ঢাকা ০২:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo তা’মীরুল মিল্লাত টঙ্গীতে আলিম ২০২৫ পরীক্ষার্থীদের নিয়ে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত Logo দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে বেড়ে ২৭ বিলিয়ন ডলার Logo দ্য স্কলারস ফোরাম ঢাকা”-এর বৃত্তি কার্যক্রম ২০২৫ এর উদ্বোধন Logo জামায়াত আমিরের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতের বৈঠক Logo সাবেক সিইসিকে হেনস্তা: স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা কারাগারে Logo ‘আগে বলতাম আওয়ামী লীগ জুলুম করে, এখন একই কাজ বিএনপি করছে’ Logo ‘শহীদ আবু সাঈদের আত্মত্যাগই ফ্যাসীবাদের ভিত নড়িয়ে দিয়েছিলো’ Logo রাজধানীতে ডেঙ্গু ও করোনা প্রতিরোধ জন-সচেতনতা শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত Logo ২৯৬ আসনে জামায়াতের প্রার্থী চূড়ান্ত, দেখুন তালিকা Logo গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২১ জনের করোনা শনাক্ত

‘শহীদ আবু সাঈদের আত্মত্যাগই ফ্যাসীবাদের ভিত নড়িয়ে দিয়েছিলো’

‘শহীদ আবু সাঈদের আত্মত্যাগই ফ্যাসীবাদের ভিত নড়িয়ে দিয়েছিলো’

দেশে আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সকল প্রকার অশান্তিমুক্ত করে দেশকে ক্ষুধা, দারিদ্রমুক্ত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

জামায়াত আমির বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলের মাধ্যমে আল্লাহ তা’য়ালা আমাদেরকে মাফিয়াতন্ত্রীদের অপশাসন-দুঃশাসন থেকে মুক্তি দিয়েছেন। এক্ষেত্রে আমাদের যুব সমাজ রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন। শহীদ আবু সাঈদ ‘বুকের ভেতর তুমুল ঝড়/বুক পেতেছি গুলি কর’ বলে বন্দুকের নলের মুখে বুক পেতে দিয়ে আমাদের এ ঐতিহাসিক বিজয় নিশ্চিত করেছিলেন। তার এ আত্মত্যাগই মূলত স্বৈরাচারের ভিত নড়িয়ে দিয়েছে। মূলত, বাংলাদেশের ওপর আল্লাহ তা’য়ালার বিশেষ রহমত আছে। আল্লাহ আমাদেরকে অনেক বড় বড় বিপদ থেকে রক্ষা করেছেন। যার অন্যতম নজিরই হচ্ছে আমাদের আগস্ট বিপ্লব।

অর্জিত বিজয়কে অর্থবহ ও ফলপ্রসূ করতে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান তিনি।

আজ রাজধানীর মিরপুরে ঢাকা-১৫ সংসদীয় আসনের সাধারণ জনগণের সাথে মতবিনিময়েকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।

স্বৈরাচার আওয়ামী আমলের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘পতিত আওয়ামী ফ্যাসীবাদী আমলে পুরো দেশকে একটি জলন্ত অগ্নিগিরিতে পরিণত করা হয়েছিলো। আমি এ আসনে নিজে প্রার্থী হলেও এখানে আমার আসার সুযোগ ছিলো না। এমনকি এ আসনে আমাদের দায়িত্বশীলকে নির্বাচনের মাত্র তিন আগে উঠিয়ে নিয়ে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছিলো। নির্বাচনের এজেন্ট ও সহকর্মীদের রাস্তায় হাঁটতে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি বরং তাদেরকে উঠিয়ে নিয়ে কনসালট্রেশন সেন্টারে আটক করে শারীরিকভাবে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছিলো। দিনশেষে কাউকে কাউকে ছেড়ে দিলেও অন্যদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিলো। আর এভাবে কোন সভ্য সমাজ চলতে পারে না। মূলত, আগুনকে বেশিদিন ছাই চাপা দিয়ে রাখা যায় না। তাই সে আগুনের লেলিহান শিখায় স্বৈরাচারের তখতে তাউস খান খান হয়ে গেছে। তাদের পতন ঘটেছে লজ্জাজনকভাবে।

জামায়াত আমির বলেন, আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে বিরোধী দল ও ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে। এক্ষেত্রে তারা দেশের বরেণ্য আলেম-উলামাদের বিশেষভাবে টার্গেট করেছিলো। মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে কথিত রিমাণ্ডের নামে চালানো হয়েছিলো অবর্ণনীয় নির্যাতন। হাতে হ্যান্ডকাপ ও পায়ে ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে জেলে থেকে জেলে স্থানান্তর করে তাদেরকে বেইজ্জতি ও নাজেহাল করা হয়েছিলো। বিচারের নামে প্রহসন সহ নানাভাবে তাদেরকে শহীদও করা হয়েছে।

আল্লামা সাঈদী (রাহি.)-এর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, একজন হাসিখুশী ও প্রাণবন্ত মানুষকে হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে তার পরিবারের সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি চিকিৎসকরাও তার সাথে সাক্ষাৎ করতে পারেনি। এরমধ্যেই তার মৃত্যু হয়েছে। বাস্তবে কী হয়েছে আল্লাহ তা’য়ালাই ভালো জানেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দীর্ঘ অপশাসনে-দুঃশাসনে দেশ অপরাধ ও অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছিলো। হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, দুর্নীতি, দুঃশাসন, লুটপাট, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, গুপ্তহত্যা, গুম ও অপহরণ আমাদের দেশকে প্রায় অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলো। দেশে আইন বা সুশাসন বলে কিছুই ছিলো না। জনগণের অধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলেও রাষ্ট্রই জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়ে দেশকে একটি মাফিয়াতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলো। কিন্তু আল্লাহর বিশেষ রহমতে সে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে।

জামায়াত আমির বলেন, আগামী নির্বাচনে জনগণ আমাদেরকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে আমরা দেশকে দীর্ঘ অপশাসন- দুঃশাসনের দুষ্ট ক্ষত থেকে মুক্ত দেশকে ন্যায়-ইনসাফের ভিত্তিতে আধুনিক কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করবো-ইনশাআল্লাহ। সুখী, সমৃদ্ধ আধুনিক বাংলাদেশ গড়তে সকলকে জামায়াতের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

তা’মীরুল মিল্লাত টঙ্গীতে আলিম ২০২৫ পরীক্ষার্থীদের নিয়ে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত

‘শহীদ আবু সাঈদের আত্মত্যাগই ফ্যাসীবাদের ভিত নড়িয়ে দিয়েছিলো’

আপডেট সময় ০৮:৫৪:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

দেশে আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সকল প্রকার অশান্তিমুক্ত করে দেশকে ক্ষুধা, দারিদ্রমুক্ত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

জামায়াত আমির বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলের মাধ্যমে আল্লাহ তা’য়ালা আমাদেরকে মাফিয়াতন্ত্রীদের অপশাসন-দুঃশাসন থেকে মুক্তি দিয়েছেন। এক্ষেত্রে আমাদের যুব সমাজ রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন। শহীদ আবু সাঈদ ‘বুকের ভেতর তুমুল ঝড়/বুক পেতেছি গুলি কর’ বলে বন্দুকের নলের মুখে বুক পেতে দিয়ে আমাদের এ ঐতিহাসিক বিজয় নিশ্চিত করেছিলেন। তার এ আত্মত্যাগই মূলত স্বৈরাচারের ভিত নড়িয়ে দিয়েছে। মূলত, বাংলাদেশের ওপর আল্লাহ তা’য়ালার বিশেষ রহমত আছে। আল্লাহ আমাদেরকে অনেক বড় বড় বিপদ থেকে রক্ষা করেছেন। যার অন্যতম নজিরই হচ্ছে আমাদের আগস্ট বিপ্লব।

অর্জিত বিজয়কে অর্থবহ ও ফলপ্রসূ করতে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান তিনি।

আজ রাজধানীর মিরপুরে ঢাকা-১৫ সংসদীয় আসনের সাধারণ জনগণের সাথে মতবিনিময়েকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।

স্বৈরাচার আওয়ামী আমলের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘পতিত আওয়ামী ফ্যাসীবাদী আমলে পুরো দেশকে একটি জলন্ত অগ্নিগিরিতে পরিণত করা হয়েছিলো। আমি এ আসনে নিজে প্রার্থী হলেও এখানে আমার আসার সুযোগ ছিলো না। এমনকি এ আসনে আমাদের দায়িত্বশীলকে নির্বাচনের মাত্র তিন আগে উঠিয়ে নিয়ে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছিলো। নির্বাচনের এজেন্ট ও সহকর্মীদের রাস্তায় হাঁটতে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি বরং তাদেরকে উঠিয়ে নিয়ে কনসালট্রেশন সেন্টারে আটক করে শারীরিকভাবে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছিলো। দিনশেষে কাউকে কাউকে ছেড়ে দিলেও অন্যদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিলো। আর এভাবে কোন সভ্য সমাজ চলতে পারে না। মূলত, আগুনকে বেশিদিন ছাই চাপা দিয়ে রাখা যায় না। তাই সে আগুনের লেলিহান শিখায় স্বৈরাচারের তখতে তাউস খান খান হয়ে গেছে। তাদের পতন ঘটেছে লজ্জাজনকভাবে।

জামায়াত আমির বলেন, আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে বিরোধী দল ও ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে। এক্ষেত্রে তারা দেশের বরেণ্য আলেম-উলামাদের বিশেষভাবে টার্গেট করেছিলো। মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে কথিত রিমাণ্ডের নামে চালানো হয়েছিলো অবর্ণনীয় নির্যাতন। হাতে হ্যান্ডকাপ ও পায়ে ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে জেলে থেকে জেলে স্থানান্তর করে তাদেরকে বেইজ্জতি ও নাজেহাল করা হয়েছিলো। বিচারের নামে প্রহসন সহ নানাভাবে তাদেরকে শহীদও করা হয়েছে।

আল্লামা সাঈদী (রাহি.)-এর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, একজন হাসিখুশী ও প্রাণবন্ত মানুষকে হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে তার পরিবারের সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি চিকিৎসকরাও তার সাথে সাক্ষাৎ করতে পারেনি। এরমধ্যেই তার মৃত্যু হয়েছে। বাস্তবে কী হয়েছে আল্লাহ তা’য়ালাই ভালো জানেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দীর্ঘ অপশাসনে-দুঃশাসনে দেশ অপরাধ ও অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছিলো। হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, দুর্নীতি, দুঃশাসন, লুটপাট, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, গুপ্তহত্যা, গুম ও অপহরণ আমাদের দেশকে প্রায় অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলো। দেশে আইন বা সুশাসন বলে কিছুই ছিলো না। জনগণের অধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলেও রাষ্ট্রই জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়ে দেশকে একটি মাফিয়াতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলো। কিন্তু আল্লাহর বিশেষ রহমতে সে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে।

জামায়াত আমির বলেন, আগামী নির্বাচনে জনগণ আমাদেরকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে আমরা দেশকে দীর্ঘ অপশাসন- দুঃশাসনের দুষ্ট ক্ষত থেকে মুক্ত দেশকে ন্যায়-ইনসাফের ভিত্তিতে আধুনিক কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করবো-ইনশাআল্লাহ। সুখী, সমৃদ্ধ আধুনিক বাংলাদেশ গড়তে সকলকে জামায়াতের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।