ঢাকা ০৬:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫, ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জামায়াতের আয় বিএনপির প্রায় দ্বিগুণ, ব্যয় ৫ গুণ

আয়-ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম। আয় ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ২৯৯ টাকা এবং ব্যয় ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৭ টাকা দেখিয়েছে দলটি।

ইসিতে দেওয়া তথ্যনুযায়ী ২০২৪ সালে জামায়াতের আয় বিএনপির প্রায় দ্বিগুণ এবং ব্যয় ৫ গুণ।গত পঞ্জিকা বছর (২০২৪) দলটির এই আয়-ব্যয় হয়েছে বলে সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

অন্যদিকে গত ২৭ জুলাই ২০২৪ সালের আয়-ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দেয় বিএনপি। দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০২৪ সালে তাদের মোট আয় হয়েছে ১৫ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৮৪২ টাকা, আর ব্যয় হয়েছে চার কোটি ৮০ লাখ ৪ হাজার ৮২৩ টাকা। ফলে দলের হাতে বর্তমানে উদ্বৃত্ত রয়েছে ১০ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার ১৯ টাকা।

২৭ জুলাই হিসাব জমা দেওয়ার পর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী জানান, বিএনপির আয়ের প্রধান উৎস ছিল সদস্যদের মাসিক চাঁদা, বই ও পুস্তক বিক্রি, ব্যাংক সুদ এবং এককালীন অনুদান। অন্যদিকে ব্যয়ের বড় অংশ গেছে কর্মসূচি বাস্তবায়ন, লিফলেট-পোস্টার মুদ্রণ, ব্যক্তিগত ও দুর্যোগকালীন সহায়তার পেছনে।

নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার স্বাক্ষরিত হিসাব বিবরণী থেকে জানা গেছে, গত পঞ্জিকা বছরে জামায়াত কর্মী ও সদস্যদের চাঁদা থেকে আয় করেছে ১৬ কোটি ৫৬ লাখ ৪২ হাজার ১৬২ টাকা। কার্যনির্বাহী কমিটি অথবা উপদেষ্টা পরিষদের চাঁদা অথবা অন্যান্য চাঁদা ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার ১৪৯ টাকা।

এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যক্তি অথবা সংস্থার কাছ থেকে অনুদান পেয়েছে ১১ কোটি ৮৬ লাখ ৩৮ হাজার ৬১৯ টাকা। দলের পত্রিকা, সাময়িকী, বইপুস্তক বিক্রি থেকে আয় ৯ লাখ ১১ হাজার ২৯০ টাকা। অন্যান্য চাঁদা থেকে দলটি আয় করেছে ৭ লাখ ২১ হাজার ৭৯ টাকা এবং আগের বছর স্থিতি ছিল ১০ কোটি ৪৯ লাখ ৪৫ হাজার ১৯১ টাকা। মোট আয় ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ২৯৯ টাকা।

জামায়াতে ইসলামীর কর্মীদের বেতন-ভাতা ও বোনাসে ব্যয় হয়েছে ৬ কোটি ৫৭ লাখ ৬৭ হাজার ৮৭৩ টাকা। আবাসন ও প্রশাসনিক বাবদ ২ কোটি ৬৮ লাখ ৭ হাজার ৪৯৫ টাকা ব্যয় হয়েছে। বিদ্যুৎ, ওয়াসা, গ্যাসসহ বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করেছে ২ লাখ ৪৬ হাজার ১৮ টাকা। ডাক, টেলিফোন, ইন্টারনেট, কুরিয়ার সার্ভিস, পত্রিকা বাবদ ব্যয় হয়েছে ৮ লাখ ৪৪ হাজার ৫২৬ টাকা। আপ্যায়নে ব্যয় হয়েছে ১০ লাখ ৯৫ হাজার ৯৬২ টাকা।

এ ছাড়া প্রচারণা ও পরিবহনে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৭০ লাখ ৬ হাজার ৫৬৩ টাকা। যাতায়াত বাবদ খরচ হয়েছে ১ কোটি ২৭ লাখ ১ হাজার ৭৭৬ টাকা। জনসভা, পথসভা, ঘরোয়া বৈঠকে ব্যয় হয়েছে ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৫ টাকা। প্রার্থীদের অনুদান দেওয়া হয়েছে ১১ কোটি ৫ লাখ ১৫ হাজার ৪২০ টাকা। ধর্মীয় বিশেষ অনুষ্ঠান বাবদ ব্যয় ৩২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৫০ টাকা। অন্যান্য ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ১২ লাখ ৫৬ হাজার ৯৮৯ টাকা। মোট ব্যয় হয়েছে ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৭ টাকা।

মিয়া গোলাম পরওয়ার স্বাক্ষরিত হিসাব বিবরণী থেকে আরও জানা গেছে, জামায়াতের কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই।

২০১৩ সালে নিবন্ধন বাতিল হওয়ার পূর্বে সর্বশেষ আয়-ব্যয়ের হিসাব দিয়েছিল দলটি। এরপর চলতি বছর নিবন্ধন ফিরে পাওয়ায় এক যুগ পর ফের হিসাব দিল দলটি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ফ্যাসিস্ট শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিচারের দাবিতে জবি ছাত্রদলের স্মারকলিপি

জামায়াতের আয় বিএনপির প্রায় দ্বিগুণ, ব্যয় ৫ গুণ

আপডেট সময় ০৪:২৩:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫

আয়-ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম। আয় ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ২৯৯ টাকা এবং ব্যয় ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৭ টাকা দেখিয়েছে দলটি।

ইসিতে দেওয়া তথ্যনুযায়ী ২০২৪ সালে জামায়াতের আয় বিএনপির প্রায় দ্বিগুণ এবং ব্যয় ৫ গুণ।গত পঞ্জিকা বছর (২০২৪) দলটির এই আয়-ব্যয় হয়েছে বলে সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

অন্যদিকে গত ২৭ জুলাই ২০২৪ সালের আয়-ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দেয় বিএনপি। দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০২৪ সালে তাদের মোট আয় হয়েছে ১৫ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৮৪২ টাকা, আর ব্যয় হয়েছে চার কোটি ৮০ লাখ ৪ হাজার ৮২৩ টাকা। ফলে দলের হাতে বর্তমানে উদ্বৃত্ত রয়েছে ১০ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার ১৯ টাকা।

২৭ জুলাই হিসাব জমা দেওয়ার পর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী জানান, বিএনপির আয়ের প্রধান উৎস ছিল সদস্যদের মাসিক চাঁদা, বই ও পুস্তক বিক্রি, ব্যাংক সুদ এবং এককালীন অনুদান। অন্যদিকে ব্যয়ের বড় অংশ গেছে কর্মসূচি বাস্তবায়ন, লিফলেট-পোস্টার মুদ্রণ, ব্যক্তিগত ও দুর্যোগকালীন সহায়তার পেছনে।

নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার স্বাক্ষরিত হিসাব বিবরণী থেকে জানা গেছে, গত পঞ্জিকা বছরে জামায়াত কর্মী ও সদস্যদের চাঁদা থেকে আয় করেছে ১৬ কোটি ৫৬ লাখ ৪২ হাজার ১৬২ টাকা। কার্যনির্বাহী কমিটি অথবা উপদেষ্টা পরিষদের চাঁদা অথবা অন্যান্য চাঁদা ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার ১৪৯ টাকা।

এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যক্তি অথবা সংস্থার কাছ থেকে অনুদান পেয়েছে ১১ কোটি ৮৬ লাখ ৩৮ হাজার ৬১৯ টাকা। দলের পত্রিকা, সাময়িকী, বইপুস্তক বিক্রি থেকে আয় ৯ লাখ ১১ হাজার ২৯০ টাকা। অন্যান্য চাঁদা থেকে দলটি আয় করেছে ৭ লাখ ২১ হাজার ৭৯ টাকা এবং আগের বছর স্থিতি ছিল ১০ কোটি ৪৯ লাখ ৪৫ হাজার ১৯১ টাকা। মোট আয় ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ২৯৯ টাকা।

জামায়াতে ইসলামীর কর্মীদের বেতন-ভাতা ও বোনাসে ব্যয় হয়েছে ৬ কোটি ৫৭ লাখ ৬৭ হাজার ৮৭৩ টাকা। আবাসন ও প্রশাসনিক বাবদ ২ কোটি ৬৮ লাখ ৭ হাজার ৪৯৫ টাকা ব্যয় হয়েছে। বিদ্যুৎ, ওয়াসা, গ্যাসসহ বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করেছে ২ লাখ ৪৬ হাজার ১৮ টাকা। ডাক, টেলিফোন, ইন্টারনেট, কুরিয়ার সার্ভিস, পত্রিকা বাবদ ব্যয় হয়েছে ৮ লাখ ৪৪ হাজার ৫২৬ টাকা। আপ্যায়নে ব্যয় হয়েছে ১০ লাখ ৯৫ হাজার ৯৬২ টাকা।

এ ছাড়া প্রচারণা ও পরিবহনে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৭০ লাখ ৬ হাজার ৫৬৩ টাকা। যাতায়াত বাবদ খরচ হয়েছে ১ কোটি ২৭ লাখ ১ হাজার ৭৭৬ টাকা। জনসভা, পথসভা, ঘরোয়া বৈঠকে ব্যয় হয়েছে ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৫ টাকা। প্রার্থীদের অনুদান দেওয়া হয়েছে ১১ কোটি ৫ লাখ ১৫ হাজার ৪২০ টাকা। ধর্মীয় বিশেষ অনুষ্ঠান বাবদ ব্যয় ৩২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৫০ টাকা। অন্যান্য ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ১২ লাখ ৫৬ হাজার ৯৮৯ টাকা। মোট ব্যয় হয়েছে ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৭ টাকা।

মিয়া গোলাম পরওয়ার স্বাক্ষরিত হিসাব বিবরণী থেকে আরও জানা গেছে, জামায়াতের কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই।

২০১৩ সালে নিবন্ধন বাতিল হওয়ার পূর্বে সর্বশেষ আয়-ব্যয়ের হিসাব দিয়েছিল দলটি। এরপর চলতি বছর নিবন্ধন ফিরে পাওয়ায় এক যুগ পর ফের হিসাব দিল দলটি।