রাজধানীর জুরাইন এলাকায় রাইদা পরিবহনের একটি বাসে ভাড়া নিয়ে বিরোধের জেরে চালকের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন কবি নজরুল সরকারি কলেজের এক শিক্ষার্থী। ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র জাহিদ হাসান বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার দিকে ধোলাইপাড় থেকে হাসনাবাদগামী রাইদা পরিবহনের একটি বাসে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান জানান, জুরাইন পর্যন্ত ভাড়া ১০ টাকা হলেও বাসচালক তার কাছে ২০ টাকা দাবি করেন। তিনি ১০ টাকা দিয়ে বাস থেকে নামার চেষ্টা করলে, এক পা রাস্তায় এবং অন্য পা বাসে থাকা অবস্থাতেই চালক হঠাৎ বাস চালিয়ে দেন। এতে তিনি রাস্তায় পড়ে যান। পরে উঠে গিয়ে চালকের কাছে এ নিয়ে জবাব চাইলে চালক উত্তেজিত হয়ে বাসের সামনের ভাঙা কাঁচ দিয়ে তার হাতে আঘাত করেন। এ সময় জাহিদের ডান হাতের রগ কেটে যায় এবং প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ শুরু হয়।
স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিকিৎসকরা জানান, আহত হাতের রগ জোড়া দিতে অপারেশন প্রয়োজন। চিকিৎসা খরচও বেশ ব্যয়বহুল। বর্তমানে জাহিদের রক্তক্ষরণ বন্ধ ও ক্ষতিগ্রস্ত রগ পুনঃস্থাপনের চিকিৎসা চলছে।
ঘটনার খবর কলেজ ক্যাম্পাসে পৌঁছালে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। জাহিদের সহপাঠী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়। তারা রাইদা পরিবহন কর্তৃপক্ষকে স্পষ্ট ভাষায় বলছেন, আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয় তারা বহন না করলে রাজধানীতে রাইদার কোনো বাস চলতে দেওয়া হবে না।
শিক্ষার্থীদের ভাষ্য অনুযায়ী, এই ঘটনার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। দোষী চালকের শাস্তি ও রাইদা পরিবহনের দায়িত্বশীল ভূমিকা না থাকলে তারা কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবেন।
ঘটনার বিষয়ে কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, আমি ঘটনাটি শুনেছি। যে পরিবহনের বাসে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে, শীঘ্রই তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জাহিদের পরিবার জানিয়েছে, তারা ঘটনার আইনি প্রতিকার চেয়ে থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে আপাতত সবচেয়ে জরুরি বিষয় হচ্ছে জাহিদের চিকিৎসার ব্যয় সংগ্রহ, যা তার পরিবার কিংবা সহপাঠীদের পক্ষে বহন করা অত্যন্ত কঠিন।