বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের অতন্দ্র প্রহরী ইসলামী ছাত্রশিবির বলে মন্তব্য করেছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ছাত্র শিবির শুধু একটি ছাত্র সংগঠন নয়; এটি দেশের স্বাধীনতা ও স্বার্থ রক্ষায় দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিশীল।’
আজ বৃহস্পতিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের মাঠে শাখা ইসলামী ছাত্র শিবির কর্তৃক আয়োজিত নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি রূপক ব্যবহার করে বলেন, “বাংলাদেশ এখন জাহাজের মতো, চালানোর মতো ভালো নাবিক নেই। সুন্দর বাগান আছে, কিন্তু তা দেখাশোনার মতো মালি নেই। আমাদের দেশের নেতারা চিন্তা করে কিভাবে দোকান দখল করে চাদাবাজি করবে। কিভাবে বুড়িগঙ্গা নদীর আশপাশ দখল করবে। কিন্তু দেশ গঠনে কাজ করে না।
ছাত্র রাজনীতিকে গালাগালি থেকে গলাগলিতে রূপান্তরের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘ছাত্র রাজনীতি জাতির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব গঠনের ক্ষেত্র। গালি দিয়ে কিংবা প্রতিপক্ষকে হেয় করে নেতৃত্ব তৈরি হয় না। রাজনৈতিক মত ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু যদি কখনো মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত হয় বা ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ ওপর হুমকি আসে, তাহলে ছাত্র শিবির বসে থাকবে না। গোপালগঞ্জের ঘটনা প্রমাণ করে, বাংলাদেশে এখনো ফ্যাসিবাদের নির্মূল হয়নি।”
জাহিদুল ইসলাম বলেন, পৃথিবীর একটি অর্জন অন্য একটি অর্জনের পথ খুলে দেয়। কোনো অর্জনের পর অতি উৎসাহী না হয়ে পরবর্তী অর্জনের জন্য নতুন পরিকল্পনা করতে হবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমস্যা হল সমস্যা। পুরান ঢাকার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত, লাইব্রেরী সুবিধা এবং গবেষণার সুযোগ না থাকলেও এসব সমস্যাকে পার করে এগিয়ে যেতে হবে। জবি স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে। এটা একটি অন্যতম ইতিহাস।
তিনি আরও বলেন, আমরা যদি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দেখি সেখানে উদ্ভাবনী ক্ষমতাসম্পন্ন শিক্ষার্থী কম। বিশ্ববিদ্যালয় মানুষ তৈরির কারখানা হওয়া উচিত। কিন্তু এখানে তা হয় না। বুয়েটে আবরারকে যারা হত্যা করে, জবির বিশ্বজিৎ হত্যা করে, জাবিতে ধর্ষনে সেঞ্চুরি করে উদযাপন তাদেরকে মানুষ বলা যায় না। এই তরুণ সমাজকে নিয়ে সৎ, দেশপ্রেমিক ও দক্ষ হবে।
এদিন অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.মো রেজাউল করিম বলেন,আমরা সকল ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের কার্যক্রম সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের আগে শুরু করেছি।আমরা রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন চাই। ছাত্রশিবির আজকে যেই উদ্যোগ নিয়েছে অন্যান্য ছাত্রসংগঠনকে এরকম কার্যক্রম আয়োজনের আহ্বান জানাই।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শাখা শিবিরের সভাপতি মো. রিয়াজুল ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম আরিফ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন, ছাত্র হল প্রোভোস্ট-১ ও আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান সাদী উপস্থিত ছিলেন।
এসময় হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. মির্জা গালিব, জামায়াতে ইসলামীর পল্টন থানার আমীর ও শাখা ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি শাহীন ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ জামায়তে ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি দেলোয়ার হোসাইন সাইদিসহ সংগঠনটির কেন্দ্রীয় ও শাখা শিবিরের অন্যান্য নেতৃত্ব ও নবীন শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।