ইসলামের ফরজ বিধান ‘পর্দা’ ও নারীদের নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নারী শিক্ষার্থীরা।
আজ রোববার (১০ আগস্ট) বিকেল সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা জানান, জবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্যের সাথে ইসলামী ছাত্রী সংস্থার ঢাবি শাখার সদস্যদের সাক্ষাতের ছবি শেয়ার করে ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট দেন। একই পোস্টে মন্তব্যের উত্তরে তিনি যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে এক পর্যায়ে লেখেন, ‘লুঙ্গীর তলেও দারুণ পর্দা হয়।আমাদের পর্দায় সমস্যা না, সার্কাসে সমস্যা।’ পর্দা শুধু একটি কাপড় নয়, এটি মুসলিম নারীর ধর্মীয় অধিকার ও আবেগের বিষয়। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে এ নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য কোনভাবে মেনে নেয়া হবে না।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা দুই দফা দাবি উত্থাপন করেন- জবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিনের প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে; পর্দা করে চলা নারীদের বিরুদ্ধে কটুক্তি রোধে প্রশাসনের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
ইসলামিক ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী হুমাইরা বলেন, আমরা ৯৪ শতাংশ মুসলিমের দেশে বাস করি। এখানে পর্দাকে নিয়ে কটুক্তি কোনো ভালো মানুষ করতে পারে না। স্বাধীনতার পরেও কেন আমাদের এরূপ মন্তব্য শুনতে হবে? আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
নাট্যকলা বিভাগের ২০২৪-২৫ সেশনের শিক্ষার্থী তিশা বলেন, পর্দা ইসলাম ধর্মের ফরজ বিধান। পর্দা মুসলিম হিসেবে আমাদের অধিকার। কোন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ পর্দা নিয়ে কটুক্তি ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করতে পারে না।
দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী বুশরা বলেন, তার মন্তব্যের মাধ্যমে সব মুসলিম নারীকে অসম্মান করা হয়েছে। এজন্য তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া বলেন, এটি শুধু মুসলিম নারীকেই নয়, মূলত সব নারীকে অপমান করা হয়েছে। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি, যাতে ভবিষ্যতে পর্দা করে চলা নারীদের নিয়ে কেউ কটুক্তি করতে না পারে, সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
এর আগে গতকাল রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক এক পোস্টে জবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন ঢাবি উপাচার্যের সাথে ইসলামী ছাত্রী সংস্থার ঢাবি শাখার সদস্যদের সৌজন্য সাক্ষাতের ছবি যুক্ত করে ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট করেন। ফেসবুক পোস্টে তিনি ছাত্রী সংস্থার ফুলে শুভেচ্ছা বিনিময়ের ছবির ক্যাপশনে লিখেন, ‘সেরের জন্য কয়টা তালি’। সেই পোস্টে জিএমএস আহমেদ রেজা নামে একটি আইডি থেকে কমেন্ট করা হয়, ‘ভাই, ছবিতে সমস্যাটা কোথায়? রাজনীতি করবেন, এতটুকু সেন্স রাখবেন না, কোথায় সমালোচনা বা ট্রল করতে হয়, আর কোথায় না?’
এ কমেন্টের রিপ্লাইতে শামসুল আরেফিন লিখেন, ‘এই সে…টাই তো সেরের এবং সেরের ছাত্রের কাছে শিখতে চাই। সরি সেন্স।’ ছাত্রদল নেতার এমন মন্তব্য দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।