ঢাকা ১১:৪৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫, ১০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo চট্টগ্রামে হোটেল সৈকতের রেস্তোরাঁয় আগুন Logo রোহিঙ্গাদের নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে কক্সবাজারে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা Logo চন্দ্রনাথ পাহাড়ে মসজিদ নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি: ধর্ম উপদেষ্টা Logo দুই আ‘মীলীগের চেয়ারম্যান নিয়ে বিএনপি নেতার সমাবেশ,ছবি ভাইরাল Logo দাড়ি রাখতে অনুমতি না নেওয়ায় তিন পুলিশ সদস্যের শাস্তির চিঠি ভাইরাল Logo আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে বলে মনে হচ্ছে না: নাহিদ ইসলাম Logo ফজলুর রহমানকে গ্রেপ্তারের দাবিতে ৯৭ সংগঠনের যৌথ বিবৃতি Logo আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা Logo গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রাণ হারালো ২৪ জন,মোট নিহত ৫১ Logo এমবাপ্পের জোড়া গোলে রিয়ালের সহজ জয়

আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও টেকসই সমাধানের পথ খুঁজতে কক্সবাজারে শুরু হয়েছে তিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন। এতে অংশ নিচ্ছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি, জাতিসংঘের কর্মকর্তা, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও সরকারের উচ্চপদস্থ নীতিনির্ধারকরা।

আজ সোমবার (২৫ আগস্ট) মূল অধিবেশনে যোগ দিতে কক্সবাজারে আসছেন প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরবেন এবং রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে কার্যকর সহযোগিতা কামনা করবেন।

সম্মেলনে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনসহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ নীতিনির্ধারকরাও উপস্থিত থাকবেন।

গতকাল রবিবার (২৪ আগস্ট) বিকেল ৪টায় উখিয়ার ইনানীর সেনাবাহিনী পরিচালিত বে-ওয়াচ হোটেলে সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। ‘টেকঅ্যাওয়ে টু দ্যা হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্যা রোহিঙ্গা সিচুয়েশন’ শিরোনামের এ অংশীজন সংলাপে ৪০টি দেশের প্রতিনিধি যোগ দেন।

আয়োজকরা জানিয়েছেন, এ সম্মেলনে মোট পাঁচটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া, আন্তর্জাতিক সহায়তা, আশ্রয়শিবিরের মানবিক সংকট নিরসন এবং দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নিয়ে আলোচনা হবে।

সম্মেলনকে ঘিরে কক্সবাজারে নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। জেলার প্রবেশপথ, উখিয়া-টেকনাফ রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকা ও ইনানী পর্যটন অঞ্চলে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ, র‍্যাব ও গোয়েন্দা সদস্য। বিদেশি অতিথিদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে বিশেষ নিরাপত্তা রুট নিশ্চিত করেছে প্রশাসন।

নিরাপত্তার অংশ হিসেবে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন এক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। সেখানে বলা হয়েছে, অস্ত্র আইন ১৮৭৮-এর ধারা ১৭(ক) (১) অনুযায়ী জেলার সব বৈধ আগ্নেয়াস্ত্রধারীকে অবিলম্বে থানায় জমা দিতে হবে, নইলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংস অভিযানের পর প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। বর্তমানে কক্সবাজার ও ভাসানচরে আশ্রিত রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় ১৩ লাখ। দীর্ঘদিন ধরে এই বিপুল জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে আসছে বাংলাদেশ, যা আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হলেও আর্থসামাজিক ও পরিবেশগত চাপ ক্রমেই বাড়ছে।
বাংলাদেশ সরকার শুরু থেকেই রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের ওপর জোর দিয়ে আসছে। তবে মিয়ানমারের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর দ্বিধানীতির কারণে আট বছরেও প্রত্যাবাসন শুরু হয়নি। এই প্রেক্ষাপটে কক্সবাজারের এ সম্মেলনকে বাংলাদেশের কূটনৈতিক তৎপরতার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

চট্টগ্রামে হোটেল সৈকতের রেস্তোরাঁয় আগুন

আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

আপডেট সময় ০৮:৫৪:৫২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও টেকসই সমাধানের পথ খুঁজতে কক্সবাজারে শুরু হয়েছে তিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন। এতে অংশ নিচ্ছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি, জাতিসংঘের কর্মকর্তা, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও সরকারের উচ্চপদস্থ নীতিনির্ধারকরা।

আজ সোমবার (২৫ আগস্ট) মূল অধিবেশনে যোগ দিতে কক্সবাজারে আসছেন প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরবেন এবং রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে কার্যকর সহযোগিতা কামনা করবেন।

সম্মেলনে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনসহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ নীতিনির্ধারকরাও উপস্থিত থাকবেন।

গতকাল রবিবার (২৪ আগস্ট) বিকেল ৪টায় উখিয়ার ইনানীর সেনাবাহিনী পরিচালিত বে-ওয়াচ হোটেলে সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। ‘টেকঅ্যাওয়ে টু দ্যা হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্যা রোহিঙ্গা সিচুয়েশন’ শিরোনামের এ অংশীজন সংলাপে ৪০টি দেশের প্রতিনিধি যোগ দেন।

আয়োজকরা জানিয়েছেন, এ সম্মেলনে মোট পাঁচটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া, আন্তর্জাতিক সহায়তা, আশ্রয়শিবিরের মানবিক সংকট নিরসন এবং দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নিয়ে আলোচনা হবে।

সম্মেলনকে ঘিরে কক্সবাজারে নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। জেলার প্রবেশপথ, উখিয়া-টেকনাফ রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকা ও ইনানী পর্যটন অঞ্চলে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ, র‍্যাব ও গোয়েন্দা সদস্য। বিদেশি অতিথিদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে বিশেষ নিরাপত্তা রুট নিশ্চিত করেছে প্রশাসন।

নিরাপত্তার অংশ হিসেবে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন এক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। সেখানে বলা হয়েছে, অস্ত্র আইন ১৮৭৮-এর ধারা ১৭(ক) (১) অনুযায়ী জেলার সব বৈধ আগ্নেয়াস্ত্রধারীকে অবিলম্বে থানায় জমা দিতে হবে, নইলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংস অভিযানের পর প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। বর্তমানে কক্সবাজার ও ভাসানচরে আশ্রিত রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় ১৩ লাখ। দীর্ঘদিন ধরে এই বিপুল জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে আসছে বাংলাদেশ, যা আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হলেও আর্থসামাজিক ও পরিবেশগত চাপ ক্রমেই বাড়ছে।
বাংলাদেশ সরকার শুরু থেকেই রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের ওপর জোর দিয়ে আসছে। তবে মিয়ানমারের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর দ্বিধানীতির কারণে আট বছরেও প্রত্যাবাসন শুরু হয়নি। এই প্রেক্ষাপটে কক্সবাজারের এ সম্মেলনকে বাংলাদেশের কূটনৈতিক তৎপরতার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।