ঢাকা ০১:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo অর্থের অভাবে ভর্তি অনিশ্চিত জাবি শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহর দায়িত্ব নিলো ছাত্রশিবির Logo শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় তৃতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে Logo বাগেরহাটে চলছে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল, নির্বাচনি অফিসে তালা Logo পবিত্র সিরাতুন্নবী উপলক্ষে মৌলভীবাজারে মৌসাসের না’ত মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo ইবি ক্যাফেটেরিয়াতে সংযুক্ত হলো পর্দানশীন নারীদের জন্য বিশেষ কর্নার Logo এবার জাকসু নির্বাচন স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট Logo বুলিং-র‍্যাগিং প্রতিরোধ সংক্রান্ত নীতিমালাকে আইন হিসেবে ঘোষণা হাইকোর্টের Logo ডাকসু নির্বাচন নিয়ে সেনাবাহিনীর বিবৃতি Logo উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে সারাদেশের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ Logo ডাকসু নির্বাচন বানচালে গভীর চক্রান্ত, প্রতিহতের ঘোষণা শিক্ষার্থীদের

গাজায় ত্রাণের ট্রাক উল্টে প্রাণ গেল কমপক্ষে ২৫ জনের

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় খাদ্যের অপেক্ষায় থাকা মানুষের ভিড়ের ওপর একটি ত্রাণবাহী ট্রাক উল্টে অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অনেকে।

এছাড়া বুধবার (৬ আগস্ট) দিনের বিভিন্ন সময়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় পুরো গাজাজুড়ে আরও ২৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ওয়াফার বরাতে জানা যায়, সেনাবাহিনীর চাপের মুখে ট্রাকটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তায় যেতে বাধ্য হয় এবং সেখানেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। তবে ঠিক কোথায় এই ঘটনা ঘটেছে, তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি।

একটি চিকিৎসা সূত্র গেছে, দক্ষিণ গাজার রাফাহর পশ্চিমাংশে ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে অপেক্ষমাণ অবস্থায় ইসরায়েলি গুলিতে পাঁচ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে একটি অ্যাপার্টমেন্টে বিমান হামলায় একই পরিবারের পাঁচ সদস্য প্রাণ হারান এবং অন্তত ২০ জন আহত হন।

এছাড়া গাজা শহরে ড্রোন হামলায় ছয় মাস বয়সী এক শিশু নিহত হয়েছে, সে ত্রাণশিবিরে ছিল। একই শহরের দুটি বাড়িতে আরও হামলায় অন্তত আটজন হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।

মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ অঞ্চলে গুলিবর্ষণে একটি আশ্রয়শিবিরে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।

বার্তাসংস্থা আনাদোলু বলছে, গত ১৮ বছর ধরে গাজা অবরোধের মুখে রয়েছে, আর চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল সব প্রবেশপথ বন্ধ করে দিয়েছে, ফলে মানবিক ত্রাণ প্রবেশে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। এতে ২৪ লাখ মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

গাজা সরকার জানায়, ২৭ জুলাই থেকে মাত্র ৮৪৩টি ত্রাণ ট্রাক প্রবেশ করতে পেরেছে, যেখানে প্রতিদিন প্রায় ৬ হাজার ট্রাক প্রয়োজন।

ফিলিস্তিনি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের ২৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র-চালিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোর আশপাশে ত্রাণের আশায় আসা অন্তত ১ হাজার ৫৬৮ জন নিহত এবং ১১ হাজার ২৩০ জন আহত হয়েছেন

গাজার কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে “ক্ষুধা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করার” জন্য দায়ী করছে। তাদের অভিযোগ, ইচ্ছাকৃতভাবে নিরাপত্তা না দিয়ে জনগণকে ক্ষতিগ্রস্ত ও বোমা পড়া অনুন্নত রাস্তায় ত্রাণ নিতে বাধ্য করা হচ্ছে, যেখানে ইতোমধ্যে দুর্ভিক্ষে ভোগা মানুষের ভিড় রয়েছে।

অনেকেই ইসরায়েলের তৈরি ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থাকে “ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য মৃত্যুকূপ” বলেও সমালোচনা করেছেন।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে এ পর্যন্ত গাজায় ৬১ হাজার ১০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এই যুদ্ধের ফলে পুরো উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

অর্থের অভাবে ভর্তি অনিশ্চিত জাবি শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহর দায়িত্ব নিলো ছাত্রশিবির

গাজায় ত্রাণের ট্রাক উল্টে প্রাণ গেল কমপক্ষে ২৫ জনের

আপডেট সময় ০৮:৫৩:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় খাদ্যের অপেক্ষায় থাকা মানুষের ভিড়ের ওপর একটি ত্রাণবাহী ট্রাক উল্টে অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অনেকে।

এছাড়া বুধবার (৬ আগস্ট) দিনের বিভিন্ন সময়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় পুরো গাজাজুড়ে আরও ২৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ওয়াফার বরাতে জানা যায়, সেনাবাহিনীর চাপের মুখে ট্রাকটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তায় যেতে বাধ্য হয় এবং সেখানেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। তবে ঠিক কোথায় এই ঘটনা ঘটেছে, তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি।

একটি চিকিৎসা সূত্র গেছে, দক্ষিণ গাজার রাফাহর পশ্চিমাংশে ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে অপেক্ষমাণ অবস্থায় ইসরায়েলি গুলিতে পাঁচ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে একটি অ্যাপার্টমেন্টে বিমান হামলায় একই পরিবারের পাঁচ সদস্য প্রাণ হারান এবং অন্তত ২০ জন আহত হন।

এছাড়া গাজা শহরে ড্রোন হামলায় ছয় মাস বয়সী এক শিশু নিহত হয়েছে, সে ত্রাণশিবিরে ছিল। একই শহরের দুটি বাড়িতে আরও হামলায় অন্তত আটজন হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।

মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ অঞ্চলে গুলিবর্ষণে একটি আশ্রয়শিবিরে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।

বার্তাসংস্থা আনাদোলু বলছে, গত ১৮ বছর ধরে গাজা অবরোধের মুখে রয়েছে, আর চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল সব প্রবেশপথ বন্ধ করে দিয়েছে, ফলে মানবিক ত্রাণ প্রবেশে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। এতে ২৪ লাখ মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

গাজা সরকার জানায়, ২৭ জুলাই থেকে মাত্র ৮৪৩টি ত্রাণ ট্রাক প্রবেশ করতে পেরেছে, যেখানে প্রতিদিন প্রায় ৬ হাজার ট্রাক প্রয়োজন।

ফিলিস্তিনি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের ২৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র-চালিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোর আশপাশে ত্রাণের আশায় আসা অন্তত ১ হাজার ৫৬৮ জন নিহত এবং ১১ হাজার ২৩০ জন আহত হয়েছেন

গাজার কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে “ক্ষুধা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করার” জন্য দায়ী করছে। তাদের অভিযোগ, ইচ্ছাকৃতভাবে নিরাপত্তা না দিয়ে জনগণকে ক্ষতিগ্রস্ত ও বোমা পড়া অনুন্নত রাস্তায় ত্রাণ নিতে বাধ্য করা হচ্ছে, যেখানে ইতোমধ্যে দুর্ভিক্ষে ভোগা মানুষের ভিড় রয়েছে।

অনেকেই ইসরায়েলের তৈরি ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থাকে “ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য মৃত্যুকূপ” বলেও সমালোচনা করেছেন।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে এ পর্যন্ত গাজায় ৬১ হাজার ১০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এই যুদ্ধের ফলে পুরো উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে।