ঢাকা ০৯:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo কুষ্টিয়ার মিরপুরে সাংবাদিকের উপরে সন্ত্রাসী হামলা Logo প্রথমে ‘অমানবিক’ নির্যাতন করেন, এরপর ভয় দেখিয়ে চুপ থাকতে বাধ্য করেন Logo রাজধানীতে জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিলের ডাক Logo সিরাজগঞ্জে ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে পাচঁ শতাধিক জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা প্রদান Logo আগামী নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কঠিন হবে -তারেক রহমান Logo পাথরঘাটায় রহস্যজনক বিষপান: ৫ স্কুলছাত্রী অসুস্থ Logo কেমন থাকবে আগামী ৫ দিন আবহাওয়া Logo ঢাবিতে বিএনপি সমর্থক একজন প্রভাষকও নেই Logo তুরস্কে ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্প, ধসে পড়েছে অনেক ভবন Logo পুলিশের বিশেষ অভিযানে মামা বাহিনীর সদস্য ও কুখ্যাত সন্ত্রাসী সিরাজ গ্রেপ্তার

ঢাবিতে বিএনপি সমর্থক একজন প্রভাষকও নেই

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ হাজার ৪২১ জন শিক্ষক ছিলেন। অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক এবং প্রভাষক মিলে বর্তমানে এ সংখ্যা আরও বেশি। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিসের একজন জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা জানান, ঢাবির ৮৩টি বিভাগ এবং ১৩টি ইনস্টিটিউট মিলিয়ে বর্তমানে ৪০০ জনের মতো প্রভাষক রয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে সাধারণত: প্রভাষকই প্রথম ধাপ। ঢাবিতে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া ও কার্যক্রম বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত প্রায় দুই যুগ ধরে দেশের সরকারে যখন যে দল থাকে তখন তাদের সমর্থক বা তাদের পরিচয়ের সূত্রে বেশিরভাগ শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। ২০০৬ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট ক্ষমতা থেকে যাওয়ার পর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দলটির সমর্থকদের প্রভাব কমতে শুরু করে। ২০১২ সাল পর্যন্ত কিছুটা প্রভাব থাকলেও বর্তমানে তা শূন্যের ঘরে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত শিক্ষকদের প্রভাব অনেকটাই নিরঙ্কুশ হয়ে উঠেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, মার্কেটিং এবং রসায়ন বিভাগের কয়েকজন শিক্ষক জানান, গত ১২-১৩ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের সময় কোনো প্রার্থীর বিরোধীদলীয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্ক বা সংশ্লেষ বা সমর্থনের বিষয়টি জানা গেলে তাকে আর শিক্ষক/ প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। প্রভাষক পদে প্রার্থী হয়ে এগিয়ে থাকলেও অনেককে নিয়োগ দেওয়া হয়নি শুধু বিরোধী দলীয় রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লেষ থাকার কারণে।

কিন্তু এ সময়ে আওয়ামী লীগের পরিচয় বা রেফারেন্স ব্যবহার করে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অনেকে। নীল দলের শিক্ষক হিসেবে প্রভাবও বিস্তার করছেন বেশ কয়েকজন।

এই ধারা দেখে অনেক নিরপেক্ষ শিক্ষার্থীরা এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েটরা বিএনপি ঘরানায় যোগ দেন না বা মেশেন না। এমনকি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর আবাসন, পদোন্নতি, পদায়নসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যেন বাধাগ্রস্ত না হয় সেজন্য সবচেয়ে তরুণ শিক্ষকরা বিএনপি সমর্থক সাদা দলে যোগ দিচ্ছেন না। ফলে সিন্ডিকেটসহ বিভিন্ন নীতি-নির্ধারনী বোর্ডে প্রভাষকদের মধ্যে থেকে কাউকে মনোনয়নও দিতে পারছে না সাদা দল।

সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে ৬টি পদের মধ্যে প্রভাষক এবং ডিন শ্রেণিতে কাউকে মনোনয়ন দিতে পারেনি সাদা দল। ঢাবি সিন্ডিকেটে মোট ১৭টি পদের মধ্যে এই ছয় পদে ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। সিন্ডিকেটে ছয় ক্যাটাগরিতে নির্বাচন হতে যাওয়া পদগুলো হলো- ডিন, প্রভোস্ট, অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক এবং প্রভাষক।

সাদা দলের আহবায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, বিএনপি সমর্থক ডিন না থাকায় প্রার্থী দেওয়া যায়নি। আর প্রভাষক সমর্থক থাকলেও তারা প্রকাশ করতে চান না। এজন্য প্রভাষক প্রার্থী নেই। আশা করি নির্বাচনে শিক্ষকেরা তাদের সুচিন্তিত মতামত দেবেন আমাদের পক্ষে।

এছাড়াও সাদা দলের সাবেক এক আহ্বায়কসহ একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ সরকার পরপর তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় ক্যাম্পাসে এখন কোণঠাসা সাদা দল। এ দীর্ঘ সময়ে বিএনপির সমর্থক তেমন কোনও শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। যারা অবসরে গেছেন তাদের স্থানে নিয়োগ পেয়েছেন আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা। ফলে ক্রমেই অবস্থান হারিয়েছে সাদা দল। বর্তমানে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোর মধ্যে শুধু আন্তর্জাতিক হলের প্রভোস্ট পদে আছেন বিএনপির সমর্থক একজন অধ্যাপক।

সাদা দলের দাবি, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রায় এক হাজার শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি নিয়োগ হয়েছে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সময়ে। যারা নিয়োগ পেয়েছেন তাদের অনেকেই মেধায় পিছিয়ে থাকলেও দলীয় পরিচয়ে বা প্রভাবে প্রভাষক হয়েছেন। এর মধ্যে যারা বিএনপির সমর্থক তারা তা কখনো প্রকাশ করেননি। কারণ বিএনপিকে সমর্থনের কথা জানলে ক্যাম্পাসে পদোন্নতি, বাসা পাওয়া, বিদেশ যাওয়াসহ অন্যান্য সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।

এ বিষয়ে সাদা দলের যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান খান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘ক্যাম্পাসে এক ধরনের শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে বর্তমান প্রশাসন। ফলে প্রভাষকদের কেউ আওয়ামী লীগের বাইরে অন্য দলীয় পরিচয় দিতে পারেন না। এতে তাদের চাকরিসহ অন্যান্য বিষয়গুলো অনিরাপদ অবস্থায় পড়বে। তবে এর মধ্যে বিএনপির সমর্থক নেই, এটা বলা যাবে না। নিরাপত্তার কারণেই তারা এটি প্রকাশ করেন না।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপির সময়ে এক হাজার ১০০ জনের মতো শিক্ষক ছিল। তখনকার অনেকে অবসরে গেছেন। বিএনপির শেষ সময়ে যারা নিয়োগ পেয়েছেন তারা এখন অধ্যাপক কিংবা সহযোগী অধ্যাপক। সহকারী অধ্যাপক পদে আছেন হাতে গোনা কয়েকজন। এখন শিক্ষকের সংখ্যা দুই হাজারের বেশি। যে নতুন শিক্ষকেরা নিয়োগ পেয়েছেন, তারা অধিকাংশই ক্ষমতাসীনদের সমর্থক হিসেবে পরিচয় দেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপ উপাচার্য (শিক্ষা) ও নীল দলের সমর্থক অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেছিলেন, এ বিষয়ে আমি কোনও বক্তব্য দেব না। উপাচার্য কিংবা নীল দলের আহ্বায়ক বক্তব্য দেবেন।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীল দলের আহ্বায়ক ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস সামাদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘এটা সাদা দলের একটি প্রপাগাণ্ডা। নির্বাচন আসলেই তারা এটি করে। যারা যোগ্য তাদেরকেই শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। আর এখন সবাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হবে এটাই স্বাভাবিক। আশা করি আমরা সিন্ডিকেট নির্বাচনে পূর্ণ প্যানেলে জিতব।’

দেশে উচ্চশিক্ষার সবচেয়ে পুরনো বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিরোধী দল বিএনপির সমর্থক কোনো প্রভাষক (লেকচারার) নেই। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের পরিচয়ে বা সমর্থক হিসেবে অনেক প্রভাষক (লেকচারার) থাকলেও জাতীয়তাবাদী দলটির পরিচয়ে পরিচিত নন কিংবা হতে চান না কোনো প্রভাষক।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ হাজার ৪২১ জন শিক্ষক ছিলেন। অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক এবং প্রভাষক মিলে বর্তমানে এ সংখ্যা আরও বেশি। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিসের একজন জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা জানান, ঢাবির ৮৩টি বিভাগ এবং ১৩টি ইনস্টিটিউট মিলিয়ে বর্তমানে ৪০০ জনের মতো প্রভাষক রয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে সাধারণত: প্রভাষকই প্রথম ধাপ। ঢাবিতে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া ও কার্যক্রম বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত প্রায় দুই যুগ ধরে দেশের সরকারে যখন যে দল থাকে তখন তাদের সমর্থক বা তাদের পরিচয়ের সূত্রে বেশিরভাগ শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। ২০০৬ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট ক্ষমতা থেকে যাওয়ার পর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দলটির সমর্থকদের প্রভাব কমতে শুরু করে। ২০১২ সাল পর্যন্ত কিছুটা প্রভাব থাকলেও বর্তমানে তা শূন্যের ঘরে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত শিক্ষকদের প্রভাব অনেকটাই নিরঙ্কুশ হয়ে উঠেছে।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, মার্কেটিং এবং রসায়ন বিভাগের কয়েকজন শিক্ষক জানান, গত ১২-১৩ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের সময় কোনো প্রার্থীর বিরোধীদলীয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্ক বা সংশ্লেষ বা সমর্থনের বিষয়টি জানা গেলে তাকে আর শিক্ষক/ প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। প্রভাষক পদে প্রার্থী হয়ে এগিয়ে থাকলেও অনেককে নিয়োগ দেওয়া হয়নি শুধু বিরোধী দলীয় রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লেষ থাকার কারণে।

কিন্তু এ সময়ে আওয়ামী লীগের পরিচয় বা রেফারেন্স ব্যবহার করে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অনেকে। নীল দলের শিক্ষক হিসেবে প্রভাবও বিস্তার করছেন বেশ কয়েকজন।

এই ধারা দেখে অনেক নিরপেক্ষ শিক্ষার্থীরা এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েটরা বিএনপি ঘরানায় যোগ দেন না বা মেশেন না। এমনকি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর আবাসন, পদোন্নতি, পদায়নসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যেন বাধাগ্রস্ত না হয় সেজন্য সবচেয়ে তরুণ শিক্ষকরা বিএনপি সমর্থক সাদা দলে যোগ দিচ্ছেন না। ফলে সিন্ডিকেটসহ বিভিন্ন নীতি-নির্ধারনী বোর্ডে প্রভাষকদের মধ্যে থেকে কাউকে মনোনয়নও দিতে পারছে না সাদা দল।

সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে ৬টি পদের মধ্যে প্রভাষক এবং ডিন শ্রেণিতে কাউকে মনোনয়ন দিতে পারেনি সাদা দল। ঢাবি সিন্ডিকেটে মোট ১৭টি পদের মধ্যে এই ছয় পদে ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। সিন্ডিকেটে ছয় ক্যাটাগরিতে নির্বাচন হতে যাওয়া পদগুলো হলো- ডিন, প্রভোস্ট, অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক এবং প্রভাষক।

সাদা দলের আহবায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, বিএনপি সমর্থক ডিন না থাকায় প্রার্থী দেওয়া যায়নি। আর প্রভাষক সমর্থক থাকলেও তারা প্রকাশ করতে চান না। এজন্য প্রভাষক প্রার্থী নেই। আশা করি নির্বাচনে শিক্ষকেরা তাদের সুচিন্তিত মতামত দেবেন আমাদের পক্ষে।

এছাড়াও সাদা দলের সাবেক এক আহ্বায়কসহ একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ সরকার পরপর তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় ক্যাম্পাসে এখন কোণঠাসা সাদা দল। এ দীর্ঘ সময়ে বিএনপির সমর্থক তেমন কোনও শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। যারা অবসরে গেছেন তাদের স্থানে নিয়োগ পেয়েছেন আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা। ফলে ক্রমেই অবস্থান হারিয়েছে সাদা দল। বর্তমানে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোর মধ্যে শুধু আন্তর্জাতিক হলের প্রভোস্ট পদে আছেন বিএনপির সমর্থক একজন অধ্যাপক।

সাদা দলের দাবি, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রায় এক হাজার শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি নিয়োগ হয়েছে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সময়ে। যারা নিয়োগ পেয়েছেন তাদের অনেকেই মেধায় পিছিয়ে থাকলেও দলীয় পরিচয়ে বা প্রভাবে প্রভাষক হয়েছেন। এর মধ্যে যারা বিএনপির সমর্থক তারা তা কখনো প্রকাশ করেননি। কারণ বিএনপিকে সমর্থনের কথা জানলে ক্যাম্পাসে পদোন্নতি, বাসা পাওয়া, বিদেশ যাওয়াসহ অন্যান্য সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।

এ বিষয়ে সাদা দলের যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান খান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘ক্যাম্পাসে এক ধরনের শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে বর্তমান প্রশাসন। ফলে প্রভাষকদের কেউ আওয়ামী লীগের বাইরে অন্য দলীয় পরিচয় দিতে পারেন না। এতে তাদের চাকরিসহ অন্যান্য বিষয়গুলো অনিরাপদ অবস্থায় পড়বে। তবে এর মধ্যে বিএনপির সমর্থক নেই, এটা বলা যাবে না। নিরাপত্তার কারণেই তারা এটি প্রকাশ করেন না।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপির সময়ে এক হাজার ১০০ জনের মতো শিক্ষক ছিল। তখনকার অনেকে অবসরে গেছেন। বিএনপির শেষ সময়ে যারা নিয়োগ পেয়েছেন তারা এখন অধ্যাপক কিংবা সহযোগী অধ্যাপক। সহকারী অধ্যাপক পদে আছেন হাতে গোনা কয়েকজন। এখন শিক্ষকের সংখ্যা দুই হাজারের বেশি। যে নতুন শিক্ষকেরা নিয়োগ পেয়েছেন, তারা অধিকাংশই ক্ষমতাসীনদের সমর্থক হিসেবে পরিচয় দেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপ উপাচার্য (শিক্ষা) ও নীল দলের সমর্থক অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেছিলেন, এ বিষয়ে আমি কোনও বক্তব্য দেব না। উপাচার্য কিংবা নীল দলের আহ্বায়ক বক্তব্য দেবেন।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীল দলের আহ্বায়ক ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস সামাদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘এটা সাদা দলের একটি প্রপাগাণ্ডা। নির্বাচন আসলেই তারা এটি করে। যারা যোগ্য তাদেরকেই শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। আর এখন সবাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হবে এটাই স্বাভাবিক। আশা করি আমরা সিন্ডিকেট নির্বাচনে পূর্ণ প্যানেলে জিতব।’

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

কুষ্টিয়ার মিরপুরে সাংবাদিকের উপরে সন্ত্রাসী হামলা

ঢাবিতে বিএনপি সমর্থক একজন প্রভাষকও নেই

আপডেট সময় ০২:১১:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ হাজার ৪২১ জন শিক্ষক ছিলেন। অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক এবং প্রভাষক মিলে বর্তমানে এ সংখ্যা আরও বেশি। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিসের একজন জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা জানান, ঢাবির ৮৩টি বিভাগ এবং ১৩টি ইনস্টিটিউট মিলিয়ে বর্তমানে ৪০০ জনের মতো প্রভাষক রয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে সাধারণত: প্রভাষকই প্রথম ধাপ। ঢাবিতে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া ও কার্যক্রম বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত প্রায় দুই যুগ ধরে দেশের সরকারে যখন যে দল থাকে তখন তাদের সমর্থক বা তাদের পরিচয়ের সূত্রে বেশিরভাগ শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। ২০০৬ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট ক্ষমতা থেকে যাওয়ার পর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দলটির সমর্থকদের প্রভাব কমতে শুরু করে। ২০১২ সাল পর্যন্ত কিছুটা প্রভাব থাকলেও বর্তমানে তা শূন্যের ঘরে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত শিক্ষকদের প্রভাব অনেকটাই নিরঙ্কুশ হয়ে উঠেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, মার্কেটিং এবং রসায়ন বিভাগের কয়েকজন শিক্ষক জানান, গত ১২-১৩ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের সময় কোনো প্রার্থীর বিরোধীদলীয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্ক বা সংশ্লেষ বা সমর্থনের বিষয়টি জানা গেলে তাকে আর শিক্ষক/ প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। প্রভাষক পদে প্রার্থী হয়ে এগিয়ে থাকলেও অনেককে নিয়োগ দেওয়া হয়নি শুধু বিরোধী দলীয় রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লেষ থাকার কারণে।

কিন্তু এ সময়ে আওয়ামী লীগের পরিচয় বা রেফারেন্স ব্যবহার করে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অনেকে। নীল দলের শিক্ষক হিসেবে প্রভাবও বিস্তার করছেন বেশ কয়েকজন।

এই ধারা দেখে অনেক নিরপেক্ষ শিক্ষার্থীরা এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েটরা বিএনপি ঘরানায় যোগ দেন না বা মেশেন না। এমনকি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর আবাসন, পদোন্নতি, পদায়নসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যেন বাধাগ্রস্ত না হয় সেজন্য সবচেয়ে তরুণ শিক্ষকরা বিএনপি সমর্থক সাদা দলে যোগ দিচ্ছেন না। ফলে সিন্ডিকেটসহ বিভিন্ন নীতি-নির্ধারনী বোর্ডে প্রভাষকদের মধ্যে থেকে কাউকে মনোনয়নও দিতে পারছে না সাদা দল।

সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে ৬টি পদের মধ্যে প্রভাষক এবং ডিন শ্রেণিতে কাউকে মনোনয়ন দিতে পারেনি সাদা দল। ঢাবি সিন্ডিকেটে মোট ১৭টি পদের মধ্যে এই ছয় পদে ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। সিন্ডিকেটে ছয় ক্যাটাগরিতে নির্বাচন হতে যাওয়া পদগুলো হলো- ডিন, প্রভোস্ট, অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক এবং প্রভাষক।

সাদা দলের আহবায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, বিএনপি সমর্থক ডিন না থাকায় প্রার্থী দেওয়া যায়নি। আর প্রভাষক সমর্থক থাকলেও তারা প্রকাশ করতে চান না। এজন্য প্রভাষক প্রার্থী নেই। আশা করি নির্বাচনে শিক্ষকেরা তাদের সুচিন্তিত মতামত দেবেন আমাদের পক্ষে।

এছাড়াও সাদা দলের সাবেক এক আহ্বায়কসহ একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ সরকার পরপর তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় ক্যাম্পাসে এখন কোণঠাসা সাদা দল। এ দীর্ঘ সময়ে বিএনপির সমর্থক তেমন কোনও শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। যারা অবসরে গেছেন তাদের স্থানে নিয়োগ পেয়েছেন আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা। ফলে ক্রমেই অবস্থান হারিয়েছে সাদা দল। বর্তমানে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোর মধ্যে শুধু আন্তর্জাতিক হলের প্রভোস্ট পদে আছেন বিএনপির সমর্থক একজন অধ্যাপক।

সাদা দলের দাবি, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রায় এক হাজার শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি নিয়োগ হয়েছে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সময়ে। যারা নিয়োগ পেয়েছেন তাদের অনেকেই মেধায় পিছিয়ে থাকলেও দলীয় পরিচয়ে বা প্রভাবে প্রভাষক হয়েছেন। এর মধ্যে যারা বিএনপির সমর্থক তারা তা কখনো প্রকাশ করেননি। কারণ বিএনপিকে সমর্থনের কথা জানলে ক্যাম্পাসে পদোন্নতি, বাসা পাওয়া, বিদেশ যাওয়াসহ অন্যান্য সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।

এ বিষয়ে সাদা দলের যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান খান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘ক্যাম্পাসে এক ধরনের শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে বর্তমান প্রশাসন। ফলে প্রভাষকদের কেউ আওয়ামী লীগের বাইরে অন্য দলীয় পরিচয় দিতে পারেন না। এতে তাদের চাকরিসহ অন্যান্য বিষয়গুলো অনিরাপদ অবস্থায় পড়বে। তবে এর মধ্যে বিএনপির সমর্থক নেই, এটা বলা যাবে না। নিরাপত্তার কারণেই তারা এটি প্রকাশ করেন না।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপির সময়ে এক হাজার ১০০ জনের মতো শিক্ষক ছিল। তখনকার অনেকে অবসরে গেছেন। বিএনপির শেষ সময়ে যারা নিয়োগ পেয়েছেন তারা এখন অধ্যাপক কিংবা সহযোগী অধ্যাপক। সহকারী অধ্যাপক পদে আছেন হাতে গোনা কয়েকজন। এখন শিক্ষকের সংখ্যা দুই হাজারের বেশি। যে নতুন শিক্ষকেরা নিয়োগ পেয়েছেন, তারা অধিকাংশই ক্ষমতাসীনদের সমর্থক হিসেবে পরিচয় দেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপ উপাচার্য (শিক্ষা) ও নীল দলের সমর্থক অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেছিলেন, এ বিষয়ে আমি কোনও বক্তব্য দেব না। উপাচার্য কিংবা নীল দলের আহ্বায়ক বক্তব্য দেবেন।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীল দলের আহ্বায়ক ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস সামাদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘এটা সাদা দলের একটি প্রপাগাণ্ডা। নির্বাচন আসলেই তারা এটি করে। যারা যোগ্য তাদেরকেই শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। আর এখন সবাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হবে এটাই স্বাভাবিক। আশা করি আমরা সিন্ডিকেট নির্বাচনে পূর্ণ প্যানেলে জিতব।’

দেশে উচ্চশিক্ষার সবচেয়ে পুরনো বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিরোধী দল বিএনপির সমর্থক কোনো প্রভাষক (লেকচারার) নেই। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের পরিচয়ে বা সমর্থক হিসেবে অনেক প্রভাষক (লেকচারার) থাকলেও জাতীয়তাবাদী দলটির পরিচয়ে পরিচিত নন কিংবা হতে চান না কোনো প্রভাষক।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ হাজার ৪২১ জন শিক্ষক ছিলেন। অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক এবং প্রভাষক মিলে বর্তমানে এ সংখ্যা আরও বেশি। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিসের একজন জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা জানান, ঢাবির ৮৩টি বিভাগ এবং ১৩টি ইনস্টিটিউট মিলিয়ে বর্তমানে ৪০০ জনের মতো প্রভাষক রয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে সাধারণত: প্রভাষকই প্রথম ধাপ। ঢাবিতে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া ও কার্যক্রম বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত প্রায় দুই যুগ ধরে দেশের সরকারে যখন যে দল থাকে তখন তাদের সমর্থক বা তাদের পরিচয়ের সূত্রে বেশিরভাগ শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। ২০০৬ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট ক্ষমতা থেকে যাওয়ার পর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দলটির সমর্থকদের প্রভাব কমতে শুরু করে। ২০১২ সাল পর্যন্ত কিছুটা প্রভাব থাকলেও বর্তমানে তা শূন্যের ঘরে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত শিক্ষকদের প্রভাব অনেকটাই নিরঙ্কুশ হয়ে উঠেছে।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, মার্কেটিং এবং রসায়ন বিভাগের কয়েকজন শিক্ষক জানান, গত ১২-১৩ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের সময় কোনো প্রার্থীর বিরোধীদলীয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্ক বা সংশ্লেষ বা সমর্থনের বিষয়টি জানা গেলে তাকে আর শিক্ষক/ প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। প্রভাষক পদে প্রার্থী হয়ে এগিয়ে থাকলেও অনেককে নিয়োগ দেওয়া হয়নি শুধু বিরোধী দলীয় রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লেষ থাকার কারণে।

কিন্তু এ সময়ে আওয়ামী লীগের পরিচয় বা রেফারেন্স ব্যবহার করে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অনেকে। নীল দলের শিক্ষক হিসেবে প্রভাবও বিস্তার করছেন বেশ কয়েকজন।

এই ধারা দেখে অনেক নিরপেক্ষ শিক্ষার্থীরা এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েটরা বিএনপি ঘরানায় যোগ দেন না বা মেশেন না। এমনকি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর আবাসন, পদোন্নতি, পদায়নসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যেন বাধাগ্রস্ত না হয় সেজন্য সবচেয়ে তরুণ শিক্ষকরা বিএনপি সমর্থক সাদা দলে যোগ দিচ্ছেন না। ফলে সিন্ডিকেটসহ বিভিন্ন নীতি-নির্ধারনী বোর্ডে প্রভাষকদের মধ্যে থেকে কাউকে মনোনয়নও দিতে পারছে না সাদা দল।

সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে ৬টি পদের মধ্যে প্রভাষক এবং ডিন শ্রেণিতে কাউকে মনোনয়ন দিতে পারেনি সাদা দল। ঢাবি সিন্ডিকেটে মোট ১৭টি পদের মধ্যে এই ছয় পদে ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। সিন্ডিকেটে ছয় ক্যাটাগরিতে নির্বাচন হতে যাওয়া পদগুলো হলো- ডিন, প্রভোস্ট, অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক এবং প্রভাষক।

সাদা দলের আহবায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, বিএনপি সমর্থক ডিন না থাকায় প্রার্থী দেওয়া যায়নি। আর প্রভাষক সমর্থক থাকলেও তারা প্রকাশ করতে চান না। এজন্য প্রভাষক প্রার্থী নেই। আশা করি নির্বাচনে শিক্ষকেরা তাদের সুচিন্তিত মতামত দেবেন আমাদের পক্ষে।

এছাড়াও সাদা দলের সাবেক এক আহ্বায়কসহ একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ সরকার পরপর তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় ক্যাম্পাসে এখন কোণঠাসা সাদা দল। এ দীর্ঘ সময়ে বিএনপির সমর্থক তেমন কোনও শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। যারা অবসরে গেছেন তাদের স্থানে নিয়োগ পেয়েছেন আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা। ফলে ক্রমেই অবস্থান হারিয়েছে সাদা দল। বর্তমানে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোর মধ্যে শুধু আন্তর্জাতিক হলের প্রভোস্ট পদে আছেন বিএনপির সমর্থক একজন অধ্যাপক।

সাদা দলের দাবি, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রায় এক হাজার শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি নিয়োগ হয়েছে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সময়ে। যারা নিয়োগ পেয়েছেন তাদের অনেকেই মেধায় পিছিয়ে থাকলেও দলীয় পরিচয়ে বা প্রভাবে প্রভাষক হয়েছেন। এর মধ্যে যারা বিএনপির সমর্থক তারা তা কখনো প্রকাশ করেননি। কারণ বিএনপিকে সমর্থনের কথা জানলে ক্যাম্পাসে পদোন্নতি, বাসা পাওয়া, বিদেশ যাওয়াসহ অন্যান্য সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।

এ বিষয়ে সাদা দলের যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান খান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘ক্যাম্পাসে এক ধরনের শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে বর্তমান প্রশাসন। ফলে প্রভাষকদের কেউ আওয়ামী লীগের বাইরে অন্য দলীয় পরিচয় দিতে পারেন না। এতে তাদের চাকরিসহ অন্যান্য বিষয়গুলো অনিরাপদ অবস্থায় পড়বে। তবে এর মধ্যে বিএনপির সমর্থক নেই, এটা বলা যাবে না। নিরাপত্তার কারণেই তারা এটি প্রকাশ করেন না।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপির সময়ে এক হাজার ১০০ জনের মতো শিক্ষক ছিল। তখনকার অনেকে অবসরে গেছেন। বিএনপির শেষ সময়ে যারা নিয়োগ পেয়েছেন তারা এখন অধ্যাপক কিংবা সহযোগী অধ্যাপক। সহকারী অধ্যাপক পদে আছেন হাতে গোনা কয়েকজন। এখন শিক্ষকের সংখ্যা দুই হাজারের বেশি। যে নতুন শিক্ষকেরা নিয়োগ পেয়েছেন, তারা অধিকাংশই ক্ষমতাসীনদের সমর্থক হিসেবে পরিচয় দেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপ উপাচার্য (শিক্ষা) ও নীল দলের সমর্থক অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেছিলেন, এ বিষয়ে আমি কোনও বক্তব্য দেব না। উপাচার্য কিংবা নীল দলের আহ্বায়ক বক্তব্য দেবেন।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীল দলের আহ্বায়ক ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস সামাদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘এটা সাদা দলের একটি প্রপাগাণ্ডা। নির্বাচন আসলেই তারা এটি করে। যারা যোগ্য তাদেরকেই শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। আর এখন সবাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হবে এটাই স্বাভাবিক। আশা করি আমরা সিন্ডিকেট নির্বাচনে পূর্ণ প্যানেলে জিতব।’