ঢাকা ০২:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ৪ আগষ্ট স্মরণে পালিত হয়েছে রক্তাক্ত মুন্সিগঞ্জ দিবস Logo ভারতের ওপর আবারো ‘উল্লেখযোগ্য হারে’ শুল্কারোপের হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের Logo “১/১১ এর পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে”, বিতর্কিত স্ট্যাটাসটি ডিলিট করলেন মাহফুজ আলম Logo ৪ আগষ্ট স্মরণে পালিত হয়েছে রক্তাক্ত মুন্সিগঞ্জ দিবস Logo নতুন সংবিধান হলেই পরিবর্তন আসবে, এমন নয়: আসিফ নজরুল Logo ফ্যাসিবাদের মূলোৎপাটন করে জুলাইয়ের চেতনার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে Logo জুলাই শহীদদের স্মরণে টংগিবাড়িতে ছাত্রশিবিরের বৃক্ষরোপণ অভিযান Logo জবিতে জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন শহীদ সাজিদের মা Logo এক-এগারোর পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে: মাহফুজ আলম Logo দেশ নিয়ে একটা ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত চলছে: মির্জা ফখরুল

দিল্লির পুলিশ বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলায় ক্ষুব্ধ মমতা

দিল্লির পুলিশ বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলায় ক্ষুব্ধ মমতা

ভারতের দিল্লি পুলিশের একটি চিঠিতে বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ হিসেবে উল্লেখ করায় ব্যাপক চটেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও টুইট করে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।

পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে দিল্লি পুলিশকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি অভিযুক্ত অফিসারদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

জানা গেছে, দিল্লিতে অবস্থিত বঙ্গভবনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে উদ্দেশ্য করে দিল্লি পুলিশের অধীন লোধি কলোনী পুলিশ থানার তরফে পাঠানো ওই চিঠিটিতে লেখা হয়েছে, “বাংলাদেশি সন্দেহে আটকৃত ব্যক্তিদের কাছে থেকে বাজেয়াপ্ত নথি, তথ্য বাংলাদেশি ভাষায় রয়েছে। সেটিকে যাচাই করতে ইংরেজি ও হিন্দিতে অনুবাদ করার জন্য অনুবাদক প্রয়োজন।”

রবিবার (৩ আগস্ট) তৃণমুল কংগ্রেসের এক্স হ্যান্ডেলে ওই সরকারি চিঠিটি পোস্ট করে তার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। দলের তরফে বলা হয়েছে, “বিজেপি বাংলা বিদ্বেষের সকল সীমা পার করে ফেলছে। বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলোতে একের পর এক বাংলাভাষী শ্রমিকদের হেনস্থা ও গ্রেপ্তারের পর, এবার অমিত শাহের দিল্লির পুলিশ সব সীমা অতিক্রম করে আমাদের মাতৃভাষা বাংলাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে দাগিয়ে দিল।”

তৃণমূলের দাবি, “এটা কোনো ভুল নয়- এটি একটি ইচ্ছাকৃত অপমান, পরিকল্পিত চক্রান্ত- যেখানে সংবিধানে স্বীকৃত এবং ধ্রুপদী ভাষার মধ্যে অন্যতম একটি ভাষাকে পরিচয়হীন করে দেওয়া হচ্ছে এবং কোটি কোটি বাংলা ভাষাভাষী ভারতবাসীকে নিজেদের দেশেই বহিরাগত হিসেবে তুলে ধরার অপচেষ্টা চলছে।”

তৃণমূলের বক্তব্য, “বাংলা ভাষায় সারা বিশ্বে ২৫ কোটিরও বেশি মানুষ কথা বলেন। এটি ভারতের ২২টি সরকারি ভাষার মধ্যে একটি। সেই ভাষাকে ‘বাংলাদেশি’ বলা কেবলই একটা ঘৃণ্য অপমান নয়— তা হলো ভাষাটিকে ভারতীয় পরিচয় থেকে মুছে দেওয়ার, তার বৈধতা খারিজ করার এবং বাংলাভাষী মানুষদের বহিরাগত প্রমাণ করার নির্লজ্জ চেষ্টা।”

ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় নিঃশর্ত ক্ষমা, অবিলম্বে সংশোধন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।

মমতার বক্তব্য, “বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং স্বামী বিবেকানন্দের ভাষা। যে ভাষায় আমাদের জাতীয় সঙ্গীত রচিত, যে ভাষায় কোটি কোটি ভারতীয় কথা বলেন এবং লেখেন, যে ভাষা ভারতের সংবিধান দ্বারা পবিত্র এবং স্বীকৃত, তাকে এখন বাংলাদেশি ভাষা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে! এটা কলঙ্কজনক, অপমানজনক, দেশবিরোধী, অসাংবিধানিক! এই ঘটনা ভারতের সকল বাংলাভাষী মানুষের কাছে অপমানজনক। যারা ভারতের বাংলাভাষী জনগণকে অপমান করার জন্য এই ধরনের সংবিধান-বিরোধী ভাষা ব্যবহার করছে- ভারতের সেই বাঙালি-বিরোধী সরকারের বিরুদ্ধে আমরা অবিলম্বে তীব্রতম প্রতিবাদের আহ্বান জানাই।”

জনপ্রিয় সংবাদ

৪ আগষ্ট স্মরণে পালিত হয়েছে রক্তাক্ত মুন্সিগঞ্জ দিবস

দিল্লির পুলিশ বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলায় ক্ষুব্ধ মমতা

আপডেট সময় ০১:৫৬:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫

ভারতের দিল্লি পুলিশের একটি চিঠিতে বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ হিসেবে উল্লেখ করায় ব্যাপক চটেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও টুইট করে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।

পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে দিল্লি পুলিশকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি অভিযুক্ত অফিসারদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

জানা গেছে, দিল্লিতে অবস্থিত বঙ্গভবনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে উদ্দেশ্য করে দিল্লি পুলিশের অধীন লোধি কলোনী পুলিশ থানার তরফে পাঠানো ওই চিঠিটিতে লেখা হয়েছে, “বাংলাদেশি সন্দেহে আটকৃত ব্যক্তিদের কাছে থেকে বাজেয়াপ্ত নথি, তথ্য বাংলাদেশি ভাষায় রয়েছে। সেটিকে যাচাই করতে ইংরেজি ও হিন্দিতে অনুবাদ করার জন্য অনুবাদক প্রয়োজন।”

রবিবার (৩ আগস্ট) তৃণমুল কংগ্রেসের এক্স হ্যান্ডেলে ওই সরকারি চিঠিটি পোস্ট করে তার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। দলের তরফে বলা হয়েছে, “বিজেপি বাংলা বিদ্বেষের সকল সীমা পার করে ফেলছে। বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলোতে একের পর এক বাংলাভাষী শ্রমিকদের হেনস্থা ও গ্রেপ্তারের পর, এবার অমিত শাহের দিল্লির পুলিশ সব সীমা অতিক্রম করে আমাদের মাতৃভাষা বাংলাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে দাগিয়ে দিল।”

তৃণমূলের দাবি, “এটা কোনো ভুল নয়- এটি একটি ইচ্ছাকৃত অপমান, পরিকল্পিত চক্রান্ত- যেখানে সংবিধানে স্বীকৃত এবং ধ্রুপদী ভাষার মধ্যে অন্যতম একটি ভাষাকে পরিচয়হীন করে দেওয়া হচ্ছে এবং কোটি কোটি বাংলা ভাষাভাষী ভারতবাসীকে নিজেদের দেশেই বহিরাগত হিসেবে তুলে ধরার অপচেষ্টা চলছে।”

তৃণমূলের বক্তব্য, “বাংলা ভাষায় সারা বিশ্বে ২৫ কোটিরও বেশি মানুষ কথা বলেন। এটি ভারতের ২২টি সরকারি ভাষার মধ্যে একটি। সেই ভাষাকে ‘বাংলাদেশি’ বলা কেবলই একটা ঘৃণ্য অপমান নয়— তা হলো ভাষাটিকে ভারতীয় পরিচয় থেকে মুছে দেওয়ার, তার বৈধতা খারিজ করার এবং বাংলাভাষী মানুষদের বহিরাগত প্রমাণ করার নির্লজ্জ চেষ্টা।”

ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় নিঃশর্ত ক্ষমা, অবিলম্বে সংশোধন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।

মমতার বক্তব্য, “বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং স্বামী বিবেকানন্দের ভাষা। যে ভাষায় আমাদের জাতীয় সঙ্গীত রচিত, যে ভাষায় কোটি কোটি ভারতীয় কথা বলেন এবং লেখেন, যে ভাষা ভারতের সংবিধান দ্বারা পবিত্র এবং স্বীকৃত, তাকে এখন বাংলাদেশি ভাষা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে! এটা কলঙ্কজনক, অপমানজনক, দেশবিরোধী, অসাংবিধানিক! এই ঘটনা ভারতের সকল বাংলাভাষী মানুষের কাছে অপমানজনক। যারা ভারতের বাংলাভাষী জনগণকে অপমান করার জন্য এই ধরনের সংবিধান-বিরোধী ভাষা ব্যবহার করছে- ভারতের সেই বাঙালি-বিরোধী সরকারের বিরুদ্ধে আমরা অবিলম্বে তীব্রতম প্রতিবাদের আহ্বান জানাই।”