শুধু আওয়ামী লীগ পালায়নি, তাদের ফ্যাসিবাদী সিস্টেমও পালিয়েছে— এমন মন্তব্য করেছেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ও বিশিষ্ট সাংবাদিক ড. মাহমুদুর রহমান।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠায় বিচার বিভাগ ছিল প্রধান হাতিয়ার। সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণকেই এই শাসনব্যবস্থায় জনশত্রু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল, যা ইতিহাসে বিরল।”
রবিবার মুন্সীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী সরকারি হরগঙ্গা কলেজের অডিটোরিয়ামে ‘শাপলা থেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মাহমুদুর রহমান অভিযোগ করেন, “২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ও ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরে মানুষ হত্যা করে জনশত্রু নির্মাণের বয়ান প্রতিষ্ঠা করা হয়। শুরুতে জামায়াত-শিবির কর্মী, পরে হেফাজতের অনুসারীদের ‘যুদ্ধাপরাধী’, ‘জঙ্গি’, ও ‘মৌলবাদী’ আখ্যা দিয়ে দমন-পীড়ন বৈধতা দেওয়া হয়।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদ ছিল বিচারে বৈধতা দেওয়া শাসনব্যবস্থা। শহীদ জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলা যাবে না— এমন রায় এসেছে আদালত থেকেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল, খালেদা জিয়াকে বাসা থেকে উচ্ছেদ, এসবই করা হয়েছে বিচার বিভাগের সহায়তায়।”
তিনি রোজ গার্ডেন ভবনের প্রসঙ্গে বলেন, “৩৩১ কোটি টাকা দিয়ে কেনা ভবন ১ টাকায় আওয়ামী লীগের কাছে লিজ দেওয়া হয়েছে। এটি সরাসরি জনগণের অর্থ লোপাটের একটি দৃষ্টান্ত।”
অবৈধ সম্পদ ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে অস্থায়ী সরকারের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, “গত এক বছরে শর্ট টার্ম লোন শোধ করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভারসাম্য আংশিকভাবে ফিরেছে, যা দুর্নীতিবিহীন প্রশাসনেরই প্রমাণ।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন সরকারি হরগঙ্গা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক নাজমুন নাহার। আলোচনায় অংশ নেন লেখক ও শিক্ষক সফিক ইসলাম, চিন্তাবিদ জগলুল আসাদ, অধ্যাপক আব্দুল মান্নান প্রধান এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত শিক্ষার্থী মো. ইউনুছ। আলোচনা সভার আগে ড. মাহমুদুর রহমান কলেজ প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণ করেন।