আজ ২৩ জুন, ইতিহাসের এক বেদনাবিধুর দিন—‘পলাশী দিবস’। ১৭৫৭ সালের এই দিনে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পলাশীর প্রান্তরে সংঘটিত যুদ্ধ শুধু একটি সামরিক পরাজয় ছিল না; এটি ছিল বাঙালি জাতির রাজনৈতিক স্বাধীনতা হারানোর সূচনা, যা উপমহাদেশের দীর্ঘ ২০০ বছরের ঔপনিবেশিক শাসনের দ্বার উন্মোচন করে।
পলাশীর যুদ্ধ ছিল এক ষড়যন্ত্রমূলক যুদ্ধ। নবাবের বিশ্বস্ত সেনাপতিদের বিশ্বাসঘাতকতা, বিশেষত মীর জাফরের কুটকৌশলের মাধ্যমে ব্রিটিশদের হাতে পরাজিত হন সিরাজউদ্দৌলা। ইতিহাসবিদদের মতে, এই যুদ্ধে অস্ত্রের সংঘর্ষের চেয়ে ষড়যন্ত্রই ছিল মুখ্য।
জাতীয় জীবনে এই দিনটি স্মরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই দিনের পর থেকেই উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনের শেকড় গাঁথতে থাকে এবং ধীরে ধীরে বাঙালির রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে। সেই পেছনে ফেরা ইতিহাস আমাদের শিখিয়ে দেয়—জাতীয় ঐক্য, দেশপ্রেম ও বিশ্বাসঘাতকতার পরিণতি কেমন ভয়াবহ হতে পারে।
আজ পলাশী দিবসে দেশজুড়ে বিভিন্ন সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আলোচনা সভা, ইতিহাসভিত্তিক সেমিনার ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরা হচ্ছে নতুন প্রজন্মের সামনে।
পলাশী দিবস শুধুই অতীত স্মরণ নয়, এটি একটি বার্তা—স্বাধীনতা রক্ষায় বিভাজন নয়, ঐক্যই প্রধান শক্তি।