অবশেষে অপেক্ষার অবসান! মিয়ানমারের মাটিতে লাল-সবুজের কন্যারা লিখে ফেলেছে এক অনন্য গৌরবগাথা। ৭৩ ধাপে এগিয়ে থাকা প্রতিপক্ষ, অতীত পরিসংখ্যানে যারা অনেক এগিয়ে, সেই মিয়ানমারকে তাদেরই ঘরের মাঠে হারিয়ে এএফসি এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নেওয়ার স্বপ্ন এখন আরও স্পষ্ট বাংলাদেশের সামনে।
এ যেন এক প্রতিশোধের জয়। ২০১৭ সালে ইয়াঙ্গুনে অলিম্পিক বাছাইয়ে মিয়ানমারের মেয়েরা যখন বাংলাদেশের জালে পাঁচ-পাঁচটি গোল দিয়েছিল। তখনও হয়তো কেউ ভাবেনি এই একই শহরে কখনো এমন জয়গাথা লেখা হবে। আজ ঠিক তাই হয়েছে।
ঋতুপর্ণা চাকমা— এই একটি নামই যেন বদলে দিলো ম্যাচের চেহারা। দুই অর্ধে তার দুটি দুর্দান্ত গোল শুধু স্কোরলাইন বদলায়নি, বদলে দিয়েছে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস আর সামর্থ্যের সংজ্ঞাও।
ম্যাচের ১৮ মিনিটে তহুরা খাতুনকে ফাউল করার পর বাঁ দিকের কর্নার থেকে ফ্রি-কিক পায় বাংলাদেশ। ঋতুপর্ণার নেওয়া প্রথম শট মানবদেয়ালে আটকালেও ফিরতি বল থেকে বা পায়ের অনবদ্য শটে বল জড়িয়ে যায় পোস্টের কোণায়। যা গোলকিপার শুধুই দেখতে পারেন, ঠেকাতে নয়।
ম্যাচে আরও একবার ঋতুপর্ণার বানানো সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে ব্যবধান তখনই দ্বিগুণ হতে পারত। কিন্তু জুনিয়র শামসুন্নাহার ঠিকঠাক পৌঁছাতে পারেননি বলের কাছে। শেষমেশ সেই দ্বিগুণ ব্যবধান আসে ৭১ মিনিটে। বাঁ দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে ঋতুপর্ণা বাঁ পায়ের চোখজুড়ানো কোনাকুনি শটে করেন নিজের দ্বিতীয় এবং দলের দ্বিতীয় গোলটি। গোলটি যেন নিখুঁত এক শিল্পকর্ম। যেটা শুধু স্কোরবোর্ডে যোগ হয়নি, বসেছে দর্শকদের মনের আয়নায়।
৮৯ মিনিটে অবশ্য কিছুটা দুশ্চিন্তার ছায়া নেমে আসে। যখন মিয়ানমারের উইন উইন গোল করে ব্যবধান ২-১-এ নামিয়ে আনেন। কিন্তু এরপর বাংলাদেশ ডিফেন্স আর কোনো ভুল করেনি। শেষ বাঁশির সঙ্গে সঙ্গেই উদযাপনের বিস্ফোরণ, ঐতিহাসিক জয় নিশ্চিত!