ঢাকা ০১:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোয়াখালীতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হেলমেট পরা যুবকদের হামলা

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হেলমেট পরা যুবকেরা গণহারে হামলা-ভাঙচুর চালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সময় তারা উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও বসুরহাট পৌরসভা বিএনপির সভাপতির বাড়িসহ কমপক্ষে ১৫টি বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালান বলে দলটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।

বিএনপির নেতাদের দাবি, হামলাকারীরা সবাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারী। কাদের মির্জা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই।

হামলার শিকার বিএনপির নেতা-কর্মী ও বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনের অংশ হিসেবে হরতাল-অবরোধের মধ্যে কোম্পানীগঞ্জে দলীয়ভাবে বিএনপি তেমন কোনো কর্মসূচি পালন করেনি। এরপরও দলটির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে চারটি গায়েবি মামলা করা হয়েছে। এসব কারণে এমনিতেই দলটির নেতা-কর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারছেন না। গতকাল বুধবার সকাল সাতটার দিকে বিএনপির উদ্যোগে অবরোধের সমর্থনে উপজেলা সদরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিল করার পর থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা বিএনপির কর্মীদের হুমকি দিচ্ছিলেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বুধবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত কাদের মির্জার অনুসারী হেলমেট পরা ৪০-৫০ জন যুবক মোটরসাইকেল নিয়ে একে একে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা-ভাঙচুর চালান। তাঁদের হামলা ও ভাঙচুর থেকে রেহাই পায়নি যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা দুই ভাইয়ের বসতঘরও।

উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব মাহমুদুর রহমান বলেন, বুধবার সকালে তাঁরা অবরোধের পক্ষে মিছিল করার পর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জার অনুসারী হেলমেট পরা যুবকেরা বুধবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত তাঁর বাড়িসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের কমপক্ষে ১৫টি বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছেন। হামলা চালানো হয়েছে বসুরহাট পৌরসভা বিএনপির সভাপতি আবদুল মতিন, সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ফজলুল কবির, সদস্যসচিব জাহিদুর রহমান, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সালা উদ্দিন, সাবেক সহসভাপতি ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সৌরভ হোসেন, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক এমরান হোসেন ও সদস্যসচিব নুর উদ্দিনের বাড়িতে।

বিএনপির নেতা মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, হামলা-ভাঙচুরের বিষয়ে তাঁরা পুলিশকে জানানোর চেষ্টা করেছেন। পুলিশ তাঁদের ফোন ধরেনি। ফের হামলার ভয়ে কেউ থানায় অভিযোগ করার সাহস পাচ্ছেন না। এর ওপর তাঁরা শুনছেন, বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা নাকি নির্দেশ দিয়েছেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের খুঁজে না পাওয়া গেলে তাঁদের আত্মীয়স্বজনকে ধরে ধরে পুলিশে দেওয়ার জন্য। এ অবস্থায় কোম্পানীগঞ্জজুড়ে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং তাঁদের পরিবার ভীতিকর পরিবেশের মধ্যে রয়েছে।

বিএনপির নেতার অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য আবদুল কাদের মির্জাকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। তাই এ বিষয়ে দলীয় কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অপর দিকে একই বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল বলেন, তিনি নিজের এবং স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ঢাকায় অবস্থান করছেন। কারও বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুরের বিষয়ে তিনি জানেন না।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব চৌধুরী বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের কারও বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালানোর ঘটনা তিনি শোনেননি। ক্ষতিগ্রস্ত কেউ থানায় কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ইকুয়েডরকে ৭ গোল দিল আর্জেন্টিনা

নোয়াখালীতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হেলমেট পরা যুবকদের হামলা

আপডেট সময় ০৬:১৯:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৩

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হেলমেট পরা যুবকেরা গণহারে হামলা-ভাঙচুর চালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সময় তারা উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও বসুরহাট পৌরসভা বিএনপির সভাপতির বাড়িসহ কমপক্ষে ১৫টি বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালান বলে দলটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।

বিএনপির নেতাদের দাবি, হামলাকারীরা সবাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারী। কাদের মির্জা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই।

হামলার শিকার বিএনপির নেতা-কর্মী ও বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনের অংশ হিসেবে হরতাল-অবরোধের মধ্যে কোম্পানীগঞ্জে দলীয়ভাবে বিএনপি তেমন কোনো কর্মসূচি পালন করেনি। এরপরও দলটির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে চারটি গায়েবি মামলা করা হয়েছে। এসব কারণে এমনিতেই দলটির নেতা-কর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারছেন না। গতকাল বুধবার সকাল সাতটার দিকে বিএনপির উদ্যোগে অবরোধের সমর্থনে উপজেলা সদরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিল করার পর থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা বিএনপির কর্মীদের হুমকি দিচ্ছিলেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বুধবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত কাদের মির্জার অনুসারী হেলমেট পরা ৪০-৫০ জন যুবক মোটরসাইকেল নিয়ে একে একে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা-ভাঙচুর চালান। তাঁদের হামলা ও ভাঙচুর থেকে রেহাই পায়নি যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা দুই ভাইয়ের বসতঘরও।

উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব মাহমুদুর রহমান বলেন, বুধবার সকালে তাঁরা অবরোধের পক্ষে মিছিল করার পর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জার অনুসারী হেলমেট পরা যুবকেরা বুধবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত তাঁর বাড়িসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের কমপক্ষে ১৫টি বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছেন। হামলা চালানো হয়েছে বসুরহাট পৌরসভা বিএনপির সভাপতি আবদুল মতিন, সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ফজলুল কবির, সদস্যসচিব জাহিদুর রহমান, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সালা উদ্দিন, সাবেক সহসভাপতি ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সৌরভ হোসেন, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক এমরান হোসেন ও সদস্যসচিব নুর উদ্দিনের বাড়িতে।

বিএনপির নেতা মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, হামলা-ভাঙচুরের বিষয়ে তাঁরা পুলিশকে জানানোর চেষ্টা করেছেন। পুলিশ তাঁদের ফোন ধরেনি। ফের হামলার ভয়ে কেউ থানায় অভিযোগ করার সাহস পাচ্ছেন না। এর ওপর তাঁরা শুনছেন, বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা নাকি নির্দেশ দিয়েছেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের খুঁজে না পাওয়া গেলে তাঁদের আত্মীয়স্বজনকে ধরে ধরে পুলিশে দেওয়ার জন্য। এ অবস্থায় কোম্পানীগঞ্জজুড়ে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং তাঁদের পরিবার ভীতিকর পরিবেশের মধ্যে রয়েছে।

বিএনপির নেতার অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য আবদুল কাদের মির্জাকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। তাই এ বিষয়ে দলীয় কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অপর দিকে একই বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল বলেন, তিনি নিজের এবং স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ঢাকায় অবস্থান করছেন। কারও বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুরের বিষয়ে তিনি জানেন না।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব চৌধুরী বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের কারও বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালানোর ঘটনা তিনি শোনেননি। ক্ষতিগ্রস্ত কেউ থানায় কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।