ঢাকা ০৩:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo পাবনার পুলিশ প্রশাসনের উপর অনাস্থা জানিয়ে বিক্ষুদ্ধ ছাত্রজনতার মানববন্ধন Logo লতিফ সিদ্দিকীর ও ঢাবি আইন বিভাগের অধ্যাপক ডিবি হেফাজতে Logo ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের ১০ দফা ইশতেহার ঘোষণা Logo খাগড়াছড়িতে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিলো ছাত্রশিবির Logo ৩ দফা দাবিতে আগারগাঁওয়ে শেকৃবি শিক্ষার্থীদের ব্লকেড, যান চলাচল বন্ধ Logo পাথরকাণ্ডে মিথ্যা অপবাদের প্রতিবাদে এবার রাজপথে নামছে সিলেট জামায়াত Logo প্রবাসী দুই ভাইয়ের স্ত্রীর সাথে পরকীয়া, দুই বন্ধুর মাথা ন্যাড়া করে পুলিশের হাতে সোপর্দ Logo শহিদ আবু সাঈদ হত্যার মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু Logo ‘তারেক রহমান দেশে ফিরলেই পাল্টে যাবে রাজনীতির দৃশ্যপট’-যুবদল সভাপতি Logo সুন্দরগঞ্জে বিএনপির ওয়ার্ড কমিটি গঠনে অনিয়ম, প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও ঝাড়ু মিছিল

বিনা সাজায় ৩০ বছর কারাগারে থাকা কনু মিয়ার মুক্তি

বিনা সাজায় ৩০ বছর কারাগারে থাকা কনু মিয়ার মুক্তি

হবিগঞ্জে হত্যা মামলায় বিচার হয়নি, সাজাও হয়নি। এরপরও কারাগারে কেটেছে ৩০ বছর ২ মাস ১৯ দিন। অবশেষে কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন মানসিক ভারসাম্যহীন কনু মিয়া।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুরে হবিগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে কনু মিয়াকে মুক্তি দেওয়া হয়। পরে তিনি স্বজনদের সঙ্গে বাড়ি ফেরেন। বাড়ি যাওয়ার আগে কনু মিয়া লিগ্যাল এইড অফিসার ও সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কারাগারের ফটকে অপেক্ষায় ছিলেন কনু মিয়ার দুই ভাই মনু মিয়া ও নাসু মিয়া। কারাগার থেকে বাইরে এসে ভাইয়ের মুখ দেখতে পেয়ে কনু মিয়া কিছুটা থমকে যান। এরপর ধীরে ধীরে এগিয়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরেন তাদের। আবেগঘন মুহূর্তে তাদের কেউই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।

হবিগঞ্জ জেলা কারাগারের ডেপুটি জেলার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‍“আদালতের জামিন আদেশ পেয়ে কনু মিয়াকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। মুক্তির পর তার ভাইয়েরা এসে তাকে বাড়িতে নিয়ে গেছেন। কনু মিয়া হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার সিংহগ্রাম গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম মৃত চিনি মিয়া।”

কনু মিয়ার বিরুদ্ধে ১৯৯৫ সালের ২৫ মে রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় কোদাল দিয়ে কুপিয়ে নিজের মাকে হত্যার অভিযোগ ওঠে। ঘটনার পরদিন তিনি মাত্র তিন লাইনের একটি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আদালতে। এরপরই শুরু হয় তার দীর্ঘ বন্দিজীবন। মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারণে হাইকোর্টের নির্দেশে মামলার বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত ছিল। ফলে বিচার ছাড়াই বছরের পর বছর কনু মিয়ার কেটে যায় কারাগারে। পরিবার থেকেও তিনি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। গ্রামের অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, কনু মিয়া আর বেঁচে নেই।

সাম্প্রতি বিষয়টি নজরে আনেন হবিগঞ্জ জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ মুহম্মাদ আব্বাছ উদ্দিন। তিনি মামলার বাদী মনু মিয়া ও তার ভাই নাসু মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের সহযোগিতায় জামিনের প্রক্রিয়া শুরু করেন।

গতকাল সোমবার (১৪ জুলাই) হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে লিগ্যাল এইডের প্যানেলভুক্ত আইনজীবী অ্যাডভোকেট এমএ মজিদ কনু মিয়ার হয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক জেসমিন আরা বেগম তা মঞ্জুর করেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

পাবনার পুলিশ প্রশাসনের উপর অনাস্থা জানিয়ে বিক্ষুদ্ধ ছাত্রজনতার মানববন্ধন

বিনা সাজায় ৩০ বছর কারাগারে থাকা কনু মিয়ার মুক্তি

আপডেট সময় ১০:৫৮:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

হবিগঞ্জে হত্যা মামলায় বিচার হয়নি, সাজাও হয়নি। এরপরও কারাগারে কেটেছে ৩০ বছর ২ মাস ১৯ দিন। অবশেষে কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন মানসিক ভারসাম্যহীন কনু মিয়া।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুরে হবিগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে কনু মিয়াকে মুক্তি দেওয়া হয়। পরে তিনি স্বজনদের সঙ্গে বাড়ি ফেরেন। বাড়ি যাওয়ার আগে কনু মিয়া লিগ্যাল এইড অফিসার ও সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কারাগারের ফটকে অপেক্ষায় ছিলেন কনু মিয়ার দুই ভাই মনু মিয়া ও নাসু মিয়া। কারাগার থেকে বাইরে এসে ভাইয়ের মুখ দেখতে পেয়ে কনু মিয়া কিছুটা থমকে যান। এরপর ধীরে ধীরে এগিয়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরেন তাদের। আবেগঘন মুহূর্তে তাদের কেউই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।

হবিগঞ্জ জেলা কারাগারের ডেপুটি জেলার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‍“আদালতের জামিন আদেশ পেয়ে কনু মিয়াকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। মুক্তির পর তার ভাইয়েরা এসে তাকে বাড়িতে নিয়ে গেছেন। কনু মিয়া হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার সিংহগ্রাম গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম মৃত চিনি মিয়া।”

কনু মিয়ার বিরুদ্ধে ১৯৯৫ সালের ২৫ মে রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় কোদাল দিয়ে কুপিয়ে নিজের মাকে হত্যার অভিযোগ ওঠে। ঘটনার পরদিন তিনি মাত্র তিন লাইনের একটি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আদালতে। এরপরই শুরু হয় তার দীর্ঘ বন্দিজীবন। মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারণে হাইকোর্টের নির্দেশে মামলার বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত ছিল। ফলে বিচার ছাড়াই বছরের পর বছর কনু মিয়ার কেটে যায় কারাগারে। পরিবার থেকেও তিনি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। গ্রামের অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, কনু মিয়া আর বেঁচে নেই।

সাম্প্রতি বিষয়টি নজরে আনেন হবিগঞ্জ জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ মুহম্মাদ আব্বাছ উদ্দিন। তিনি মামলার বাদী মনু মিয়া ও তার ভাই নাসু মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের সহযোগিতায় জামিনের প্রক্রিয়া শুরু করেন।

গতকাল সোমবার (১৪ জুলাই) হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে লিগ্যাল এইডের প্যানেলভুক্ত আইনজীবী অ্যাডভোকেট এমএ মজিদ কনু মিয়ার হয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক জেসমিন আরা বেগম তা মঞ্জুর করেন।