এক সময়ের প্রভাবশালী প্রতিমন্ত্রী ও তিনবারের এমপি জুনায়েদ আহমেদ পলক ছিলেন শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের একজন। যিনি সিদ্ধান্তের কেন্দ্রে ছিলেন, আলোচনার শীর্ষে ছিলেন। সেই পলকই আজ আদালতের প্রিজনভ্যানে দাঁড়িয়ে কাঁদলেন।
পরে শুনানি শেষে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে প্রিজনভ্যানে তুলে তাকে ফেরত পাঠানো হয় কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। এ সময় তার মাথায় ছিল পুলিশের হেলমেট, বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, দুই হাতে হাতকড়া। তবে প্রিজনভ্যানে ওঠানোর পর খুলে দেয়া হয় হেলমেট ও হাতকড়া। এ সময় পলকের কাছাকাছি চলে আসেন কিছু মানুষ। তারা পলকের এলাকার (নাটোর) লোক বলে জানা যায়।
এই লোকদের দেখে পলক হাসতে থাকেন। কয়েকজন পলককে উদ্দেশ বলতে থাকেন, ‘আপনার জন্য দোয়া করি।’ তখন পলক তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমার জন্য দোয়া করবেন।’
এরপর দেখা যায়, প্রিজনভ্যানের ভেতরে দাঁড়িয়ে পলক তার মাথা উঁচু করে লোহার ফোকর দিয়ে লোকজনের উদ্দেশে বলতে থাকেন, ‘আমার জন্য দোয়া করবেন। সবাই সাবধানে থাইকেন।’
তখন একজন বলেন, ‘কোনো টেনশন কইরেন না, ভাই।’ এ কথা শোনার পর পলক কাঁদতে শুরু করেন। তখন সেই লোক বলতে থাকেন, ‘পলক ভাই, কাইন্দেন না।’ এ সময় আবেগাপ্লুত হয়ে অঝোরে কাঁদতে থাকেন পলক।
একপর্যায়ে সেখানে উপস্থিত হন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার একজন পুলিশ কর্মকর্তা। কিছুক্ষণ পরেই প্রিজনভ্যানটি কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের উদ্দেশে রওনা হয়। পলক প্রিজনভ্যানের ভেতরে চুপচাপ বসে থাকেন।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম জানান, ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা হয়েছে পলক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে। তদন্ত এখনো চলমান।
গত বছরের ১৫ আগস্ট গ্রেফতার হন পলক। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত ৭০টি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে তাকে। রিমান্ডে নেয়া হয়েছে মোট ৬২ দিন।