বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না চট্টগ্রামের রাউজানে কাগতিয়া দরবারের পীর মনিরুল্লাহর। এবার এই পীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে রাতের আঁধারে পুকুর ভরাটের। পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো অনুমতি ছাড়াই পরিবেশ আইন অমান্য করে ৬২ গণ্ডা জমির উপর মনিরুল্লাহর নির্দেশে পুকুর ভরাট করা হয়।
এই বিষয়ে গত ৭ আগস্ট রুনা আহমদ নামে এক নারী পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের এই বিষয়ে মনিরুল্লাহসহ ২৮ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন। মনিরুল্লাহ ছাড়া বাকি অভিযুক্তরা হলেন- ড. আবুল মনছুর, মো. কায়েস, মো. সোলেমান, মো. বোরহান, মো. নঈম, ফোরকান, শাহাদাত, শহীদ, এমরান, মো. কায়সার শামীম, জাহাঙ্গীর আলম, কুতুব উদ্দীন, জাকারিয়া, সোহেল, তানভীর, আবদুল্লাহ মাসুদ সুমন, কাজী ইসমাইল, মো. সোহেল উদ্দিন, মো. সোলায়মান, দিদারুল আলম, মো. মহিউদ্দিন, আবুল কালাম, মো. মোর্শেদ (নওমুসলিম), মুন্না ও আসাদ।
জানা যায়, রাউজানের উত্তর গুজরা মৌজার আর এস ৯৯৬/৯৯৭/৯৯৮/৯৯৯ নং খতিয়ানের দাগ ও বিএস ১২০৯ নং খতিয়ানের দাগের ৬২ গণ্ডা বা ১৪০ শতক পুকুর ও পুকুর পাড়টি অবস্থিত। বর্তমানে পুকুরটি ভরাট করা অবস্থায় রয়েছে। তপশীলে পুকুরটি বহু ব্যক্তির মালিকী এজমালী পুকুর, যার পশ্চিম ও উত্তর পাড়ে কবরস্থান ও শত শত সুফলা নিষ্ফলা বৃক্ষাদি ছিল। কিন্তু ভরাটকারীরা হঠাৎ সকল মালিকের অগোচরে বেআইনী অস্ত্রের মুখে শত শত গাছ কেটে নিয়ে যায়।আর ট্রাকে ট্রাকে পাহাড়কাটা মাটি এনে পুকুর ভরাট করে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পুকুর সেচ দিয়ে লীজ গ্রহীতাদের জিয়ানো মাছগুলি লুট করে নিয়ে যায়।
রুনা আহমদ জানান, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা জঘন্য মন-মানসিকতার জুলুমবাজ, অত্যাচারী, হিংস্র-প্রকৃতির লোক। তাদের বে-আইনী কাজে যেই বাধা হয়ে দাঁড়ায় তাকে শারীরীক মানষিক ভাবে পর্যুদস্ত করে। তাদের স্বশস্ত্র অবস্থানের মুখে কেউ বাধা দিতে সাহস করে নাই। পুলিশে অভিযোগ দিলে পুলিশ ও অজ্ঞাত কারণে কোন পদক্ষেপ না নিয়ে বরং কোর্টে মামলা করতে বলে। শত পরিবারের একমাত্র ব্যবহারের এত বড় পুকুরটি রাতারাতি ভরাট করে ফেলায় শত শত সুফলা নিষ্ফলা গাছ বৃক্ষাদি কেটে নেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা দরকার।
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আশরাফ উদ্দিন বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা আগামী সপ্তাহে ওই এলাকায় গিয়ে পরিদর্শন করে একটি তদন্ত রিপোর্ট জমা দিবো।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে মনিরুল্লাহ’র অন্যতম সহযোগী ও মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির মহাসচিব আবুল মনসুরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, রাউজানে কাগতিয়া মাইজপাড়া তালীমুল কুরআন মাদরাসা ও দারুল ইয়াতামা দখলের অভিযোগ উঠেছে মুনিরিয়া যুব তাবলীগ কমিটির সভাপতি মনিরুল্লাহর বিরুদ্ধে। নিজের পিতাকে ‘গাউছুল আজম’ ‘খলিলুল্লাহ’ দাবি করা, ‘পীরের নামে জমি লিখে দিলেই মিলবে বেহেস্তের টিকিট’সহ নানা বিতর্কের জন্ম দেয়া মুনিরিয়া যুব তাবলীগ কমিটির এ নেতার বিরুদ্ধে রয়েছে অসংখ্য জায়গা দখল, হামলা-মারধর, হত্যা এবং ফ্যাসিস্ট সরকারের সাথে আঁতাত করে নানা অপতৎপরতার অভিযোগ। শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে ৫০৮টি খতমে কুরআন পাঠ কর্মসূচি পালন করে মনিরুল্লাহ আলোচনায় আসেন।