ঢাকা ০৯:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo শিক্ষকদের দাবি না মানলে খুনি হাসিনার চেয়ে পরিণতি আরও বেশি খারাপ হবে: ডাকসু ভিপি Logo জামায়াতসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা Logo শিক্ষার্থীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে বিইউপি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল Logo সয়দাবাদ রেলস্টেশন এলাকার রেলের মাটি বিক্রি করছেন বিএনপি নেতা Logo পিআর আন্দোলনকে জামায়াতের একটি রাজনৈতিক প্রতারণা বলছেন নাহিদ ইসলাম Logo ছাত্রলীগের নামে রুম দখলে নেওয়া সেই পিয়াল এখন ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক Logo পুরান ঢাকায় ছুরিকাঘাতে জবি শিক্ষার্থীকে খুন Logo ভিক্টোরিয়া কলেজে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ, আগ্নেযাস্ত্র প্রদর্শন Logo “পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় আদালত প্রাঙ্গণেই হামলা, রক্তাক্ত জামায়াত নেতার পুত্র এখন ঢাকা মেডিকেলে” Logo এবার একসঙ্গে মাঠে নামছে জামায়াতসহ সমমনা ৮ দল

উত্তরের জনপদে যোগাযোগ উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ‘মাওলানা ভাসানী সেতু’ উদ্বোধন

উত্তরের জনপদে যোগাযোগ উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ‘মাওলানা ভাসানী সেতু’ উদ্বোধন

উত্তরবঙ্গের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত ‘মাওলানা ভাসানী সেতুর’ স্বপ্নযাত্রা শুরু হলো আজ বুধবার (২০ আগস্ট)।

দুপুরে সেতুর উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া।

উদ্বোধনের পর সুন্দরগঞ্জ উপজেলা জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মুফতি মো. ওমর ফারুক বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন। পরে ফিতা কেটে সেতুর প্রবেশমুখ খুলে দেওয়া হলে উৎসুক জনতার ঢল নামে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এসময় বেগ পেতে হয় ভিড় সামলাতে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, এলজিইডির কর্মকর্তা ও সেতু নির্মাণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উৎসবমুখর পরিবেশে সকালের দিক থেকেই সেতু এলাকায় ভিড় জমাতে থাকেন গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামের হাজারো মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকেই আসেন ঐতিহাসিক এই মুহূর্তের সাক্ষী হতে। দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন বাস্তব রূপ পাওয়ায় জনতার চোখে-মুখে ফুটে ওঠে উচ্ছ্বাস আর গর্বের ঝলক। সেতুর ইতিহাস ও নির্মাণ ব্যয়, দৈর্ঘ্য: ১৪৯০ মিটার, প্রস্থ ৯.৬ মিটার দেশের ইতিহাসে এলজিইডির সবচেয়ে বড় সেতু ব্যয়: ৮৮৫ কোটি টাকা

অর্থায়নে চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড এক্সেস সড়ক: প্রায় ৮০ কিলোমিটার, ৫৮টি বক্স কালভার্ট ও ৯টি আরসিসি সেতু ২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন। দীর্ঘ জটিলতা পেরিয়ে ১১ বছর পর আজ চালু হলো এই সেতু।

অর্থনীতি ও যোগাযোগে পরিবর্তন, সেতুটি চালু হওয়ায় বেলকা বাজার, পাঁচপীর, ধর্মপুর, হাট লক্ষ্মীপুর, সাদুল্যাপুর ও ধাপেরহাটসহ অন্তত ১০টি বাজার সরাসরি যুক্ত হবে। ঢাকাসহ দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হবে, কৃষিপণ্য ও শিল্পপণ্যের পরিবহন খরচ কমবে। ভুরুঙ্গামারী স্থলবন্দরের দূরত্বও কমবে ৪০–১০০ কিলোমিটার। ফলে উত্তরাঞ্চলের অর্থনীতি, শিল্পায়ন ও পর্যটনে আসবে নতুন গতি।

তবে সেতুর নামকরণ নিয়ে এলাকায় দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। স্থানীয়দের দাবি, মুক্তিযোদ্ধা ও আন্দোলনের পুরোধা শরিতুল্যাহ মাস্টারের নামে সেতুর নাম হওয়া উচিত ছিল। তিনি ১৯৯৫ সাল থেকে আন্দোলন চালিয়ে ‘তিস্তা সেতু বাস্তবায়ন কমিটি’ গঠন করেছিলেন।

তাদের মতে, তার নিরলস প্রচেষ্টাতেই সেতুটি বাস্তবায়ন হয়েছে। তবে সরকার গত ১০ আগস্ট সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করে সেতুর নাম দিয়েছে ‘মাওলানা ভাসানী সেতু, গাইবান্ধা’।

সব বিতর্ক ছাপিয়ে তিস্তার দুই পারে আজ উৎসবের আমেজ। গাইবান্ধা-কুড়িগ্রামের জনপদের মানুষ দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণে আজ থেকে শুরু করলো নতুন যাত্রা।

জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষকদের দাবি না মানলে খুনি হাসিনার চেয়ে পরিণতি আরও বেশি খারাপ হবে: ডাকসু ভিপি

উত্তরের জনপদে যোগাযোগ উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ‘মাওলানা ভাসানী সেতু’ উদ্বোধন

আপডেট সময় ০৯:০৯:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫

উত্তরবঙ্গের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত ‘মাওলানা ভাসানী সেতুর’ স্বপ্নযাত্রা শুরু হলো আজ বুধবার (২০ আগস্ট)।

দুপুরে সেতুর উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া।

উদ্বোধনের পর সুন্দরগঞ্জ উপজেলা জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মুফতি মো. ওমর ফারুক বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন। পরে ফিতা কেটে সেতুর প্রবেশমুখ খুলে দেওয়া হলে উৎসুক জনতার ঢল নামে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এসময় বেগ পেতে হয় ভিড় সামলাতে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, এলজিইডির কর্মকর্তা ও সেতু নির্মাণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উৎসবমুখর পরিবেশে সকালের দিক থেকেই সেতু এলাকায় ভিড় জমাতে থাকেন গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামের হাজারো মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকেই আসেন ঐতিহাসিক এই মুহূর্তের সাক্ষী হতে। দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন বাস্তব রূপ পাওয়ায় জনতার চোখে-মুখে ফুটে ওঠে উচ্ছ্বাস আর গর্বের ঝলক। সেতুর ইতিহাস ও নির্মাণ ব্যয়, দৈর্ঘ্য: ১৪৯০ মিটার, প্রস্থ ৯.৬ মিটার দেশের ইতিহাসে এলজিইডির সবচেয়ে বড় সেতু ব্যয়: ৮৮৫ কোটি টাকা

অর্থায়নে চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড এক্সেস সড়ক: প্রায় ৮০ কিলোমিটার, ৫৮টি বক্স কালভার্ট ও ৯টি আরসিসি সেতু ২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন। দীর্ঘ জটিলতা পেরিয়ে ১১ বছর পর আজ চালু হলো এই সেতু।

অর্থনীতি ও যোগাযোগে পরিবর্তন, সেতুটি চালু হওয়ায় বেলকা বাজার, পাঁচপীর, ধর্মপুর, হাট লক্ষ্মীপুর, সাদুল্যাপুর ও ধাপেরহাটসহ অন্তত ১০টি বাজার সরাসরি যুক্ত হবে। ঢাকাসহ দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হবে, কৃষিপণ্য ও শিল্পপণ্যের পরিবহন খরচ কমবে। ভুরুঙ্গামারী স্থলবন্দরের দূরত্বও কমবে ৪০–১০০ কিলোমিটার। ফলে উত্তরাঞ্চলের অর্থনীতি, শিল্পায়ন ও পর্যটনে আসবে নতুন গতি।

তবে সেতুর নামকরণ নিয়ে এলাকায় দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। স্থানীয়দের দাবি, মুক্তিযোদ্ধা ও আন্দোলনের পুরোধা শরিতুল্যাহ মাস্টারের নামে সেতুর নাম হওয়া উচিত ছিল। তিনি ১৯৯৫ সাল থেকে আন্দোলন চালিয়ে ‘তিস্তা সেতু বাস্তবায়ন কমিটি’ গঠন করেছিলেন।

তাদের মতে, তার নিরলস প্রচেষ্টাতেই সেতুটি বাস্তবায়ন হয়েছে। তবে সরকার গত ১০ আগস্ট সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করে সেতুর নাম দিয়েছে ‘মাওলানা ভাসানী সেতু, গাইবান্ধা’।

সব বিতর্ক ছাপিয়ে তিস্তার দুই পারে আজ উৎসবের আমেজ। গাইবান্ধা-কুড়িগ্রামের জনপদের মানুষ দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণে আজ থেকে শুরু করলো নতুন যাত্রা।