বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় অস্বাভাবিক জোয়ার ও নদীভাঙনের তীব্রতা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এতে উপজেলার বেশ কিছু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। নদীভাঙনের আশঙ্কায় অনেকে তাদের বসতবাড়ি ও দোকানপাট সরিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
শনিবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার টাংকির ঘাট ও চেয়ারম্যানঘাট এলাকায় নদীভাঙন মারাত্মক আকার ধারণ করে। এতে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি ভাঙনের কবলে পড়ে। এর আগে শুক্রবার সকাল থেকেই নিঝুম দ্বীপের প্রধান সড়কসহ নামার বাজার এলাকা প্লাবিত হয়। ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়ে চরম দুর্ভোগ নেমে আসে।
মেঘনা নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ারের ফলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ও চরএলাহী ইউনিয়নের কিছু অংশ, হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ এবং আরও কয়েকটি নিচু এলাকা পানির নিচে চলে যায়।
স্থানীয়রা জানায়, জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে পুকুরের মাছ, নষ্ট হয়েছে ফসলি জমি। বসতঘরে পানি ঢুকে হাজারো পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বিশেষ করে নিঝুম দ্বীপ জাতীয় উদ্যানের হরিণসহ বন্যপ্রাণীদের জীবনও হুমকির মুখে পড়েছে।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন জানান, সুখচর, সোনাদিয়া ও নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের বহু এলাকা এখনও পানির নিচে। কোথাও কোথাও পানি ২-৩ ফুট পর্যন্ত। সুখচরের একটি বেড়িবাঁধ ভেঙে ব্যাপক প্লাবনের সৃষ্টি হয়েছে। নদীভাঙনের আশঙ্কায় নলচিরা ও জেলে পাড়াগুলোর মানুষ ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন।
এদিকে, টানা বৃষ্টিপাতে নোয়াখালী সদর, কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট ও সুবর্ণচর উপজেলায়ও জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। জেলা শহর মাইজদীর বিভিন্ন এলাকাও পানির নিচে।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, পৌর এলাকার ড্রেন ও খাল পরিষ্কার না থাকার কারণে পানি দ্রুত নামতে পারছে না, ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
জেলা আবহাওয়া কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে দমকা হাওয়া ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে ৫১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, সমুদ্র এখন উত্তাল রয়েছে। মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি থাকতে বলা হয়েছে।