চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে বিভিন্নভাবে অগণিত শিক্ষার্থীদের নির্যাতন ও দমন-পীড়নের ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
ফ্যাসিবাদী শক্তির দোসরদের মধ্যে কিছু শিক্ষক নামধারী দোসর থেকে শুরু করে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরাও ছিল। তাদের অত্যাচারে বিভিন্নসময় শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন ব্যাহত হয়েছিল। অন্যায়ভাবে বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের শাস্তি, শারীরিক, মানসিক নির্যাতন করা হয়।
ফ্যাসিস্ট হাসিনার পলায়নের পরে জুলুমের প্রতি বিধান চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত তদন্ত কমিশনে অভিযোগ জমা দেওয়ার দীর্ঘ এক বছর পার হয়ে গেছে। কিন্তু বিচারপ্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় আজ সোমবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মুখে লাল কাপড় পেঁচিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
ভুক্তভোগীদের দাবি, বিগত সরকার আমলে কিছু প্রভাবশালী শিক্ষক ও ছাত্রসংগঠনের একটি অংশের হাতে বহু শিক্ষার্থী শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তদন্ত কমিশনে অভিযোগ জমা দেওয়ার পরও বিচার হয়নি, বরং অভিযুক্তদের কেউ কেউ পদোন্নতিও পেয়েছেন। এই পরিস্থিতিকে ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি’ বলে অভিহিত করেছেন তারা।
যৌথ এক বিবৃতিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, “আমরা প্রশাসনকে একাধিকবার অবহিত করেছি। কিছু সাক্ষ্য গ্রহণ করা হলেও এখনো কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। বরং এক অভিযুক্ত শিক্ষককে ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন এবং আরেকজনকে অধ্যাপক পদে পদায়নের চেষ্টায় অনলাইন ভাইবা বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এতে আমরা বিচারের ব্যাপারে গভীরভাবে সন্দিহান।”
ভুক্তভোগীদের ৪ দফা দাবি:
১. আগামী এক মাসের মধ্যে সকল অভিযোগের তদন্ত ও যথাযথ বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
২.অভিযুক্ত শিক্ষক ও ছাত্রসংগঠনের সাবেক-বর্তমান সদস্যদের পদোন্নতি অবিলম্বে স্থগিত করতে হবে।
৩.ইতোমধ্যে যারা পদোন্নতি পেয়েছেন, তাদের সেই পদ থেকে অপসারণ করতে হবে।
৪. তদন্ত ও বিচারপ্রক্রিয়ার ধীরগতির সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে হবে প্রশাসনকে।
অবস্থান কর্মসূচীর ডাক দেওয়া শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘ঐতিহাসিক ৫ আগস্ট’ উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছে; অথচ ফ্যাসিবাদবিরোধী দাবির প্রতি তারা নির্বিকার। “যে প্রশাসন ফ্যাসিবাদকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে ব্যর্থ, তাদের এ ধরনের অনুষ্ঠান উদযাপনের কোনো নৈতিক অধিকার নেই।” তাই প্রশাসনের এ আয়োজনে তারা অংশ না নিয়ে বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।