ঢাকা ০৭:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo নাহিদ ইসলাম কে ফেসবুক চ্যালেঞ্জ দিয়ে যা বললেন সাদিক কায়েম Logo সচিবকে তুলে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে তালা দিলেন বিএনপি নেতা, আটক ৬ Logo জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা Logo সাদিক কায়েমের কোনো অসততার অভিযোগ নেই এখনো পর্যন্ত Logo রংপুরে জমি বন্ধকের টাকার জেরে নিহত যুবক Logo সেনাবাহিনী নিয়োগ ২০২৫ সার্কুলার,কাল থেকে অনলাইনে আবেদন শুরু Logo ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে কানাডার Logo দুপুরের মধ্যে যেসব জেলায় ঝড়বৃষ্টি হতে পারে Logo কুষ্টিয়ায় পুলিশের অভিযানে কালু বাহিনীর সদস্য মুকুল গ্রেফতার Logo ৩১ জুলাই ২০২৪। ‘মার্চ ফর জাস্টিস’: শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল সারা দেশ

‎বাগেরহাটে আসন কমানোর প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ জেলাবাসী, করেছে বিক্ষোভ ‎

‎আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি কমানোর প্রাথমিক প্রস্তাব দিয়েছে নির্বাচন কমিশনের বিশেষায়িত কারিগরি কমিটি। বুধবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। এই প্রস্তাবের পর বাগেরহাটের সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, সচেতন নাগরিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

‎সংবিধানের ১১৯-১২৪ ধারা অনুযায়ী জাতীয় সংসদের আসন সীমানা পুনর্নির্ধারণের অংশ হিসেবে এমন সিদ্ধান্ত এসেছে। বাগেরহাট-২ ও বাগেরহাট-৩ আসনের সীমানা নতুন করে নির্ধারণের সম্ভাবনার কথা জানানো হয়। নতুন বিন্যাসে বাগেরহাট-১ (চিতলমারী, ফকিরহাট, মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (বাগেরহাট সদর, কচুয়া ও রামপাল) এবং বাগেরহাট-৩ (মোংলা, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা)।

‎জনসংখ্যা ও ভৌগোলিক অবস্থানের যুক্তি ২০২২ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, বাগেরহাট জেলার আয়তন ৩,৯৫৯.১১ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা প্রায় ১৬ লাখ ১৩ হাজার। জনসংখ্যা ও ভৌগোলিক বিস্তৃতি বিবেচনায় এই জেলা এখনো চারটি আসন রাখার যোগ্য বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

‎বাগেরহাট চেম্বার অফ কমার্সের সাবেক সভাপতি শাহেদ আলী রবি বলেন , বাগেরহাট এমনিতেই অবহেলিত জেলা। তারপর যদি আরো একটি আসন কমে যায়, তাহলে আরো অবহেলিত হয়ে যাবে। এমনিতেই কোনো অবকাঠামো উন্নয়ন হয়নি, আবার যদি আসন চারটি থেকে একটি কমে যায়, তাহলে উন্নয়নে ব্যাঘাত ঘটবে। এটা নির্বাচন কমিশনের ভুল সিদ্ধান্ত।

‎বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার এটিএম আকরাম হোসেন তালিম বলেন, কিছু সময় আগে নির্বাচন কমিশন থেকে একটি খসড়া বিজ্ঞপ্তি আমরা দেখতে পেলাম। বাগেরহাট জেলা একটি বৃহত্তম জেলা, নয়টি উপজেলায় চারটি আসন নিয়ে গঠিত এই জেলা। ১৯৮৪ সাল থেকে এই জেলায় চারটি আসন নিয়ে গঠিত হয়। নির্বাচন কমিশন থেকে খসড়া প্রস্তাব দেখলাম, বাগেরহাটকে তিনটি আসনে রূপান্তরিত করেছে। এটি একটি নিন্দনীয় ব্যাপার, বাগেরহাটের জন্য একটি অপমানিত ব্যাপার। এটি একটি প্রাচীন শহর, এখানে দিন দিন আরো আসন বাড়ানো উচিত। সামনে সংসদ নির্বাচন আছে, এই নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য এগুলো করা হচ্ছে

‎বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির জেলা আমির মাওলানা রেজাউল করিম বলেন,বাগেরহাটে চারটি আসন থেকে একটি কমানোকে আমরা ষড়যন্ত্র মনে করছি। সুন্দরবন, ষাট গম্বুজের মতো বিশ্ব ঐতিহ্য যেখানে রয়েছে, সেই জায়গাটাকে দুর্বল করার জন্য একটি ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা এটাকে অন্যায় মনে করছি, আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সরকারকে এই সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসার দাবি জানাচ্ছি। এই দাবি না মানা হলে ভবিষ্যতে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।

‎এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে বাগেরহাট শহরে। বুধবার (৩০ জুলাই) রাত ১০ টায় বাগেরহাটের সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে পুরাতন বাজার থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে মিলিত হয়।

‎সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক খাদেম নিয়ামুল নাসির আলাপ, শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি সরদার লিয়াকাত আলী, অধ্যাপক হাদিউজ্জামান হিরো সহ নেতৃবৃন্দ।

‎সমাবেশের নেতৃবৃন্দ নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে চারটি আসন করার দাবি জানান। তারা বলেন নির্বাচন কমিশন চারটি আসন পুন:বহাল না করলে বাগেরহাট কে সকল জেলা থেকে বিচ্ছিন্ন করার ঘোষণা দেন।

‎সমাবেশ থেকে জানানো হয় বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় সর্বদলীয় সভা অনুষ্ঠিত হবে এবং সেখান থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

নাহিদ ইসলাম কে ফেসবুক চ্যালেঞ্জ দিয়ে যা বললেন সাদিক কায়েম

‎বাগেরহাটে আসন কমানোর প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ জেলাবাসী, করেছে বিক্ষোভ ‎

আপডেট সময় ১২:০৩:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

‎আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি কমানোর প্রাথমিক প্রস্তাব দিয়েছে নির্বাচন কমিশনের বিশেষায়িত কারিগরি কমিটি। বুধবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। এই প্রস্তাবের পর বাগেরহাটের সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, সচেতন নাগরিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

‎সংবিধানের ১১৯-১২৪ ধারা অনুযায়ী জাতীয় সংসদের আসন সীমানা পুনর্নির্ধারণের অংশ হিসেবে এমন সিদ্ধান্ত এসেছে। বাগেরহাট-২ ও বাগেরহাট-৩ আসনের সীমানা নতুন করে নির্ধারণের সম্ভাবনার কথা জানানো হয়। নতুন বিন্যাসে বাগেরহাট-১ (চিতলমারী, ফকিরহাট, মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (বাগেরহাট সদর, কচুয়া ও রামপাল) এবং বাগেরহাট-৩ (মোংলা, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা)।

‎জনসংখ্যা ও ভৌগোলিক অবস্থানের যুক্তি ২০২২ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, বাগেরহাট জেলার আয়তন ৩,৯৫৯.১১ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা প্রায় ১৬ লাখ ১৩ হাজার। জনসংখ্যা ও ভৌগোলিক বিস্তৃতি বিবেচনায় এই জেলা এখনো চারটি আসন রাখার যোগ্য বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

‎বাগেরহাট চেম্বার অফ কমার্সের সাবেক সভাপতি শাহেদ আলী রবি বলেন , বাগেরহাট এমনিতেই অবহেলিত জেলা। তারপর যদি আরো একটি আসন কমে যায়, তাহলে আরো অবহেলিত হয়ে যাবে। এমনিতেই কোনো অবকাঠামো উন্নয়ন হয়নি, আবার যদি আসন চারটি থেকে একটি কমে যায়, তাহলে উন্নয়নে ব্যাঘাত ঘটবে। এটা নির্বাচন কমিশনের ভুল সিদ্ধান্ত।

‎বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার এটিএম আকরাম হোসেন তালিম বলেন, কিছু সময় আগে নির্বাচন কমিশন থেকে একটি খসড়া বিজ্ঞপ্তি আমরা দেখতে পেলাম। বাগেরহাট জেলা একটি বৃহত্তম জেলা, নয়টি উপজেলায় চারটি আসন নিয়ে গঠিত এই জেলা। ১৯৮৪ সাল থেকে এই জেলায় চারটি আসন নিয়ে গঠিত হয়। নির্বাচন কমিশন থেকে খসড়া প্রস্তাব দেখলাম, বাগেরহাটকে তিনটি আসনে রূপান্তরিত করেছে। এটি একটি নিন্দনীয় ব্যাপার, বাগেরহাটের জন্য একটি অপমানিত ব্যাপার। এটি একটি প্রাচীন শহর, এখানে দিন দিন আরো আসন বাড়ানো উচিত। সামনে সংসদ নির্বাচন আছে, এই নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য এগুলো করা হচ্ছে

‎বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির জেলা আমির মাওলানা রেজাউল করিম বলেন,বাগেরহাটে চারটি আসন থেকে একটি কমানোকে আমরা ষড়যন্ত্র মনে করছি। সুন্দরবন, ষাট গম্বুজের মতো বিশ্ব ঐতিহ্য যেখানে রয়েছে, সেই জায়গাটাকে দুর্বল করার জন্য একটি ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা এটাকে অন্যায় মনে করছি, আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সরকারকে এই সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসার দাবি জানাচ্ছি। এই দাবি না মানা হলে ভবিষ্যতে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।

‎এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে বাগেরহাট শহরে। বুধবার (৩০ জুলাই) রাত ১০ টায় বাগেরহাটের সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে পুরাতন বাজার থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে মিলিত হয়।

‎সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক খাদেম নিয়ামুল নাসির আলাপ, শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি সরদার লিয়াকাত আলী, অধ্যাপক হাদিউজ্জামান হিরো সহ নেতৃবৃন্দ।

‎সমাবেশের নেতৃবৃন্দ নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে চারটি আসন করার দাবি জানান। তারা বলেন নির্বাচন কমিশন চারটি আসন পুন:বহাল না করলে বাগেরহাট কে সকল জেলা থেকে বিচ্ছিন্ন করার ঘোষণা দেন।

‎সমাবেশ থেকে জানানো হয় বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় সর্বদলীয় সভা অনুষ্ঠিত হবে এবং সেখান থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।