ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় সংঘটিত গণহত্যা ও ছয়জনের লাশ পোড়ানোর মামলায় সাবেক সাইফুল ইসলামসহ ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে প্রিজন ভ্যানে করে গ্রেফতার পুলিশ কর্মকর্তা আবদুল্লাহ হিল কাফি ও শহিদুল ইসলামসহ আসামিদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এর আগে গত ১৯ জুন এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পায় প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগে সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ ১৬ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান ৫ জন। এছাড়াও একজন গুরুতর আহত হন। পরে ৫ জনের লাশ এবং আহত একজনকে পুলিশ ভ্যানে তুলে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়।
প্রসিকিউশন জানায়, এ ঘটনায় ১১ সেপ্টেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হয়। ট্রাইব্যুনালে এ মামলায় এখন ১১ জন আসামির নাম উল্লেখ করেছে প্রসিকিউশন।
আসামিরা হলেন- সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, সাভার সার্কেলের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শহিদুল ইসলাম, ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফি, আশুলিয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদ (রনি), ঢাকা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তরের সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন, আশুলিয়া থানার সাবেক উপ-পরিদর্শক আবদুল মালেক, সাবেক উপ-পরিদর্শক আরাফাত উদ্দীন, সাবেক উপপরিদর্শক শেখ আবজালুল হক, সাবেক উপ-পরিদর্শক বিশ্বজিৎ সাহা, সাবেক উপ-পরিদর্শক কামরুল হাসান ও সাবেক কনস্টেবল মুকুল চোকদার। এই ১১ জনের মধ্যে ৮ জন কারাগারে আছেন। এরমধ্যে বুধবার সাতজনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের ৫ আগস্ট বিকাল ৩টার দিকে আশুলিয়া থানার সামনে পাঁচজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এর বাইরে আরও একজন গুলিতে গুরুতর আহত হন। পরে একজনকে জীবিত ও পাঁচজনকে মৃত অবস্থায় প্রথমে একটি ভ্যানে তোলা হয়। এরপর সেখান থেকে পুলিশের একটি গাড়িতে তাদের তুলে পুলিশ। পরবর্তীতে পুলিশের গাড়িতে এই ছয়জনকে (যার মধ্যে একজন জীবিত) আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়।
ওই সময় যারা শহীদ হয়েছেন, তারা হলেন- সাজ্জাদ হোসেন (সজল), আস সাবুর, তানজীল মাহমুদ সুজয়, বায়েজিদ বুসতামি ও আবুল হোসেন। এছাড়া একজনের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি (অজ্ঞাত)।