চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে ‘অতি দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা করাই একমাত্র পথ’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বুধবার দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী দলের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোকে ডেকেছিলেন, আমরা আলোচনা করেছি। আমরা পূর্বে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব—সেটাই তাঁকে আবার জানিয়েছি। একই সঙ্গে নির্বাচনপ্রক্রিয়া দ্রুত করার ওপর জোর দিয়েছি।’
ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি প্রধান উপদেষ্টা দিয়েছেন, সেটা তিনি বাস্তবায়ন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে স্পষ্ট ঘোষণা দেওয়া উচিত, যেন আর কোনো অস্পষ্টতা না থাকে। আমরা তাঁকে অনুরোধ করেছি, তিনি আশ্বাস দিয়েছেন ব্যবস্থা নেবেন। রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা চাই, দ্রুত নির্বাচন হোক এবং একটি রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা পাক। রাজনৈতিক সরকার না থাকলে যে সমস্যাগুলো আরও বৃদ্ধি পায়, সেটা তাঁকে (প্রধান উপদেষ্টাকে) বলেছি।’
মঙ্গলবার রাতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সংকট দেখা দিলে প্রধান উপদেষ্টা আমাদের ডাকেন, আমরা যাই। তবে আমি মনে করি, এটা ঘন ঘন হলে ভালো হতো, তাহলে হয়তো অনেক সমস্যা সৃষ্টি হতো না।’ তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে যারা সংগ্রাম করেছে, তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্যই প্রধান উপদেষ্টা আমাদের ডেকেছিলেন। আমরা তাঁকে বলেছি, সরকারের প্রতি আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’
ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ঐক্য অটুট আছে। মিডিয়ায় অনেক সময় রাজনীতিকদের মধ্যে কথার লড়াই দেখা যায়। এগুলো রাজনীতিরই অংশ। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে কথার ব্যবহার থাকবে। এটাই রাজনীতির সৌন্দর্য। গণতন্ত্র মানেই হচ্ছে শত ফুল ফুটতে দিতে হবে, সবার কথা বলার সুযোগ থাকতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সোমবার একটি বিমান দুর্ঘটনায় অনেক কচি প্রাণ ঝরে গেছে। ওই দুর্ঘটনার সূত্র ধরে মাইলস্টোন স্কুলে দুই উপদেষ্টা ও প্রেস সচিবকে শিক্ষার্থীরা অবরুদ্ধ করে রাখে এবং সচিবালয়ে পরীক্ষাসংক্রান্ত জটিলতায় শিক্ষার্থীরা ভেতরে ঢুকে পড়ে। এটা একটা প্রশাসনিক জটিলতা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়েছে, যা সবাই দেখেছেন। তিনি বলেন, ‘এর কয়েক দিন আগেই গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট শক্তি “রেইন অব টেরর” সৃষ্টি করেছিল।’
গোপালগঞ্জের সহিংসতা প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘ঘটনাটি রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত। এটি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের অংশ হতে পারে। সচিবালয়ে যারা প্রবেশ করেছিল, তাদের মধ্যে ফ্যাসিস্টদের লোক ছিল বলেই আমরা মনে করি। তবে জনগণ এসব চক্রান্ত প্রতিহত করবে—আমাদের এই বিশ্বাস রয়েছে।’
বিমান বিধ্বস্তের পর পদক্ষেপ যথাযথ ছিল?
উত্তরায় স্কুলের ওপর বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর সরকারের পদক্ষেপগুলো কি সঠিক ছিল?
এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কিছু কিছু জায়গায় হয়তো তাদের অভিজ্ঞতার কারণে কিছু ঘাটতি ছিল,এ সরকারের সবচেয়ে বড় সমস্যাটা কোথায় জানেন? তাদের অভিজ্ঞত,অনভিজ্ঞ লোকেরাই বেশি আছেন, তাঁদের অভিজ্ঞতার অভাব আছে। আর কিছু কিছু মানুষের মধ্যে একটা সমস্যা হচ্ছে যে ইগো কাজ করে। রাজনৈতিক দলগুলোর যে অভিজ্ঞতা আছে, বিশেষ করে যারা সরকারে ছিল যেমন আমরা,আমাদের সঙ্গে কথা বলা, পরামর্শ নেওয়া, মাঝেমধ্যে কথা বলা, এই বিষয়গুলোতে তারা (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) একটু পিছিয়ে।’
ঢাকা ভয়েস ২৪/হাবিবুল