ঢাকা ০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫, ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo আমরা হাতে ধরে গণ-অভ্যুত্থানকে মেরে ফেলছি : সামান্তা শারমিন Logo তারেক রহমানের কাছে সন্ত্রাসবাদ-চাঁদাবাজের ঠাই নেই: বিএনপি নেতা মধু Logo কমলগঞ্জে নিজ ঘর থেকে সাবেক ছাত্রদল নেতার গলা কাটা লাশ উদ্ধার Logo হাসিনা বারোটা বাজিয়েছে, এ সরকার চব্বিশটা বাজায়ে দিসে: মির্জা আব্বাস Logo প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে টাইফয়েডের টিকা পাবে ৫ কোটি শিশু Logo কুষ্টিয়ায় জামায়াতের রোকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত Logo ডাকাতির চেষ্টায় গণপিটুনির শিকার সেই বিএনপি নেতা বহিষ্কার Logo জবির আইইআর-এ র‌্যাগিং, ১০ দিনেও উদ্যোগহীন পরিচালক; আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ভুক্তভোগীরা Logo ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সংসদ নির্বাচন : সিইসি Logo নাটোরে মিনি স্টেডিয়াম উদ্বোধন করলেন ক্রীড়া উপদেষ্টা

চাঁদা না পেয়ে গাজীপুরের পোশাক শ্রমিককে পেটাল ছাত্রদল নেতা

গাজীপুরের টঙ্গীতে ১ লক্ষ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় বাহারুল ইসলাম (৩০) নামে এক পোশাক শ্রমিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের সাবেক এক নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শাহাদাত হোসেন ওরফে দিপু দেওয়ান টঙ্গী পশ্চিম থানা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এবং আসন্ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী।

ভূক্তভূগী বাহারুলের অভিযোগ, প্রায় ছয় মাস আগে তিনি ২.৫ কাঠা জমির ওপর বাড়ি নির্মাণ করে পরিবারসহ বসবাস করেন। ছাত্রদল নেতা দিপু গত কয়েকদিন ধরে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।

বাহারুল বলেন, ৫ আগস্ট কারখানা বন্ধ থাকায় সকাল প্রায় সাড়ে ১০টায় তিনি ভাদাম বাজারে বাজার করতে যান। এ সময় দিপু তাকে রাস্তায় পেয়ে আবারও এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তিনি অস্বীকৃতি জানালে, ছাত্রদল নেতা হাতে থাকা কাঠের বাটাম দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম করে। এক পর্যায়ে অভিযুক্ত হত্যার উদ্দেশ্যে তার মাথায় আঘাত করতে গেলে তিনি দুই হাত দিয়ে তা প্রতিহত করেন। এতে আঘাত তার দুই হাতের কব্জির ওপরে লেগে গুরুতর হাড়ভাঙা জখম হয়।

এছাড়া, বাজার করার জন্য তার পকেটে থাকা নগদ ৩ হাজার ৮৫০ টাকা ছিনিয়ে নেয় ওই ছাত্রদল নেতা। বাহারুলের চিৎকারে বাজারের লোকজন এগিয়ে এলে দিপু বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে স্থান ত্যাগ করে বলেও জানান তিনি।

পরে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক তার দুই হাতের এক্স-রে করেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রদল নেতা দিপু দেওয়ান জানায়, বাহার একজন অনলাইন জুয়ার এজেন্ট, যার কারণে অনেক তরুণ সমাজ ধ্বংসের পথে গেছে। তিনি দাবি করেন, ‘এমন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আমি ছাত্রনেতা হিসেবে সবসময় সোচ্চার থাকব।’ চাঁদা দাবির অভিযোগকে তিনি ষড়যন্ত্র ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কারসাজি বলে উল্লেখ করেন। তবে বাহারুলকে প্রকাশ্যে মারধরের বিষয়ে তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট উত্তর দেননি।

এছাড়া, বাজার করার জন্য তার পকেটে থাকা নগদ ৩ হাজার ৮৫০ টাকা ছিনিয়ে নেয় ওই ছাত্রদল নেতা। বাহারুলের চিৎকারে বাজারের লোকজন এগিয়ে এলে দিপু বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে স্থান ত্যাগ করে বলেও জানান তিনি।

পরে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক তার দুই হাতের এক্স-রে করেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রদল নেতা দিপু দেওয়ান বলেন, বাহার একজন অনলাইন জুয়ার এজেন্ট, যার কারণে অনেক তরুণ সমাজ ধ্বংসের পথে গেছে।

তিনি দাবি করেন, ‘এমন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আমি ছাত্রনেতা হিসেবে সবসময় সোচ্চার থাকব।’ চাঁদা দাবির অভিযোগকে তিনি ষড়যন্ত্র ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কারসাজি বলে উল্লেখ করেন। তবে বাহারুলকে প্রকাশ্যে মারধরের বিষয়ে তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট উত্তর দেননি।

স্থানীয় অনুসন্ধানে জানা গেছে, দিপু দেওয়ান প্রভাবশালী ও অর্থবিত্তশালী পরিবারের সন্তান। এলাকাবাসীর একাংশ জানান, মেজাজী স্বভাবের কারণে দিপু পূর্বেও একাধিকবার মানুষকে মারধর করেছেন, যদিও তার বিরুদ্ধে আগে চাঁদাবাজির অভিযোগ শোনা যায়নি। বাদাম এলাকার ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ জানান, ‘২০২৪ সালে আমার ছেলে রাফিজকে তুচ্ছ ঘটনায় দিপু অনেক মারধর করেছিল। তখন সামাজিকভাবে মীমাংসা হয়। কিন্তু এখনকার ঘটনা খুবই দুঃখজনক।’

অন্যদিকে, দিপুর পক্ষেও এলাকাবাসীর একটি অংশ বলছে, তিনি মাঝে মাঝে আইন নিজের হাতে তুলে নিলেও চাঁদা চাওয়ার মতো কাজ করেননি।

ভুক্তভোগী বাহারুলের অতীত নিয়েও রয়েছে বিতর্ক। স্থানীয় রফিকুল নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘বাহার আগে জুয়ায় আসক্ত ছিল এবং জুয়ার এজেন্ট হিসেবেও কাজ করত। যদিও এখন সে জড়িত কি না জানি না, তবুও প্রকাশ্যে এভাবে মারধরের অধিকার কারও নেই।’ ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজও বলেন, ‘যদি বাহার সত্যিই জুয়ায় জড়িত থাকে, তাহলে আইন আছে, তাকে পুলিশে দেওয়া উচিত ছিল। এভাবে মারধর অন্যায়।’

জুয়ার এজেন্ট হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বাহারুল স্বীকার করেন, ‘আমি দুই-তিন বছর আগে এসবের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম, তবে বর্তমানে কোনোভাবে জড়িত নই।’

দিপু দেওয়ান টঙ্গী পশ্চিম থানা বিএনপির আহ্বায়ক প্রভাষক বশির উদ্দিনের ঘনিষ্ঠ বলে এলাকায় পরিচিত। তার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসকান্দর হাবীবুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

আমরা হাতে ধরে গণ-অভ্যুত্থানকে মেরে ফেলছি : সামান্তা শারমিন

চাঁদা না পেয়ে গাজীপুরের পোশাক শ্রমিককে পেটাল ছাত্রদল নেতা

আপডেট সময় ১২:৫১:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ অগাস্ট ২০২৫

গাজীপুরের টঙ্গীতে ১ লক্ষ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় বাহারুল ইসলাম (৩০) নামে এক পোশাক শ্রমিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের সাবেক এক নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শাহাদাত হোসেন ওরফে দিপু দেওয়ান টঙ্গী পশ্চিম থানা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এবং আসন্ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী।

ভূক্তভূগী বাহারুলের অভিযোগ, প্রায় ছয় মাস আগে তিনি ২.৫ কাঠা জমির ওপর বাড়ি নির্মাণ করে পরিবারসহ বসবাস করেন। ছাত্রদল নেতা দিপু গত কয়েকদিন ধরে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।

বাহারুল বলেন, ৫ আগস্ট কারখানা বন্ধ থাকায় সকাল প্রায় সাড়ে ১০টায় তিনি ভাদাম বাজারে বাজার করতে যান। এ সময় দিপু তাকে রাস্তায় পেয়ে আবারও এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তিনি অস্বীকৃতি জানালে, ছাত্রদল নেতা হাতে থাকা কাঠের বাটাম দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম করে। এক পর্যায়ে অভিযুক্ত হত্যার উদ্দেশ্যে তার মাথায় আঘাত করতে গেলে তিনি দুই হাত দিয়ে তা প্রতিহত করেন। এতে আঘাত তার দুই হাতের কব্জির ওপরে লেগে গুরুতর হাড়ভাঙা জখম হয়।

এছাড়া, বাজার করার জন্য তার পকেটে থাকা নগদ ৩ হাজার ৮৫০ টাকা ছিনিয়ে নেয় ওই ছাত্রদল নেতা। বাহারুলের চিৎকারে বাজারের লোকজন এগিয়ে এলে দিপু বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে স্থান ত্যাগ করে বলেও জানান তিনি।

পরে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক তার দুই হাতের এক্স-রে করেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রদল নেতা দিপু দেওয়ান জানায়, বাহার একজন অনলাইন জুয়ার এজেন্ট, যার কারণে অনেক তরুণ সমাজ ধ্বংসের পথে গেছে। তিনি দাবি করেন, ‘এমন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আমি ছাত্রনেতা হিসেবে সবসময় সোচ্চার থাকব।’ চাঁদা দাবির অভিযোগকে তিনি ষড়যন্ত্র ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কারসাজি বলে উল্লেখ করেন। তবে বাহারুলকে প্রকাশ্যে মারধরের বিষয়ে তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট উত্তর দেননি।

এছাড়া, বাজার করার জন্য তার পকেটে থাকা নগদ ৩ হাজার ৮৫০ টাকা ছিনিয়ে নেয় ওই ছাত্রদল নেতা। বাহারুলের চিৎকারে বাজারের লোকজন এগিয়ে এলে দিপু বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে স্থান ত্যাগ করে বলেও জানান তিনি।

পরে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক তার দুই হাতের এক্স-রে করেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রদল নেতা দিপু দেওয়ান বলেন, বাহার একজন অনলাইন জুয়ার এজেন্ট, যার কারণে অনেক তরুণ সমাজ ধ্বংসের পথে গেছে।

তিনি দাবি করেন, ‘এমন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আমি ছাত্রনেতা হিসেবে সবসময় সোচ্চার থাকব।’ চাঁদা দাবির অভিযোগকে তিনি ষড়যন্ত্র ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কারসাজি বলে উল্লেখ করেন। তবে বাহারুলকে প্রকাশ্যে মারধরের বিষয়ে তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট উত্তর দেননি।

স্থানীয় অনুসন্ধানে জানা গেছে, দিপু দেওয়ান প্রভাবশালী ও অর্থবিত্তশালী পরিবারের সন্তান। এলাকাবাসীর একাংশ জানান, মেজাজী স্বভাবের কারণে দিপু পূর্বেও একাধিকবার মানুষকে মারধর করেছেন, যদিও তার বিরুদ্ধে আগে চাঁদাবাজির অভিযোগ শোনা যায়নি। বাদাম এলাকার ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ জানান, ‘২০২৪ সালে আমার ছেলে রাফিজকে তুচ্ছ ঘটনায় দিপু অনেক মারধর করেছিল। তখন সামাজিকভাবে মীমাংসা হয়। কিন্তু এখনকার ঘটনা খুবই দুঃখজনক।’

অন্যদিকে, দিপুর পক্ষেও এলাকাবাসীর একটি অংশ বলছে, তিনি মাঝে মাঝে আইন নিজের হাতে তুলে নিলেও চাঁদা চাওয়ার মতো কাজ করেননি।

ভুক্তভোগী বাহারুলের অতীত নিয়েও রয়েছে বিতর্ক। স্থানীয় রফিকুল নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘বাহার আগে জুয়ায় আসক্ত ছিল এবং জুয়ার এজেন্ট হিসেবেও কাজ করত। যদিও এখন সে জড়িত কি না জানি না, তবুও প্রকাশ্যে এভাবে মারধরের অধিকার কারও নেই।’ ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজও বলেন, ‘যদি বাহার সত্যিই জুয়ায় জড়িত থাকে, তাহলে আইন আছে, তাকে পুলিশে দেওয়া উচিত ছিল। এভাবে মারধর অন্যায়।’

জুয়ার এজেন্ট হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বাহারুল স্বীকার করেন, ‘আমি দুই-তিন বছর আগে এসবের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম, তবে বর্তমানে কোনোভাবে জড়িত নই।’

দিপু দেওয়ান টঙ্গী পশ্চিম থানা বিএনপির আহ্বায়ক প্রভাষক বশির উদ্দিনের ঘনিষ্ঠ বলে এলাকায় পরিচিত। তার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসকান্দর হাবীবুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’