকার করে ‘ঢাকা ভয়েস কে বলেন, আমি বিড়ি খাইনা, সিগারেট খাইনা, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। এগুলো আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার এমনটি জানিয়েছে তিনি।

ভুক্তভোগী জনসাধারণের অভিযোগের বিষয়ে কামাল পাশার কাছে জানতে চাইলে তিনি, অভিযোগ অস্বীকার করে ‘ঢাকা ভয়েস’ কে বলেন আজাদ নগর ব্রীজের পাশে আমি ৫০ পরিবার কে জায়গা দিয়েছি। এরা সবাই বাদ্দা রাস্তা ঘাটে থাকে, পরিবেশ নষ্ট করে। এই কারণে আমি বললাম তো নদীর পাড়ে বসি থাক। আমি এদের কাছথেকে কোনো টাকা নেয়নি। কামাল পাশা ‘ ঢাকা ভয়েস’ কে বলেন, নূরুল আমিন চেয়ারম্যান নদীর জায়গা দখল করে মানুষকে জায়গা দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়েছে। আজাদ নগর ব্রীজ থেকে শুরু করে নোয়াখালীর বর্ডার পর্যন্ত ভুলুয়া নদীতে এক হাজার পুকুর রয়েছে। গণমাধ্যম কর্মী ” কামাল পাশার ” কাছে জানতে চাইলো নদীতে এই পুকুর কারা করেছে। তিনি বললেন, নূরুল আমিন চেয়ারম্যান যাদের কে জায়গা দিয়েছে তারা ভুলুয়া নদীতে পুকুর কেঁটেছে। তিনি বলেন আমি বাঁধা দিয়েছি পুকুর কাটার সময় নূরুল আমিন চেয়ারম্যান আমাকে বলে এরা পুকুর কাঁটে আমি বাঁধা দিয়েছি কেনো সরকারি নদীর জায়গা সেটা সরকার বুঝবে আপনি ফাজলামি করেন কেনো। একজন চেয়ারম্যান যদি এভাবে বলে তাহলে আমরা কোথায় যাবো। আমি হলাম সাধারণ মানুষ। নদীতে এই ১ হাজার পুকুর থাকার কারণে পানি যেতে পারে না।

রামগতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ আমজাদ হোসেন এর কাছে ভুলুয়া নদী খনন ও দখলের বিষয়টি জানতে চাইলে, অভিযোগ স্বীকার করে তিনি ” ঢাকা ভয়েস ” কে বলেন ভুলুয়া নদীর বিষয়টি দেখে পানি উন্নয়ন বোর্ড আর জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা কাজ করছি। জেলায় আমরা ভুলুয়া নদী দ’খ’লে’র তালিকা পাঠিয়েছি।সেগুলো আসলে এবং জেলা থেকে বাজেট হলে আমরা আবার উচ্ছেদ কাজ শুরু করবো। এমনটি ” ঢাকা ভয়েস ” কে জানিয়েছেন।

কমলনগর উপজেলার চর কাদিরা ইউনিয়নের বালুখেকো হিরণ হাওলাদারের বালু সিন্ডিকেট।

এই বালু সিন্ডিকেট হলো, ভুলুয়া নদী দ’খ’ল করে, বালু উত্তোলনকারি বালুখেকো এক চক্র। স্থানীয়দের অভিযোগ, কমলনগর উপজেলা, এসিলেন্ট ও ভূমি অফিসকে মেনেজ করে চলছে , ডাক্তার পাড়া “ভুলুয়া নদী ” থেকে বালু উত্তোলন। স্থানীয়রা বলছে এখন পর্যন্ত ভুলুয়া নদী থেকে প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ ঘনমিটার বালু উত্তোলন করেছে এই চক্র।বালু উত্তোলনের কারণে স্থানীয়দের বাড়ি ঘর হেলে পড়ছে আতংকে দিন কাটাচ্ছে ডাক্তার পাড়া এলাকার মানুষ। বালু সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে স্থানীয়দের মারধর করে দেওয়া হয় প্রাণ নাশের হুমকি। হিরণ হাওলাদারের বালু সিন্ডিকেট বালু উত্তোলনের কার্যক্রমে।

এই বালুখেকো চক্রের জড়িত রয়েছে যাদের নাম, হিরণ হাওলাদার ( সভাপতি, চর কাদিরা ইউনিয়ন বিএনপি), মো. আব্দুর রহিম মেম্বার ( সাধারণ সম্পাদক, চর পোড়াগাছা ইউনিয়ন বিএনপি), রেহানা বেগম (মহিলা দলের নেত্রী, কমলনগর উপজেলা), আবুল কালাম আজাদ (সাবেক ছাত্রদল নেতা), ইউসুফ ( যুবদল নেতা) সহ আরো অনেকে।

বালু উত্তোলনের বিষয়ে হিরণ হাওলাদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে “ঢাকা ভয়েস ” কে বলেন তাঁরা তাদের ক্রয়কৃত নিজস্ব জমি থেকে বালু উত্তোলন করেছেন। ভুলুয়া নদী থেকে বালু উত্তোলন করেনি। গণমাধ্যম কর্মীর হিরণ হাওলাদারকে জিজ্ঞেস করলেন যেখান থেকেই বালু উত্তোলন করেন না কেনো এট সম্পূর্ণ অবৈধ। এ বিষয়ে তিনি অবগত নয় “ঢাকা ভয়েস” কে এমনটি জানিয়েছে।

আব্দুর রহিম মেম্বার কাছে বালু উত্তোলনের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে “ঢাকা ভয়েস” কে বলেন বালু উত্তোলনের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।

এদিকে স্থানীয় ইটভাটা মালিকরা তাদের পরিবহনের স্বার্থে চরকাদিরা এলাকায় নদীর উপর একাধিক কাঁচা সড়ক নির্মাণ করে অবরুদ্ধ রেখেছেন ভুলুয়া নদীটি।

কমলনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, রাহাত উজ জামান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি “ঢাকা ভয়েস” কে বলেন, বালু উত্তোলনের বিষয়টি শুনে আমরা ব্যবস্তা নিয়েছি।আমরা তদন্ত করে দেখবো যদি আবারও বালু উত্তোলন করে তাহলে আইনানুক ব্যবস্তা নিবো। এমনটি “ঢাকা ভয়েস ” কে জানিয়েছেন।

স্থানীয় সমাজ চিন্তাবিদ ও নদী গবেষক সানা উল্লাহ সানু জানান, ১৯১২ থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত প্রমত্তা নদী ছিল ভুলুয়া। ১৯৯৬ সালে ভুলুয়া নদী খনন করা হয়। দীর্ঘদিন পরে এখন আবার ভুলুয়া নদী দখল দূষণ ও পলী জমে নদীটি তার স্বরুপ হারিয়ে ফেলেছে। নদীটি দখলমুক্ত করার দাবি জানিয়ে তিনি আরো বলেন নদীটি খনন করে তার স্বরুপ ফিরিয়ে দিলে এ অঞ্চলের ৩০ হাজার কৃষকসহ লাখো মানুষ এর সুফল ভোগ করবেন।

লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদ উজ জামান খান এর কাছে ভুলুয়া নদী খনন ও দখল মুক্ত করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি, অভিযোগ স্বীকার করে “ঢাকা ভয়েস” কে বলেন, ভুলুয়া নদীতে কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, যার কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে ।আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা অচিরেই ভুলুয়া নদী খনন ও দখল মুক্ত করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্তা করার উদ্দ্যোগ নিচ্ছি। এমনটি “ঢাকা ভয়েস ” কে জানিয়েছেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাইলেন ডিএমপি কমিশনার

ভূমিদস্যুদের দখলে লক্ষ্মীপুরের ভুলুয়া নদী

আপডেট সময় ০৯:৪১:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫

ভূমিদস্যুদের দখল, অবৈধ বাঁধ ও বালু উত্তোলনে হারিয়ে যাচ্ছে লক্ষ্মীপুরের ঐতিহ্যবাহী ভুলুয়া নদী। “লক্ষ্মীপুরের এক সময়ের প্রমত্তা ভুলুয়া নদী দখল–দূষণে মৃতপ্রায় হয়ে পড়েছে।

দখল, দূষণে ভরাট ও পলি জমে নদীটি প্রকৃত রূপ হারিয়েছে। একইসঙ্গে দখলদারদের দৌরাত্ম্যে দিন দিন নদীটির পরিধি কমে আসছে। ফলে জেলার ঐতিহ্যর অন্যতম অধ্যায় ভুলুয়া নদী বর্তমানে প্রকৃত বৈশিষ্ট্যচ্যুত হয়ে অতীত ইতিহাস হয়ে যাচ্ছে।

এতে একদিকে যেমনি এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের জীবন-জীবিকা, কৃষ্টি-সভ্যতা, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির মূল ভিত্তি নষ্ট হচ্ছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। অন্যদিকে নদীকেন্দ্রিক জীববৈচিত্র্য চরম হুমকির মুখে পড়েছে বলে মনে করছেন তারা।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার একটি নদী হচ্ছে ভুলুয়া। নদীটির দৈর্ঘ্য ৭১ কিলোমিটার, প্রস্থ ৮৫ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থেকে লক্ষ্মীপুর সদর, কমলনগর ও রামগতি উপজেলা হয়ে মেঘনা নদীতে মিলিত হয়েছে এ নদী। এক সময়ে এ নদীতে উত্তাল ঢেউয়ে প্রবাহমান ছিল পানি। নদীর আশে পাশের লাখো মানুষ কৃষি উৎপাদনসহ নানা প্রয়োজনে ব্যবহার করতো নদীর পানি। বড় বড় সাম্পান নৌকা, জাহাজ চলাচল করতো এ নদীতে। বহু জাতের প্রাকৃতিক মাছের সমাহার ছিল।

বর্তমানে নদীটির বিভিন্ন স্থানে কিছু অসাধু প্রভাবশালী দখল করে মাঝখানে বাঁধ দিয়ে বর্ষা মৌসুমে মাছ চাষ করে আসছে। কেউ কেউ নদীর তীর ঘেষে ঘরবাড়ি তুলে দখল করে রেখেছে। বিভিন্ন ময়লা আবর্জনা ফেলে দূষণ করছে নদীর পানি। এতে করে নদীটি ভরাট ও পলি জমে জমে পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে শুকিয়ে গেছে নদী। এখন প্রায় মৃত হয়ে পড়েছে এ নদীটি।

চর বাদাম, চর আলগী,চর পোড়াগাছা ও চর কাদিরা ইউনিয়নে বর্তমানে প্রায় সাড় ৩ লাখ মানুষ পানি বন্দী রয়েছে। ‘ঢাকা ভয়েস ‘ কে এমনটি জানিয়েছে ভুক্তভোগী জনসাধারণ।

চর বাদাম ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার, মো. মাহফুজুর রহমান ‘ঢাকা ভয়েস ‘ কে বলেন, ভুলুয়া নদী দখল হয়ে যাওয়ার কারণে। রামগতি ও কমলনগর উপজেলার প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষ পানি বন্দী হয়ে আছে। তিনি আরো বলেন, ভুলুয়া নদী দ’খ’লে’র নেপথ্যে রয়েছে, চর পোড়াগাছা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নূরুল আমিন হাওলাদার। মাহফুজ মেম্বার বলেন, নূরুল আমিন চেয়ারম্যান ভুলুয়া নদীর জায়গা দখল করে, সেখানে মানুষের বাড়ি-ঘর তুলে দেওয়ার বিনিময়ে হাতিয়ে নিয়েছে মোটা অঙকের টাকা। ‘ঢাকা ভয়েস’ কে এমনটি জানিয়েছে তিনি।

অন্যদিকে চর বাদাম ইউনিয়ন পরিষদের আরেক মেম্বার মো. জামাল উদ্দিন ‘ঢাকা ভয়েস’ কে দিয়েছেন চাঞ্চল্যকর তথ্য তিনি বলেন, আমিন চেয়ারম্যান ও তার ছেলে রুবেল হাওলাদার মানুষের কাছথেকে টাকা নিয়ে সেখানে ভুলুয়া নদীর মধ্যে মানুষকে বাড়ি-ঘর তুলে দিয়েছে। এভাবে বাবা-ছেলে মিলে ভুলুয়া নদী দখল করে পেলেছে। এই কারণে নদী সরু হয়ে খালের রূপ ধারণ করেছে, অন্যদিকে ভুলুয়া নদীর পাড়ের মানুষেরা নদীতে জাল বসিয়ে মাছ ধরে। ভুলুয়া নদী তে প্রতি ১০ ফুট পর পর একটি করে জাল পাবেন।জালের কারণে পানির স্রোত ঠিক মতো যেতে পারে না। পানি যেতে না পারায় পানি বন্দী হয়ে রয়েছে লক্ষ লক্ষ মানুষ। উপজেলা প্রশাসন নিরব দষর্কের ভূমিকা পালন করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, চর পোড়াগাছা ইউনিয়নের এক সচেতন নাগরিক ‘ঢাকা ভয়েস’ কে দিয়েছেন ভুলুয়া নদী দ’খ’লে’র আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য। সচেতন নাগরিক ‘ঢাকা ভয়েস’ কে বলেন, নাজু দালাল, ইউসুফ মেম্বার, সবুজ মেম্বার, দুলাল মেম্বার (এরা সবাই চর পোড়াগাছা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার) ভুলুয়া নদীর জায়গা দখল করে। মানুষের বাড়ি-ঘর করার জায়গা দিয়ে মানুষের কাছথেকে হাতিয়ে নিয়েছে মোটা অঙকের টাকা। তিনি আরো বলেন আজাদ নগর ব্রীজের পাশে ভূমিদস্যু “কামা পাশা” ভুলুয়া নদীর জায়গা দখল করে অর্ধশত পরিবারকে জায়গা দিয়ে তাদের কাছথেকে হাতিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। আর এই ভুলুয়া নদীর পাড়ের মানুষগুলো “কামাল পাশার” লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে কাজ করে। এই ভুলুয়া নদীতে বাড়ি-ঘর হয়ে যাওয়ার কারণে পানি নামতে না পারা লক্ষ লক্ষ মানুষ পানি বন্দী হয়ে আছে মাসের পর মাস।তাঁর কথা অনুযায়ী এসব অবৈধ দখল মুক্ত করে নদীটি খনন করা হলে লক্ষ লক্ষ মানুষ বাঁচবে এবং শান্তিতে থাকতে পারবে এমনটি ‘ঢাকা ভয়েস’ কে জানিয়েছেন।

ভুলুয়া নদী দ’খ’লে’র নেপথ্যে যারা রয়েছে। এবার ‘ঢাকা ভয়েস ‘ এর অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে ভুলুয়া নদী দ’খ’লকারি কিছু বালুখেকো ও ভূমিদস্যুর নাম। এই ভূমিদস্যুদের তালিকায় রয়েছে, কামাল পাশা ( কখনো আওয়ামী লীগ কখনো বিএনপি ), নাজু দালাল ( সভাপতি চর পোড়াগাছা ইউনিয়ন শ্রমিক লীগ ), নূরুল আমিন হাওলাদার, চেয়ারম্যান চর পোড়াগাছা ইউনিয়ন পরিষদ ( সহসভাপতি, চর পোড়াগাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ), রুবেল হাওলাদার ( সাধারণ সম্পাদক, চর পোড়াগাছা ইউনিয়ন যুবলীগ ), ইউসুফ মেম্বার (সদস্য, চর পোড়াগাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ), সবুজ মেম্বার (সদস্য, চর পোড়াগাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ), দুলাল মেম্বার ( সদস্য, চর পোড়াগাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ), সারু মস্তুরি, বুদ্ধিয়া, জনু মিয়া, খালেদ।

স্থানীয়দের অভিযোগের বিষয়ে,চেয়ারম্যান নূরুল আমিন হাওলাদারের কাছে জানতে চাইলে, তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে ‘ঢাকা ভয়েস’ কে বলেন এবিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। আমার এলাকার নেতারা কিছু টাকা-পয়সা নিয়ে মানুষকে ভুলুয়া নদীর পাড়ে বাড়ি-ঘর তুলে দিয়েছে এমনটি আমি শুনেছি। ভুলুয়া নদী দ’খ’লে’র সাথে আমি ও আমার ছেলে রুবেল হাওলাদার জড়িত নয়। কেউ যদি প্রমাণ দিতে পারে আমি জড়িত তাহলে আমি ৫লক্ষ টাকা পুরষ্কার দিবো। গণমাধ্যম কর্মীকে ধমক দিয়ে নূরুল আমিন চেয়ারম্যান বলেন, আপনি আমাকে কি বুঝান? আমি ১০ বছর মেম্বার ১৫ বছর চেয়ারম্যান ৩৫ বছর ধরে জনপ্রতিনিধি হিসাবে আছি। কেউ বলতে পারবে না কারো কাছথেকে ১০ টাকা খেয়েছি।

সচেতন নাগরিকের অভিযোগের বিষয়ে নাজু দালালের কাছে জানতে চাইলে তিনি, অভিযোগ অস্বীকার করে ‘ঢাকা ভয়েস কে বলেন, আমি বিড়ি খাইনা, সিগারেট খাইনা, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। এগুলো আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার এমনটি জানিয়েছে তিনি।

ভুক্তভোগী জনসাধারণের অভিযোগের বিষয়ে কামাল পাশার কাছে জানতে চাইলে তিনি, অভিযোগ অস্বীকার করে ‘ঢাকা ভয়েস’ কে বলেন আজাদ নগর ব্রীজের পাশে আমি ৫০ পরিবার কে জায়গা দিয়েছি। এরা সবাই বাদ্দা রাস্তা ঘাটে থাকে, পরিবেশ নষ্ট করে। এই কারণে আমি বললাম তো নদীর পাড়ে বসি থাক। আমি এদের কাছথেকে কোনো টাকা নেয়নি। কামাল পাশা ‘ ঢাকা ভয়েস’ কে বলেন, নূরুল আমিন চেয়ারম্যান নদীর জায়গা দখল করে মানুষকে জায়গা দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়েছে। আজাদ নগর ব্রীজ থেকে শুরু করে নোয়াখালীর বর্ডার পর্যন্ত ভুলুয়া নদীতে এক হাজার পুকুর রয়েছে। গণমাধ্যম কর্মী ” কামাল পাশার ” কাছে জানতে চাইলো নদীতে এই পুকুর কারা করেছে। তিনি বললেন, নূরুল আমিন চেয়ারম্যান যাদের কে জায়গা দিয়েছে তারা ভুলুয়া নদীতে পুকুর কেঁটেছে। তিনি বলেন আমি বাঁধা দিয়েছি পুকুর কাটার সময় নূরুল আমিন চেয়ারম্যান আমাকে বলে এরা পুকুর কাঁটে আমি বাঁধা দিয়েছি কেনো সরকারি নদীর জায়গা সেটা সরকার বুঝবে আপনি ফাজলামি করেন কেনো। একজন চেয়ারম্যান যদি এভাবে বলে তাহলে আমরা কোথায় যাবো। আমি হলাম সাধারণ মানুষ। নদীতে এই ১ হাজার পুকুর থাকার কারণে পানি যেতে পারে না।

রামগতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ আমজাদ হোসেন এর কাছে ভুলুয়া নদী খনন ও দখলের বিষয়টি জানতে চাইলে, অভিযোগ স্বীকার করে তিনি ” ঢাকা ভয়েস ” কে বলেন ভুলুয়া নদীর বিষয়টি দেখে পানি উন্নয়ন বোর্ড আর জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা কাজ করছি। জেলায় আমরা ভুলুয়া নদী দ’খ’লে’র তালিকা পাঠিয়েছি।সেগুলো আসলে এবং জেলা থেকে বাজেট হলে আমরা আবার উচ্ছেদ কাজ শুরু করবো। এমনটি ” ঢাকা ভয়েস ” কে জানিয়েছেন।

কমলনগর উপজেলার চর কাদিরা ইউনিয়নের বালুখেকো হিরণ হাওলাদারের বালু সিন্ডিকেট।

এই বালু সিন্ডিকেট হলো, ভুলুয়া নদী দ’খ’ল করে, বালু উত্তোলনকারি বালুখেকো এক চক্র। স্থানীয়দের অভিযোগ, কমলনগর উপজেলা, এসিলেন্ট ও ভূমি অফিসকে মেনেজ করে চলছে , ডাক্তার পাড়া “ভুলুয়া নদী ” থেকে বালু উত্তোলন। স্থানীয়রা বলছে এখন পর্যন্ত ভুলুয়া নদী থেকে প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ ঘনমিটার বালু উত্তোলন করেছে এই চক্র।বালু উত্তোলনের কারণে স্থানীয়দের বাড়ি ঘর হেলে পড়ছে আতংকে দিন কাটাচ্ছে ডাক্তার পাড়া এলাকার মানুষ। বালু সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে স্থানীয়দের মারধর করে দেওয়া হয় প্রাণ নাশের হুমকি। হিরণ হাওলাদারের বালু সিন্ডিকেট বালু উত্তোলনের কার্যক্রমে।

এই বালুখেকো চক্রের জড়িত রয়েছে যাদের নাম, হিরণ হাওলাদার ( সভাপতি, চর কাদিরা ইউনিয়ন বিএনপি), মো. আব্দুর রহিম মেম্বার ( সাধারণ সম্পাদক, চর পোড়াগাছা ইউনিয়ন বিএনপি), রেহানা বেগম (মহিলা দলের নেত্রী, কমলনগর উপজেলা), আবুল কালাম আজাদ (সাবেক ছাত্রদল নেতা), ইউসুফ ( যুবদল নেতা) সহ আরো অনেকে।

বালু উত্তোলনের বিষয়ে হিরণ হাওলাদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে “ঢাকা ভয়েস ” কে বলেন তাঁরা তাদের ক্রয়কৃত নিজস্ব জমি থেকে বালু উত্তোলন করেছেন। ভুলুয়া নদী থেকে বালু উত্তোলন করেনি। গণমাধ্যম কর্মীর হিরণ হাওলাদারকে জিজ্ঞেস করলেন যেখান থেকেই বালু উত্তোলন করেন না কেনো এট সম্পূর্ণ অবৈধ। এ বিষয়ে তিনি অবগত নয় “ঢাকা ভয়েস” কে এমনটি জানিয়েছে।

আব্দুর রহিম মেম্বার কাছে বালু উত্তোলনের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে “ঢাকা ভয়েস” কে বলেন বালু উত্তোলনের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।

এদিকে স্থানীয় ইটভাটা মালিকরা তাদের পরিবহনের স্বার্থে চরকাদিরা এলাকায় নদীর উপর একাধিক কাঁচা সড়ক নির্মাণ করে অবরুদ্ধ রেখেছেন ভুলুয়া নদীটি।

কমলনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, রাহাত উজ জামান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি “ঢাকা ভয়েস” কে বলেন, বালু উত্তোলনের বিষয়টি শুনে আমরা ব্যবস্তা নিয়েছি।আমরা তদন্ত করে দেখবো যদি আবারও বালু উত্তোলন করে তাহলে আইনানুক ব্যবস্তা নিবো। এমনটি “ঢাকা ভয়েস ” কে জানিয়েছেন।

স্থানীয় সমাজ চিন্তাবিদ ও নদী গবেষক সানা উল্লাহ সানু জানান, ১৯১২ থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত প্রমত্তা নদী ছিল ভুলুয়া। ১৯৯৬ সালে ভুলুয়া নদী খনন করা হয়। দীর্ঘদিন পরে এখন আবার ভুলুয়া নদী দখল দূষণ ও পলী জমে নদীটি তার স্বরুপ হারিয়ে ফেলেছে। নদীটি দখলমুক্ত করার দাবি জানিয়ে তিনি আরো বলেন নদীটি খনন করে তার স্বরুপ ফিরিয়ে দিলে এ অঞ্চলের ৩০ হাজার কৃষকসহ লাখো মানুষ এর সুফল ভোগ করবেন।

লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদ উজ জামান খান এর কাছে ভুলুয়া নদী খনন ও দখল মুক্ত করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি, অভিযোগ স্বীকার করে “ঢাকা ভয়েস” কে বলেন, ভুলুয়া নদীতে কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, যার কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে ।আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা অচিরেই ভুলুয়া নদী খনন ও দখল মুক্ত করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্তা করার উদ্দ্যোগ নিচ্ছি। এমনটি “ঢাকা ভয়েস ” কে জানিয়েছেন।