যারা মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থার টুটি চেপে ধরতে চায় তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে বলে জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।
বুধবার (৯ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর আইডিইবি মিলনায়তনে ‘টেকসই উন্নয়নে আলিয়া মাদরাসা শিক্ষা ধারা: চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ মাদরাসা ছাত্রকল্যাণ পরিষদ এ সেমিনার আয়োজন করে।
উপদেষ্টা বলেন, মাদরাসা শিক্ষা একটি বিশেষায়িত শিক্ষাব্যবস্থা। এটিকে ধরে রাখতে হবে। অতি আধুনিকতার নামে এ শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের মুখে পতিত হতে দেওয়া যাবে না। এ শিক্ষাব্যবস্থার স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখতে হবে। মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থার অতীত ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হবে।
তিনি বলেন, আলিয়া মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থা যুগযুগ ধরে সমগ্র ভারত উপমহাদেশে ইসলামি জ্ঞানচর্চা, মূল্যবোধের বিকাশ ও ইসলামি চিন্তাধারা প্রসারে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে আসছে। কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলেও এ শিক্ষাব্যবস্থার অবদান বিশাল। কলকাতা আলিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেওবন্দ মাদরাসা প্রতিষ্ঠার পূর্বপর্যন্ত মধ্যবর্তী ৮৬ বছর আলিয়া মাদরাসা শিক্ষায় শিক্ষিত আলেম-ওলামারাই ভারতে জ্ঞানের মশাল জ্বেলেছিলেন। এখনো আলিয়া মাদরাসা থেকে শিক্ষা অর্জন করে অনেক আলেম-ওলামা সমাজের বিভিন্ন স্তরে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন।
তিনি হীনম্মন্যতাবোধ থেকে বের হয়ে আসতে সকলকে অনুরোধ জানান।
খালিদ হোসেন বলেন, মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থার টুটি যারা চেপে ধরতে চায় তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। ফ্যাসিবাদ যেন পুনরায় সৃষ্টি হতে পারে সেই বিষয়ে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি মাদরাসা শিক্ষার্থীদের হতাশাগ্রস্ত না হয়ে আশাবাদী হতে পরামর্শ দেন।
মাদরাসা শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে ড. খালিদ বলেন, বিগত ১৬ বছর মাদরাসা শিক্ষাকে অবদমিত করে রাখা হয়েছিল। সাধারণ কোনো বিষয়ে অনার্স চালু করার ক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ইতিবাচক, কিন্তু ইসলামিক স্টাডিজ, আরবি সাহিত্য, ইসলামের ইতিহাস প্রভৃতি বিষয়ের ক্ষেত্রে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল নেতিবাচক। এই ধারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলে দেওয়া হয়েছে। এখন মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থা উন্নত হবে।
বাংলাদেশ মাদরাসা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের উপদেষ্টা অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনুল আবেদীনের সভাপতিত্বে এ সেমিনারে প্রধান আলোচক ছিলেন ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শামসুল আলম। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ। সেমিনারে শতাধিক ইসলামি পণ্ডিত, আলেম-ওলামা ও মাদরাসা শিক্ষার্থী অংশ নেন।