রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে শিক্ষার্থীকে নির্যাতন করার অভিযোগে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে ছাত্রলীগ নেতা নাঈম আলী ও মো. সোলাইমানকে। বহিষ্কৃত হওয়ার পরও হলেই থাকছেন তারা দুজন । নাঈম ইসলাম হলের দুই শয্যাবিশিষ্ট একটি কক্ষ একাই দখল করে রেখেছেন আর সোলাইমান এক শয্যাবিশিষ্ট কক্ষে থাকছেন। এ ব্যাপারে হল প্রশাসনের কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
নাঈম আলী সদ্য ঘোষিত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। আর মো. সোলাইমান ওই হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী কৃষ্ণ রায়কে মারধর ও শিবির আখ্যা দিয়ে হত্যার হুমকির অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগ নেতা নাঈম ও সোলাইমানের বিরুদ্ধে। ১৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেন ভুক্তভোগী কৃষ্ণ রায়। পরদিন ওই ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে হল প্রশাসন।
ওই দুজনের বিরুদ্ধে আরও বিভিন্ন অভিযোগ পর্যালোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি–শৃঙ্খলার স্বার্থে ওই দুই নেতাকে আর কখনো হলে আবাসিকতা না দেওয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য প্রতিবেদনে সুপারিশ করে তদন্ত কমিটি। পরে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির সভায় উত্থাপিত হয়।
সেখানে তাঁদের সাময়িক বহিষ্কার ও অনাবাসিক শিক্ষার্থী হওয়ায় দ্রুত হল থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়। কিন্তু সিন্ডিকেট সভায় সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হয়নি। তাদের শুধু হল থেকে অপসারণ ও সতর্ক করার সিদ্ধান্ত হয়। তবে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ২৮ দিন পরেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। তারা এখনো হলেই অবস্থান করছেন।
কক্ষ দখল রাখার ব্যাপারে নাঈম আলী বলেন, তাঁকে যে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে, সেটি তিনি জানেন না। তিনি এখন হলে থাকেন না। তাঁর কক্ষে তাঁর কয়েকজন অনুসারী থাকেন।
হলে অবস্থান করার বিষয়ে মো. সোলাইমান বলেন, আমি অফিশিয়ালি এখনো কোনো নোটিশ পাইনি। যার কারণে হলেই আছি। কোনো নির্দেশনা এলে তারপর ব্যবস্থা নেব।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নির্যাতনের সত্যতা পেয়ে হল প্রশাসন ও শৃঙ্খলা কমিটি যে সুপারিশ করেছিল, সেটি সিন্ডিকেটে বহাল রাখা হয়নি। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তটি তাঁরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছেন। কিন্তু কোনো চিঠি পাননি। অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের ২৮ নভেম্বরের মধ্যে হল ত্যাগ করতে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।