lদীর্ঘ আট বছর পর শ্রীলঙ্কাকে টেস্টে হারিয়ে দেওয়ার খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্ত, পঞ্চম দিনের খেলা নির্বিঘ্নে চললে ফল হয়ত বাংলাদেশের পক্ষেই আসত। তবে এদিন বৃষ্টির বাগড়ায় প্রায় তিন ঘণ্টারও বেশি সময় খেলা বন্ধ থাকায় অর্ধেক দিন বাকি থাকতেই নির্ধারিত হয়ে যায় ম্যাচের নিয়তি। শেষ পর্যন্ত জয়ের হাতছোঁয়া দূরত্বে থেকেও ড্র মেনে নিতে হলো বাংলাদেশকে।
ম্যাচ শেষের পর স্বাভাবিকভাবেই কিছু প্রশ্ন উঠতেই পারে। বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে লিড তিনশর কাছাকাছি না নিয়ে ২৫০ রানেই ইনিংস ঘোষণা করলে বোলাররা লঙ্কানদের অলআউট করার মতো যথেষ্ট সময় পেত কিনা। এছাড়া দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুর দিকে বাংলাদেশের ব্যাটাররা আরেকটু দ্রুত রান তুললে ফলাফল হয়ত ভিন্ন হতে পারত-এমনটা ভাবতেই পারেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
তবে যদি ড্র নিয়েও সন্তুষ্ট থাকেন, তাহলেও আপনাকে দোষ দেওয়া যায় না। কারণ দেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ ড্র এবং সবশেষ আরব আমিরাত এবং পাকিস্তানের সিরিজ হারের পর জাতীয় দল আত্মবিশ্বাসের তলানিতে অবস্থান করছিল। সেখান থেকে বিদেশের মাটিতে পাঁচ দিন দাপুটে ক্রিকেট খেলে ড্র করাকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই।
এই গল টেস্ট দিয়ে শুরু হয়েছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্র। তাতে বাংলাদেশের শুরুটা স্বপ্নের মতো না হলেও অন্তত পরিস্থিতির বিচারে উতরে যায়। টস জিতে ব্যাট করতে নামার পর থেকেই গলে ছড়ি ঘুরিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে মুশফিকুর রহিম (১৬৩) ও নাজমুল হোসেন শান্তর (১৪৮) জোড়া সেঞ্চুরি এবং লিটন দাসের (৯০) লড়াকু ব্যাটিংয়ে ৪৯৫ রানের বড় ভিত পায় বাংলাদেশ।
নিজেদের প্রথম ইনিংসে লঙ্কানরাও কম যায়নি। পাথুম নিসাঙ্কার (১৮৭) দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে এবং কামিন্দু মেন্ডিসের (৮৭) ব্যাটে ৪৮৫ রান পর্যন্ত পৌঁছায় তারা। ইনিংসে ৫ উইকেট শিকার করে তাদের বাংলাদেশের রান টপকে যাওয়ার আগেই থামান স্পিনার নাঈম হাসান।
১০ রানের লিড পাওয়া বাংলাদেশকে দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো শুরু এনে দেওয়ার চেষ্টা করেন ওপেনার সাদমান ইসলাম। তার ৭৬ রানের ইনিংসের সঙ্গে টানা দ্বিতীয় ইনিংস অধিনায়ক শান্তর (১২৫) সেঞ্চুরিতে বড় লিডের দেখা পায় বাংলাদেশ। জয়ের জন্য লঙ্কানদের ছুঁড়ে দেয় ২৯৬ রানের লক্ষ্য।
তবে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ৭২ রান তুলে ম্যাচের বাকি সময় পার করে দেয় স্বাগতিকরা। ২৩ রানে লঙ্কান টপ অর্ডারের ৩ ব্যাটারকে সাজঘরের পথ চিনিয়ে শেষবেলায় কিছুটা আশার সঞ্চার করেছিলেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। তবে শেষ পর্যন্ত ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের।