নাটোরের নলডাঙ্গায় চায়ের দোকানে বাগ্বিতণ্ডার জেরে গরম পানিতে শ্যালকের শরীর ঝলসে দেওয়ার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন স্থানীয় জনতা।
গতকাল শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) রাতে উপজেলার দুর্গম গ্রাম নুরিয়াগাছায় এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত সাকিব হোসেনকে (২০) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আটক ওসমান গণি নাটোর সদর উপজেলার বুড়িরবটতলা সংলগ্ন চন্দনপুর গ্রামের বাসিন্দা। ঘটনার সময় তাঁর সঙ্গে থাকা আরও দুজনকেও আটক করেছে পুলিশ। আহত সাকিব নলডাঙ্গা উপজেলার নুরিয়াগাছা গ্রামের আমজাদ শেখের ছেলে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দেড় বছর আগে ওসমান গণির সঙ্গে নুরিয়াগাছা গ্রামের আমজাদ শেখের মেয়ে পলি খাতুনের বিয়ে হয়। স্নাতকোত্তর করা পলি স্বামীর বাড়িতে যৌতুকের জন্য প্রায়ই নিগ্রহের শিকার হতেন বলে অভিযোগ পরিবারের। চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় পলি খাতুনকে বাবার বাড়ি পাঠানো হয়। দুই মাস আগে এক কন্যাসন্তান জন্ম নিলেও স্বামীর বাড়ির কেউ তাঁর পাশে দাঁড়াননি। দরিদ্র বাবা-ভাই তাঁর চিকিৎসা ও ভরণপোষণ করছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যায় হঠাৎ নুরিয়াগাছা গ্রামে হাজির হন ওসমান গণি। সঙ্গে নিয়ে আসেন তাঁর দুই বন্ধুকে। তাঁরা গ্রামের রাস্তার মোড়ের চা-দোকানে বসে ছিলেন। এ সময় শ্যালক সাকিব হোসেন তাঁর বোন-ভাগনিকে কেন নিয়ে যাওয়া হয় না জানতে চান। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে ওসমান গণি ও তাঁর বন্ধুরা চা-দোকানের কেটলির গরম পানি সাকিবের শরীরে ঢেলে দেন। এতে তাঁর সারা শরীর ঝলসে যায়।
আকস্মিক এই ঘটনায় স্থানীয় লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে ওসমান গণিসহ তিনজনকে আটক করেন। এ সময় ওসমান গণি ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেন তাঁকে উদ্ধার করার জন্য। স্থানীয় লোকজনও নলডাঙ্গা থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। গাড়িতে, নৌকায় করে ও হেঁটে রাত ১০টার দিকে পুলিশ গ্রামে পৌঁছায়। পরে আহত সাকিব ও আটক তিন ব্যক্তিকে নিয়ে পুলিশ নলডাঙ্গায় আসে। সেখান থেকে সাকিবকে পাঠানো হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম জানান, ঘটনাস্থলটি হালতি বিলের দুর্গম এলাকায়। তবু পুলিশ রাতেই সেখানে গিয়ে আহত তরুণকে উদ্ধার করেছে এবং আটক তিন যুবককে থানা হেফাজতে আনা হয়েছে। মামলা গ্রহণের পর তাঁদের আদালতে পাঠানো হবে।