মোটরসাইকেলে চেপে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন শান্তা। কলেজে পৌঁছাতে হবে, একাদশ শ্রেণির শেষ পরীক্ষা। বাবার পেছনে বসে যাওয়ার সময় ওড়না বাতাসে উড়ছিল। সেটি খেয়াল করেননি। কিছু দূর যেতেই পেছনের চাকায় পেঁচিয়ে যায় ওড়না। ছিটকে পড়েন রাস্তায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে প্রাণ হারান তিনি।
আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায়। নিহত ইশরাত জাহান শান্তা (১৮) হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের মানবিক বিভাগের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর বাবা মো. আরিফ পল্লিচিকিৎসক। বাড়ি হাতিয়ার জাহাজমারা ইউনিয়নের নতুন সুখচর গ্রামে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বজনেরা জানান, রোববার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে কলেজে পরীক্ষায় অংশ নিতে বাবার মোটরসাইকেলে রওনা হন শান্তা। সোনাদিয়া ইউনিয়নের হিল্টন সড়কে পৌঁছাতেই ঘটে দুর্ঘটনা। চলন্ত মোটরসাইকেলের চাকায় শান্তার ওড়না পেঁচিয়ে যায়। তার একটি অংশ গলায় জড়িয়ে পড়ে। ঝাঁকুনিতে দুজনই ছিটকে পড়েন রাস্তায়। গুরুতর আহত হন বাবা-মেয়ে।
পথচারীরা তাঁদের উদ্ধার করে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক শান্তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে দ্রুত ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন।
স্বজনেরা তাঁকে স্পিডবোটে করে নলচিরা ঘাট থেকে চেয়ারম্যানঘাটে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চেয়ারম্যানঘাটে পৌঁছাতেই মারা যান শান্তা।
হাসপাতালের উপসহকারী কমিউনিটি চিকিৎসা কর্মকর্তা (স্যাকমো) মো. শামীম জানান, মোটরসাইকেল থেকে পড়ে কলেজছাত্রীর মাথায় গুরুতর জখম হয়। এ ছাড়া তাঁর ওড়না পেঁচিয়ে যাওয়ায় গলাতে ফাঁসের মতো চিহ্ন ছিল। হাসপাতালে আনার পরপরই তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
শান্তার চাচা মো. আশ্রাফ জানান, আশঙ্কাজনকভাবে তাঁকে ঢাকা নেওয়ার জন্য নদী পেরিয়ে চেয়ারম্যানঘাট পৌঁছালে শান্তার মৃত্যু হয়। পরে শান্তার মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। তিনি জানান, মেয়ের মৃত্যুতে তাঁর ভাই অনেকটা বাক্শক্তি হারিয়ে ফেলেছেন। তিনি সবার সঙ্গে অস্বাভাবিক আচরণ করছেন।
জানতে চাইলে হাতিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আজমল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ বিষয়টি থানায় অবহিত করেনি।