কক্সবাজারের চকরিয়া থানায় পুলিশের হেফাজতে থাকা দুর্জয় চৌধুরীর (২৮) মৃত্যুর কারণ উদঘাটন করার দাবিতে এলাকাবাসী বিক্ষোভ করেছেন। এদিকে, দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগে থানার সহকারী উপপরিদর্শকসহ (এএসআই) তিন পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিকেলে তিন পুলিশ সদস্য প্রত্যাহারের তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘থানায় আটক থাকা দুর্জয় আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ ঘটনায় এএসআই মোহাম্মদ হানিফ মিয়া, কনস্টেবল মহিউদ্দিন ও কনস্টেবল ইশরাক হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।’’
এর আগে দুপুরে মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটনের দাবিতে স্থানীয়রা থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন। চকরিয়া ইমাম সমিতির সভাপতি কফিল উদ্দিন আহমেদ বিক্ষোভে বলেন, “প্রিজন সেলে কীভাবে একজন মারা যায়? তাকে কি নির্যাতন করা হয়েছিল? আত্মহত্যা করেছেন নাকি তাকে হত্যা করে ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে? এ সব প্রশ্নের উত্তর চকরিয়ার মানুষ জানতে চায়। বিচার বিভাগীয় তদন্ত ছাড়া সত্য উদঘাটন হবে না।”
দুর্জয়ের ফুফাত ভাই সঞ্জীব দাশ বলেন, “হাজতের বাইরে তো কনস্টেবল থাকার কথা। তিনি কি দায়িত্বে ছিলেন না?”
চকরিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার অভিজিত দাশ বলেন, ‘‘থানার সিসিটিভি ফুটেজে দুর্জয়ের চলাফেরা ও অন্যান্য কার্যকলাপ দেখা গেছে। তবে আত্মহত্যার দৃশ্য সরাসরি ধারণ হয়নি।’’ তিনি বলেন, ‘‘তদন্ত কমিটি বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।’’
কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “পুলিশ সুপারের নির্দেশে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছেন। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।”
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে দুর্জয়কে তার কর্মরত বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা থানায় সোপর্দ করেন। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ২ লাখ ৮৩ হাজার টাকা আত্মসাৎ ও জালিয়াতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। শুক্রবার (২২ আগস্ট) ভোরে হাজতের ভেতরে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।