তিস্তা নদীর পানি আজ সকাল ৬টায় তার স্বাভাবিক বিপদসীমা ৫২.১৫ মিটার অতিক্রম করেছে, যা নীলফামারীর তিস্তাপাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে নতুন করে বন্যা আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। পানি বৃদ্ধির কারণে তাদের ফসল ও বাড়িঘর ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসন সতর্ক রয়েছে বলে জানিয়েছেন ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী।
ডালিয়া তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে গতকাল পর্যন্ত পানি বিপদসীমার ১৮ সেমি নিচে প্রবাহিত হলেও, আজ সকাল ৬টায় আকস্মিকভাবেই তা বিপদসীমার ওপরে প্রবাহিত হতে শুরু করে, যা স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে।
তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের মধ্যে শঙ্কা বাড়ছে। ডিমলা উপজেলার পূর্বখড়িবাড়ী গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক জানান,”কয়েকদিন ধরে পানি ওঠানামা করছে। আজ সন্ধ্যার পর থেকে পানি হু হু করে বাড়ছে। আমাদের আমন ধানের চারা সব তলিয়ে যাচ্ছে। খুব ভয়ে আছি, জানি না কী হবে!”
উপজেলার খালিশা চাপানী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের বাইশপুকুর চরের বাসিন্দা ফাতেমা বেগম বলেন,”আমরা প্রতি বছরই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হই। এবারও মনে হচ্ছে সেই একই পরিস্থিতি হবে। আমরা কোনো সাহায্যের আশা করি না, তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন চাই।”
তাদের এই দাবি তিস্তা পাড়ের লাখো মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান,”উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সকাল ৬টায় পানি বিপদসীমা ৫২.১৫ মিটার অতিক্রম করেছে। আমরা সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।”
তিনি আরও বলেন,”আমরা ইতোমধ্যে নদীতীরবর্তী এলাকার মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছি। প্রয়োজনে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং স্থানীয় প্রশাসনকে বন্যা মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। আশা করছি বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যাবে।”
তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমতাবস্থায়, স্থানীয়দের দুর্ভোগ কমাতে এবং দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের জন্য তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিষয়টি আবারও আলোচনায় এসেছে।