সারাদেশে টানা বৃষ্টিপাতে দেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অবস্থায় আগামী ২ দিনে বৃষ্টিপাতের ফলে দেশের ৪ জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
সোমবার (৪ আগস্ট) এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
দেশের নদ-নদীর বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের অভ্যন্তরে ঢাকা ও রংপুর বিভাগে মাঝারি থেকে ভারি এবং সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত পরিলক্ষিত হয়েছে। এছাড়াও দেশের উজানে ভারতের মেঘালয় ও অরুণাচল প্রদেশে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত পরিলক্ষিত হয়েছে।
অন্যদিকে দেশের রাজশাহী, রংপুর বিভাগসমূহে ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশে আগামী ২ দিন (৪ আগস্ট সকাল ৯টা থেকে ৬ আগস্ট সকাল ৯টা পর্যন্ত) এবং সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগসমূহে ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারতের আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরা প্রদেশে আগামী ৩ দিন (৪ আগস্ট সকাল ৯টা থেকে ৭ আগস্ট সকাল ৯টা পর্যন্ত) ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
এই অবস্থায় রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সমতল গত ২৪ ঘণ্টায় বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী ২ দিন নদীগুলোর পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে এবং পরবর্তী একদিন স্থিতিশীল থাকতে পারে। তবে আগামী ২ দিনে তিস্তা নদীর পানি সমতল বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে এবং ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সমতল সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে। এর ফলে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার তিস্তা নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে এবং গাইবান্ধা জেলা সংলগ্ন তিস্তা নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চল সাময়িকভাবে প্লাবিত হতে পারে।
এছাড়াও সিলেট বিভাগের মনু, ধলাই ও খোয়াই নদীর পানি সমতল গত ২৪ ঘণ্টায় হ্রাস পেয়েছে। আগামী একদিন এসব নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে ও পরবর্তী ২ দিন বৃদ্ধি পেতে পারে। আর সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি সমতল গত ২৪ ঘণ্টায় বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আগামী ৩ দিনও অব্যাহত থাকতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের মহানন্দা, করতোয়া, আপার আত্রাই, যমুনেশ্বরি, পুনর্ভবা, ঘাঘট ও টাঙ্গন নদীর পানি সমতল গত ২৪ ঘণ্টায় বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আগামী ২ দিন অব্যাহত থাকতে পারে এবং পরবর্তী একদিন স্থিতিশীল থাকতে পারে।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম বিভাগের ফেনী, মুহুরী, সেলোনিয়া ও রহমতখালি খাল নদীগুলোর পানি সমতল গত ২৪ ঘণ্টায় বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি গোমতী নদীর পানি সমতল গত ২৪ ঘণ্টায় হ্রাস পেয়েছে ও নোয়াখালী খাল নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে। আগামী ৩ দিন এসব নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে।
এছাড়া গঙ্গা ও পদ্মা নদীর পানি সমতল গত ২৪ ঘণ্টায় বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আগামী ৫ দিন অব্যাহত থাকতে পারে, তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়েই প্রবাহিত হতে পারে। আর ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদ-নদীর পানি সমতল গত ২৪ ঘণ্টায় বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আগামী ৩ দিন অব্যাহত থাকতে পারে এবং পরবর্তী ২ দিন স্থিতিশীল থাকতে পারে। তবে এই সময় এসব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে বলেও জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র