বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকেন্দ্রিক রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার আসাদুল হক বাবু হত্যা মামলায় বেসরকারি টিভি চ্যানেল মাইটিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথীর ছেলে কন্টেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদির ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক তার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিন দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনা হয়। এসময় তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক খান মো. এরফান জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে ৭ রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। শুনানির জন্য ৩টা ২৫ মিনিটে তাকে এজলাসে তোলা হয়।
এদিন বিকেলে হাজতখানা থেকে আদালতে ৭ তলায় সিঁড়ি বেয়ে তৌহিদ আফ্রিদিকে উঠানো হয়। হাজতখানা থেকে বের করার পর তার মাথায় হেলমেট, বুকে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পরানো ছিল। পরে সিঁড়ি বেয়ে ৩ তলায় উঠার পরে গরমের কারণ তার জ্যাকেট ও হেলমেট খুলে দেওয়া হয়।
এরপর এজলাসে তোলার পর শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর চেয়ে শুনানি করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তার রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তৌহিদ আফ্রিদিকে রোববার (২৪ আগস্ট) রাতে সিআইডির একটি দল বরিশাল থেকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে ১৭ আগস্ট রাজধানীর গুলশান থেকে আফ্রিদির বাবা নাসির উদ্দিন সাথীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন এ মামলায় তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতকে বলেন, ইউটিউব-ফেসবুকের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারের প্রচারণা করেছেন এই ইউটিউবার। ছাত্র-জনতার ওপর যখন গুলি চালিয়েছেন পলাতক শেখ হাসিনা, তখন সেসব চিত্র জাতিকে না দেখিয়ে উল্টো যারা সেসব প্রচার করেছেন তাদের হুমকি দিয়ে ভয় দেখিয়েছেন তিনি। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছেন তিনি। বাপ-বেটা একত্রে স্বৈরাচারী হাসিনার দালালি করেছেন। এদের কঠোর শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।
এসময় আসামিপক্ষের আইনজীবী রাষ্ট্রপক্ষের বিরোধিতা করে বলেন, তৌহিদ একজন নিরপরাধ ব্যক্তি। তিনি কোনও অপরাধী না। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি ছাত্রদের পক্ষে ছিলেন।
এদিকে শুনানি চলাকালীন আদালতের শেষপ্রান্তে কাঁদতে দেখা যায় তার ফুফু নাজনীন আকতারকে। তিনি বলতে থাকেন, আমার আফ্রিদি, আমার আফ্রিদি কিছু করেনি। ও নির্দোষ। ওকে ছেড়ে দেন। ওর কিছু কইরেন না। এসময় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অন্য স্বজনরা তাকে সান্ত্বনা দিতে থাকেন।