পদ্মার অব্যাহত ভয়াল স্রোতে নতুন করে ভাঙনের কবলে পড়েছে মুন্সিগঞ্জ সদরের শিলই, বাংলাবাজার এবং টংগিবাড়ী উপজেলার দিঘিরপাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকা। গত কয়েকদিনের ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে একাধিক ঘরবাড়ি, দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। হঠাৎ ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে হতভম্ব হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা।
প্রতিদিন ভাঙনের পরিমাণ বাড়তে থাকায় পদ্মাপাড়ের মানুষ এখন দুশ্চিন্তা আর অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো কোথায় আশ্রয় নেবে এবং কীভাবে জীবিকা নির্বাহ করবে তা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় রয়েছেন। অনেকেই আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে কিংবা খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বসতবাড়ি ও দোকানপাট। অথচ নদীভাঙন রোধে এখনো কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে এ অঞ্চলে ভাঙন অব্যাহত থাকলেও টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবিটি বাস্তবায়িত হয়নি।
ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকে জানান, জীবনের সমস্ত সঞ্চয় দিয়ে গড়ে তোলা বাড়িঘর মুহূর্তেই নদীগর্ভে চলে গেছে। এখন তাদের সামনে বেঁচে থাকার লড়াই শুরু হয়েছে। শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে অনেক পরিবার মানবেতর দিন কাটাচ্ছে।
এদিকে ভাঙনের খবর পেয়ে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে কিছু ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। তবে স্থানীয়দের দাবি, ভাঙন রোধে দ্রুত টেকসই ব্যবস্থা না নিলে আরো বড় বিপর্যয় ঘটবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পদ্মার স্রোত এ বছর অস্বাভাবিক শক্তিশালী হওয়ায় ভাঙন বেড়েছে। এখনই যদি জরুরি ভিত্তিতে নদীশাসন প্রকল্প হাতে না নেওয়া হয় তবে শিলই, বাংলাবাজার ও দিঘিরপাড়সহ আশপাশের জনপদ হুমকির মুখে পড়বে।
পদ্মাপাড়ের মানুষ তাই প্রশাসনের কাছে দ্রুত টেকসই বাঁধ নির্মাণ ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জোর দাবি জানিয়েছে।
পদ্মার ভয়াল স্রোতে মুন্সিগঞ্জে নদীভাঙন, বিলীন ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান