ঢাকা ১২:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo চাঁদাবাজদের বঙ্গোপসাগরে ছুঁড়ে ফেলব : মুহাম্মদ রেজাউল করীম Logo আজ জামায়াতের জাতীয় সমাবেশ, রাজধানীতে নেতাকর্মীদের ঢল Logo আইনশৃঙ্খলার অবনতি, অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত Logo টিভিতে আজকের খেলা Logo ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ কাঠামোয় সাত কলেজে ভর্তি কার্যক্রম শুরুর অনুমোদন Logo এ মাসে জুলাই সনদ না হলে দায় সরকার আর ঐকমত্য কমিশনের: সালাহউদ্দিন Logo মুন্সীগঞ্জে এনসিপির পথসভা: “নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঐক্যবদ্ধ লড়াই অব্যাহত থাকবে” Logo সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আব্দুল আজিজ, সেক্রেটারি শোয়াইব Logo পাবনায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে  জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে প্রতীকী ম্যারাথন Logo ‘যতদিন বাংলাদেশের নাম থাকবে, ততদিন উচ্চারিত হবে জুলাই যোদ্ধাদের নাম’

বর্ষার সাথী ‘কদম ফুল’ গ্রামীণ সৌন্দর্যের অপরূপ নিদর্শন

কদম ফুল (বৈজ্ঞানিক নাম: Neolamarckia cadamba) একটি জনপ্রিয়, সুগন্ধি ও সৌন্দর্যবর্ধক ফুল, যা বিশেষভাবে বর্ষাকালে ফোটে। এটি বাংলাদেশ, ভারত, নেপালসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে বেশি দেখা যায়।
গাছের ধরণ: দ্রুতবর্ধনশীল এবং বড় আকৃতির বৃক্ষ।
ফুল ফোটার সময়: মূলত বর্ষাকালে (জুন থেকে আগস্ট)
গোলাকৃতি ও গুটি গুটি ছোট ছোট ফুল একত্রিত হয়ে একটি বলের মতো আকার ধারণ করে।
রঙ সাধারণত হালকা হলুদাভ, কখনো হালকা সাদা বা কমলা।
খুবই মিষ্টি ও মনোমুগ্ধকর ঘ্রাণ থাকে ফুলে।
কদমের পরিবেশগত উপকারিতা
কদম গাছ খুব দ্রুত বড় হয় এবং ছায়া দেয়। আয়ুর্বেদে কদম গাছের ছাল ও পাতা নানা রোগে ব্যবহার হয়।
জ্বর, বাত এবং চর্মরোগে ব্যবহার্য।
কাঠ নরম ও হালকা, তাই কাঠের বাক্স, আসবাবপত্র ও কাগজ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নজরুল ইসলামের কবিতায় কদম ফুলের উল্লেখ আছে। যেমন:
১. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর – “কদম গাছ” (আংশিক)

বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর, নদেয় এলো বান,
শিবঠাকুর ভিজছেন কিনা, দেন না তিনি জান।
কদম গাছে দোলে দোল,
দে দোল, দে দোল,
নাচে বঁধূ, ঝরে ফুল,
কে বলে সে পাগল?

এই কবিতায় বর্ষার সৌন্দর্য, কদম গাছের দোলা, আর গ্রামবাংলার এক নিখুঁত আবহ তুলে ধরেছেন রবীন্দ্রনাথ।
২. কাজী নজরুল ইসলাম – “কদম ফুল” (আংশিক)
মেঘ এসেছে ভেসে আকাশে,
বৃষ্টি ছুঁয়ে কদম হাসে।
দোলে দোলে শাখায় শাখায়,
যেন রাধা-রাঙা পাশে।
কদম-তলে কৃষ্ণ দাঁড়ায়,
বাঁশি বাজায় মন হরায়।
বর্ষার মাঝে প্রেমের গন্ধ,
ছড়ায় কদম ফুলে পাশে।

নজরুল এখানে বর্ষা, কদম ফুল ও কৃষ্ণ-রাধার প্রেমের রূপক ব্যবহার করেছেন, যা আমাদের সংস্কৃতিতে খুবই হৃদয়স্পর্শী।

জন্মস্থান দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া
ফুলের রং হালকা হলুদ / কমলা
উচ্চতা প্রায় ২০–৩০ মিটার পর্যন্ত হতে পারে জীবনকাল দীর্ঘজীবী বৃক্ষ।

কদম ফুল শুধু একটি ফুল নয়, এটি বর্ষার আগমনী বার্তা ও প্রকৃতির একটি অনন্য সৌন্দর্যের প্রতীক। এর ঘ্রাণ, রঙ ও সাহিত্যিক আবেদন একে একটি বিশেষ ফুলে পরিণত করেছে।

 

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

চাঁদাবাজদের বঙ্গোপসাগরে ছুঁড়ে ফেলব : মুহাম্মদ রেজাউল করীম

বর্ষার সাথী ‘কদম ফুল’ গ্রামীণ সৌন্দর্যের অপরূপ নিদর্শন

আপডেট সময় ০৮:২৫:১৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

কদম ফুল (বৈজ্ঞানিক নাম: Neolamarckia cadamba) একটি জনপ্রিয়, সুগন্ধি ও সৌন্দর্যবর্ধক ফুল, যা বিশেষভাবে বর্ষাকালে ফোটে। এটি বাংলাদেশ, ভারত, নেপালসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে বেশি দেখা যায়।
গাছের ধরণ: দ্রুতবর্ধনশীল এবং বড় আকৃতির বৃক্ষ।
ফুল ফোটার সময়: মূলত বর্ষাকালে (জুন থেকে আগস্ট)
গোলাকৃতি ও গুটি গুটি ছোট ছোট ফুল একত্রিত হয়ে একটি বলের মতো আকার ধারণ করে।
রঙ সাধারণত হালকা হলুদাভ, কখনো হালকা সাদা বা কমলা।
খুবই মিষ্টি ও মনোমুগ্ধকর ঘ্রাণ থাকে ফুলে।
কদমের পরিবেশগত উপকারিতা
কদম গাছ খুব দ্রুত বড় হয় এবং ছায়া দেয়। আয়ুর্বেদে কদম গাছের ছাল ও পাতা নানা রোগে ব্যবহার হয়।
জ্বর, বাত এবং চর্মরোগে ব্যবহার্য।
কাঠ নরম ও হালকা, তাই কাঠের বাক্স, আসবাবপত্র ও কাগজ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নজরুল ইসলামের কবিতায় কদম ফুলের উল্লেখ আছে। যেমন:
১. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর – “কদম গাছ” (আংশিক)

বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর, নদেয় এলো বান,
শিবঠাকুর ভিজছেন কিনা, দেন না তিনি জান।
কদম গাছে দোলে দোল,
দে দোল, দে দোল,
নাচে বঁধূ, ঝরে ফুল,
কে বলে সে পাগল?

এই কবিতায় বর্ষার সৌন্দর্য, কদম গাছের দোলা, আর গ্রামবাংলার এক নিখুঁত আবহ তুলে ধরেছেন রবীন্দ্রনাথ।
২. কাজী নজরুল ইসলাম – “কদম ফুল” (আংশিক)
মেঘ এসেছে ভেসে আকাশে,
বৃষ্টি ছুঁয়ে কদম হাসে।
দোলে দোলে শাখায় শাখায়,
যেন রাধা-রাঙা পাশে।
কদম-তলে কৃষ্ণ দাঁড়ায়,
বাঁশি বাজায় মন হরায়।
বর্ষার মাঝে প্রেমের গন্ধ,
ছড়ায় কদম ফুলে পাশে।

নজরুল এখানে বর্ষা, কদম ফুল ও কৃষ্ণ-রাধার প্রেমের রূপক ব্যবহার করেছেন, যা আমাদের সংস্কৃতিতে খুবই হৃদয়স্পর্শী।

জন্মস্থান দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া
ফুলের রং হালকা হলুদ / কমলা
উচ্চতা প্রায় ২০–৩০ মিটার পর্যন্ত হতে পারে জীবনকাল দীর্ঘজীবী বৃক্ষ।

কদম ফুল শুধু একটি ফুল নয়, এটি বর্ষার আগমনী বার্তা ও প্রকৃতির একটি অনন্য সৌন্দর্যের প্রতীক। এর ঘ্রাণ, রঙ ও সাহিত্যিক আবেদন একে একটি বিশেষ ফুলে পরিণত করেছে।