১৯৯২, ১৯৯৯, ২০০৭, ২০১৫-এর সঙ্গে এবার যুক্ত হলো ২০২৩। আবারও সেমিফাইনালের গেরোতে আটকা দক্ষিণ আফ্রিকা। এবার ‘চোকারস’ তকমা থেকে নিজেদের মুক্ত করার প্রতিশ্রুতিতে টুর্নামেন্ট শুরু করলেও সেই শেষ চারেই কাটা পড়তে হলো প্রোটিয়াদের। খুব কাছে গিয়েও ফাইনালে ওঠা হলো না আবার।
দক্ষিণ আফ্রিকাকে বিষাদে পুড়িয়ে ভারতের সঙ্গী অস্ট্রেলিয়া। ডেভিড মিলারে লড়াকু শতকের পরেও বাকিদের ব্যর্থতায় ২১২ রানে গুটিয়ে যায় প্রোটিয়ারা। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে রান তাড়ায় নামা অজি ব্যাটারদের চেপে ধরেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা। তবে শেষ রক্ষা হলো না।
৩ উইকেটে হারতে হয় তাদের। ছোট লক্ষ্যেও পাঁচটি ক্যাচ ছাড়েন প্রোটিয়া ফিল্ডাররা। হাফ চান্স মিলিয়ে এমন আরো কয়েকটি সুযোগ তৈরি হয়েছিল। সেগুলো কাজে লাগাতে পারলে হয়তো প্রথমবার ফাইনালে যেতে পারত তারা।
লক্ষ্য টপকাতে নেমে ভালো শুরু পায় অস্ট্রেলিয়া। ট্রাভিস হেড ও ডেভিড ওয়ার্নার উদ্বোধনী জুটিতে তোলেন ৬০ রান। একপেশে সেমিফাইনাল হবে যাঁরা ভেবেছিলেন, তাঁদের ভাবনা বদলাতে হয় এরপর। ওয়ার্নার ২৯ রানে আউট হওয়ার পর কোনো রান না করে ফেরেন মিচেল মার্শ। তবে অন্য প্রান্তে ঠিক ব্যাট চালিয়ে খেলে ফিফটি তুলে নেন হেড।
৪০ বলে অর্ধশতক করে ফেরেন ৪৮ বলে ৬২ রানে। এরপর ধ্স নামে অস্ট্রেলিয়া দলে। ৩১ রান অজিদের আরো ৩ উইকেট তুলে খেলা জমিয়ে তোলে প্রোটিয়ারা। তবে ২৮ রানের ইনিংসে সেই চাপ কিছুটা আলগা করেন জশ ইংলিস। ২০০ ১৯৩ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর শেষ দিকে অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ও মিচেল স্টার্কের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে অস্ট্রেলিয়া। এই জয়ে ষষ্ঠ শিরোপার আরো কাছে অজিরা। আগামী ১৯ নভেম্বর আহমেদাবাদে ভারতের বিপক্ষে লড়াইয়ে হবে শিরোপার ফয়সালা।
এর আগে কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে টস জিতে অজি বোলারদের হাতে বল নয়, যেন যুদ্ধের মূল অস্ত্রটাই তুলে দেন তেম্বা বাভুমা। যার প্রথম শিকার তিনি নিজেই। আগুনে বোলিংয়ে শুরুতেই দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটারদের চেপে ধরেন মিচেল স্টার্ক ও জশ হ্যাজেলউড। ইনিংসের প্রথম ওভারে স্টার্কে ফেরান বাভুমাকে। ষষ্ঠ ওভারে কুইন্টন ডি কককে আউট করেন হ্যাজেলউড।
দুই বোলারের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে প্রোটিয়া ইনিংসের প্রথম বাউন্ডারি পায় নবম ওভারে। ১০ ওভারের পাওয়ার প্লেতে তোলে মোটে ১৮ রান। ওখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে গিয়ে উল্টো এইডেন মারক্রাম ও রসি ফন ডার ডুসেনের উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ২৪ রানে নেই ৪ উইকেট তাদের।
হেনরিক ক্লাসেনের সঙ্গে মিলারের ৯৫ রানের জুটি এই ধাক্কা কিছুটা কাটালেও লাভ হয়নি। ৩১তম ওভারে ৪৭ করা ক্লাসেনের সঙ্গে মার্কো ইয়েনসেনকে খালি হাতে ফেরান অনিয়মিত বোলার হেড।
শেষ দিকের ব্যাটারদের সঙ্গে ছোট ছোট জুটিতে নিজের রানের সঙ্গে দলের রান বাড়ানোর কাজ করেন মিলার। ১১৫ বলে শতক পূর্ণ করে কামিন্সের ঠিক পরের বলেই ফেরেন তিনি। ২১২ রানে গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। লড়াই জমলেও জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না এই রান। আবার সেমিফাইনালে স্বপ্নযাত্রা থামে প্রোটিয়াদের।