অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে “চিকিৎসা পেশা ও রাষ্ট্রবিরোধী অবস্থানের শামিল” বলে আখ্যা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
রবিবার (১৭ আগস্ট) এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও হেড অব হেলথ উইং ডা. মো. আব্দুল আহাদের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, আসিফ নজরুলের এমন বক্তব্য দায়িত্বজ্ঞানহীন, বিভ্রান্তিকর এবং চিকিৎসক সমাজকে অসম্মানিত করে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে দেশের চিকিৎসক সমাজ জাতির দুর্যোগে সবসময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। বিশেষ করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোতে চিকিৎসকরা তাদের নির্ভীক ও মানবিক সেবার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
বিগত ফ্যাসিবাদি সরকারের ভয়ঙ্কর দমন-নিপীড়ন, গুলি ও দমনযজ্ঞের মধ্যেও চিকিৎসকরা নির্ভয়ে মাঠে নেমে আহত জনগণের সেবা দিয়েছেন। তারা জানতেন যেকোনও মুহূর্তে হামলা, গ্রেফতার বা হয়রানির শিকার হতে পারেন। তারপরও তারা পিছু হটেননি। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও আন্দোলনরত শিক্ষার্থী, শ্রমিক, সাধারণ মানুষ ও আহত নাগরিকদের চিকিৎসা দিয়ে গেছেন।
চিকিৎসকদের সেই নির্ভীক সেবাপরায়ণতা বাংলাদেশের গণমানুষ চিরকাল কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে।
তাছাড়াও করোনা মহামারিতে শত শত চিকিৎসক প্রাণ হারালেও তারা সরে যাননি সেবা দেওয়ার পথ থেকে। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে রাজধানীর হাসপাতাল পর্যন্ত চিকিৎসকরা দিন-রাত নিরলস পরিশ্রম করে চলেছেন। এমন অবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকারের একজন উপদেষ্টার কাছ থেকে চিকিৎসক সমাজের মর্যাদা ক্ষুণ্ণকারী মন্তব্য জাতির জন্য গভীর হতাশাজনক এবং উদ্বেগজনক।
চিকিৎসক সমাজকে অসম্মান করা মানে দেশের প্রতিটি সাধারণ নাগরিককে অসম্মান করা। কারণ চিকিৎসকরা কেবল পেশাজীবী নন, তারা জাতির জীবন রক্ষক।
জাতীয় নাগরিক পার্টি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, চিকিৎসকদের অবমাননা করে কারও ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা বাড়ানো যায় না। বরং এতে জনগণের আস্থা নষ্ট হয় এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়। আমরা মনে করি, অধ্যাপক আসিফ নজরুলের মতো অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য সরকারের গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।