ঢাকা ০৭:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo নাটোর-০২ আসনে বিএনপিতে দুগ্রুপের কোন্দল, মাঠ গোছাচ্ছে জামায়াত Logo গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে ফেনীর স্বরূপ সাহিত্যের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা Logo জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে তারেক রহমানের ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ স্লোগান Logo ‘জাতির পিতা’ উপাধি কোনো ইতিহাস নয়, এটি আ. লীগের তৈরি ফ্যাসিবাদী হাতিয়ার: নাহিদ Logo আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াডে পুরস্কার অর্জন করেন কুষ্টিয়ার মস্তাহসিন Logo লুট হওয়া পাথর বালু ও মাটি দিয়ে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা Logo আমার ভোট আমি দেব, স্লোগান বাস্তবায়ন হতে দেব না : বিএনপি নেতা Logo পাকিস্তানকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিলো মোদি Logo একই পরিবারের চারজনের মরদেহ উদ্ধার Logo ছাত্রদল নেতার মাদক সেবনের ছবি ভাইরাল:পদ স্থগিত

নাটোর-০২ আসনে বিএনপিতে দুগ্রুপের কোন্দল, মাঠ গোছাচ্ছে জামায়াত

আসন্ন নির্বাচনে নাটোর-০২ আসন হচ্ছে জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সদরের আসনটি। এই আসনে বিএনপির রাজনীতি চোখে পড়ার মতো। কারণ জেলায় বিএনপির ভোট সবচেয়ে বেশি ছিলো সদরেই। তবে সাংগঠনিকভাবে নড়বড়ে অবস্থায় জেলা বিএনপি। গ্রুপিং, অন্তর্কোন্দল প্রকট আকার ধারণ করেছে দলটিতে। বিভিন্ন ঘটনায় টালমাটাল নেতাকর্মীরা।

নাটোরের রাজনৈতিক ইতিহাস বলছে, ১৯৯৬ সালে শংকর গোবিন্দ চৌধুরীর পর থেকে বিএনপির শক্ত ঘাঁটি হয়ে ওঠেছিলো নাটোর ২ আসন । টানা ৩টি জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।

তবে বর্তমানে নাটোর জেলার বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা নড়বড়ে। নাটোর০২ আসনের সাবেক এমপি রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর মতামত ও তার অনুসারীদের না নিয়েই ২০২৫ সালের মার্চে জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্র।

এর মধ্যদিয়ে স্থানীয় রাজনীতিতে রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর প্রায় দুই দশকের আধিপত্যের অবসান ঘটে। সব মিলিয়ে এ আসনে বিএনপির এখন দুটি গ্রুপ। অভ্যন্তরীণ কোন্দল বিএনপির ভিত্তিকে দুর্বল করে দিচ্ছে বলে মনে করেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী কেন্দ্রীয় শূরার সদস্য ও নাটোর জেলার নায়েবে আমীর অধ্যাপক ইউনুস আলী। তিনি ১৯৯১ সালে জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শংকর গোবিন্দ চৌধুরীর সাথে ২২৯২ ভোটের ব্যবধানে ২য় স্থান অর্জন করেন এবং বিএনপি প্রার্থী মোঃ সিরাজুল ইসলাম ৩য় স্থান অর্জন করেন। জামায়াত ও বিএনপির কেন্দ্রীয় দুই হেভিওয়েট নেতার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের কথা বলছেন সাধারণ ভোটাররা। অধ্যাপক ইউনুস আলী জামায়াতের একক প্রার্থী হিসেবে দীর্ঘদিন মাঠে রয়েছেন। কাজ করছেন দিন-রাত এক করেই। এছাড়া নাটোর জেলার সাবেক আমীর ও বর্তমান নায়েবে আমীর হিসেবে ইমেজ বেড়েছে বিগত দিনের চেয়ে কয়েকগুণ। এমনকি অধ্যাপক ইউনুস আলী সারাদিন মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। কিন্তু বিএনপি নেতাদের সেভাবে মাঠে দেখা যাচ্ছে না।

দলের ভেতরে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা, একাধিক গ্রুপের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা এবং কিছু নেতার ‘নিজস্ব বলয়’ গড়ে তোলার প্রবণতা জটিল করে তুলেছে বিএনপির রাজনীতি।

এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন সাবেক এমপি রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু । তিনি এর আগে তিনবার এ আসনে দলের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ছাড়াও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রহিম নেওয়াজ , জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান আসাদ ও সদস্য আবুল কাশেমও মনোনয়ন চাইবেন।

সাধারণ ভোটার’রা বলছেন আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচন ব্যবস্থা নষ্ট করে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ওপর আমাদের আর ভরসা হয় না। তবে এখন অন্তর্বর্তী সরকার আছে। নতুন করে নির্বাচন হলে হয়তো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে।

নাটোর সদর আসনের জামায়াতের প্রার্থী অধ্যাপক ইউনুস আলী বলেন, ১৭ বছর মানুষ সুষ্ঠু নির্বাচন দেখেনি। জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে মানুষের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা বেড়েছে। সাধারণ মানুষ বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও প্রভাবমুক্ত একটি নির্বাচন দেখতে চায়। জামায়াত ইসলামী মানুষের জন্য কাজ করে। আমিও মানুষের জন্যই কাজ করি। এমনকি সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দিনে অন্তত পাঁচটি এলাকায় গিয়ে মানুষের দুঃখের কথা আমি শুনি। তাই আশা করছি আমাকে মানুষ তাদের সেবা করার সুযোগ দেবে।

নাটোর সদর আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী দুলু বিভিন্ন সভা সমাবেশে বলেন, দলের জন্য আমার ত্যাগ চোখে পড়ার মতো। দায়িত্ব নিয়ে দলকে সেবা দিয়ে যাচ্ছি নিঃস্বার্থভাবে। অবদান বিবেচনায় দল নিশ্চয়ই আমাকে অগ্রাধিকার দেবে।

নাটোর সদর আসনের বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বলেন, কয়েকদিন থেকে লক্ষ্য করছি নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসায় সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসব বিরাজ করছে। কারণ মানুষ নতুন করে ভোটার হচ্ছেন। দীর্ঘ ১৭ বছর ভোট না দিতে পারায় এইবার সাধারণ ভোটার’রা ভোট দিবেন এবং তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।

ভোটের পরিসংখ্যান

নাটোর-০২ (সদর-নলডাঙ্গা) আসনের মোট ভোটার ৩ লাখ ৯২ হাজার ৬২। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯৩ হাজার ৭৬২ ও নারী ভোটার ১ লাখ ৯৮ হাজার ৩০০।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

নাটোর-০২ আসনে বিএনপিতে দুগ্রুপের কোন্দল, মাঠ গোছাচ্ছে জামায়াত

নাটোর-০২ আসনে বিএনপিতে দুগ্রুপের কোন্দল, মাঠ গোছাচ্ছে জামায়াত

আপডেট সময় ০৬:২২:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫

আসন্ন নির্বাচনে নাটোর-০২ আসন হচ্ছে জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সদরের আসনটি। এই আসনে বিএনপির রাজনীতি চোখে পড়ার মতো। কারণ জেলায় বিএনপির ভোট সবচেয়ে বেশি ছিলো সদরেই। তবে সাংগঠনিকভাবে নড়বড়ে অবস্থায় জেলা বিএনপি। গ্রুপিং, অন্তর্কোন্দল প্রকট আকার ধারণ করেছে দলটিতে। বিভিন্ন ঘটনায় টালমাটাল নেতাকর্মীরা।

নাটোরের রাজনৈতিক ইতিহাস বলছে, ১৯৯৬ সালে শংকর গোবিন্দ চৌধুরীর পর থেকে বিএনপির শক্ত ঘাঁটি হয়ে ওঠেছিলো নাটোর ২ আসন । টানা ৩টি জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।

তবে বর্তমানে নাটোর জেলার বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা নড়বড়ে। নাটোর০২ আসনের সাবেক এমপি রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর মতামত ও তার অনুসারীদের না নিয়েই ২০২৫ সালের মার্চে জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্র।

এর মধ্যদিয়ে স্থানীয় রাজনীতিতে রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর প্রায় দুই দশকের আধিপত্যের অবসান ঘটে। সব মিলিয়ে এ আসনে বিএনপির এখন দুটি গ্রুপ। অভ্যন্তরীণ কোন্দল বিএনপির ভিত্তিকে দুর্বল করে দিচ্ছে বলে মনে করেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী কেন্দ্রীয় শূরার সদস্য ও নাটোর জেলার নায়েবে আমীর অধ্যাপক ইউনুস আলী। তিনি ১৯৯১ সালে জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শংকর গোবিন্দ চৌধুরীর সাথে ২২৯২ ভোটের ব্যবধানে ২য় স্থান অর্জন করেন এবং বিএনপি প্রার্থী মোঃ সিরাজুল ইসলাম ৩য় স্থান অর্জন করেন। জামায়াত ও বিএনপির কেন্দ্রীয় দুই হেভিওয়েট নেতার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের কথা বলছেন সাধারণ ভোটাররা। অধ্যাপক ইউনুস আলী জামায়াতের একক প্রার্থী হিসেবে দীর্ঘদিন মাঠে রয়েছেন। কাজ করছেন দিন-রাত এক করেই। এছাড়া নাটোর জেলার সাবেক আমীর ও বর্তমান নায়েবে আমীর হিসেবে ইমেজ বেড়েছে বিগত দিনের চেয়ে কয়েকগুণ। এমনকি অধ্যাপক ইউনুস আলী সারাদিন মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। কিন্তু বিএনপি নেতাদের সেভাবে মাঠে দেখা যাচ্ছে না।

দলের ভেতরে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা, একাধিক গ্রুপের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা এবং কিছু নেতার ‘নিজস্ব বলয়’ গড়ে তোলার প্রবণতা জটিল করে তুলেছে বিএনপির রাজনীতি।

এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন সাবেক এমপি রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু । তিনি এর আগে তিনবার এ আসনে দলের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ছাড়াও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রহিম নেওয়াজ , জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান আসাদ ও সদস্য আবুল কাশেমও মনোনয়ন চাইবেন।

সাধারণ ভোটার’রা বলছেন আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচন ব্যবস্থা নষ্ট করে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ওপর আমাদের আর ভরসা হয় না। তবে এখন অন্তর্বর্তী সরকার আছে। নতুন করে নির্বাচন হলে হয়তো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে।

নাটোর সদর আসনের জামায়াতের প্রার্থী অধ্যাপক ইউনুস আলী বলেন, ১৭ বছর মানুষ সুষ্ঠু নির্বাচন দেখেনি। জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে মানুষের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা বেড়েছে। সাধারণ মানুষ বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও প্রভাবমুক্ত একটি নির্বাচন দেখতে চায়। জামায়াত ইসলামী মানুষের জন্য কাজ করে। আমিও মানুষের জন্যই কাজ করি। এমনকি সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দিনে অন্তত পাঁচটি এলাকায় গিয়ে মানুষের দুঃখের কথা আমি শুনি। তাই আশা করছি আমাকে মানুষ তাদের সেবা করার সুযোগ দেবে।

নাটোর সদর আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী দুলু বিভিন্ন সভা সমাবেশে বলেন, দলের জন্য আমার ত্যাগ চোখে পড়ার মতো। দায়িত্ব নিয়ে দলকে সেবা দিয়ে যাচ্ছি নিঃস্বার্থভাবে। অবদান বিবেচনায় দল নিশ্চয়ই আমাকে অগ্রাধিকার দেবে।

নাটোর সদর আসনের বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বলেন, কয়েকদিন থেকে লক্ষ্য করছি নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসায় সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসব বিরাজ করছে। কারণ মানুষ নতুন করে ভোটার হচ্ছেন। দীর্ঘ ১৭ বছর ভোট না দিতে পারায় এইবার সাধারণ ভোটার’রা ভোট দিবেন এবং তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।

ভোটের পরিসংখ্যান

নাটোর-০২ (সদর-নলডাঙ্গা) আসনের মোট ভোটার ৩ লাখ ৯২ হাজার ৬২। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯৩ হাজার ৭৬২ ও নারী ভোটার ১ লাখ ৯৮ হাজার ৩০০।