ঢাকা ১১:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাস্তায় পরে থাকা মরদেহ খাচ্ছে কুকুর, নেই দাফনের জায়গা

ফিলিস্তিনের গাজায় আল-শিফা হাসপাতালের উঠানে রাখা হচ্ছে মরদেহ, কুকুর খাচ্ছে সেসব লাশ। হাসপাতালের ভেতরে গণকবর দেয়া হয়েছে ১৭৯ জনকে। এরপরও ডজন খানেক মরদেহ পড়ে রয়েছে। এসব দাফনের আর জায়গা নেই। এর সঙ্গে প্রতিক্ষণে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন মরদেহ। হাসপাতালের মর্গও ভর্তি। বাধ্য হয়ে এবার মরদেহ রাখতে হচ্ছে হাসপাতালের উঠানে। সেখানে কুকুর সেসব খাচ্ছে। দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে এ ভয়াবহ পরিস্থিতির চিত্র উঠে এসেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বরাতে জানা গেছে, জায়গা অথবা সুযোগের অভাবে মরদেহ দাফন করতে না পারায় সেগুলোতে পচন ধরছে। এভাবে আরও কিছু দিন গেলে মরদেহ থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। এতে নতুন বিপর্যয় দেখা দেবে।

ডব্লিউএইচওর মুখপাত্র ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডমায়ার জানিয়েছেন, ‘হাসপাতালের আশপাশে মৃতদেহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। সেগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ করা যাচ্ছে না। কোথাও দাফনও করা যাচ্ছে না। এমনকি কোনো মর্গেও নেওয়া যাচ্ছে না।’

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুনির আল-বুর্শ নামের এক কর্মকর্তা সোমবার সকালে আলজাজিরাকে বলেছেন, রাস্তার কুকুররা আল-শিফা হাসপাতালের উঠানে বেসামরিক লোকদের মরদেহ খাচ্ছে। কারণ, বোমা হামলার মধ্যে মরদেহ কবর দেওয়া সম্ভব হয়নি।

একই হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান ডাক্তার আহমেদ মুখাল্লাতি বলেন, সুবিধার অভাবে বেশ কিছু শিশু ইতিমধ্যে মারা গেছে। জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ার ফলে শিশুদের মৃত্যু ঝুঁকি আরও বাড়ছে। লাশগুলো সব ধরনের ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য রোগের বড় উৎস হবে।

হাসপাতালের ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ)-এর প্রতিনিধিত্বকারী একজন সার্জন উদ্বেগ জানিয়ে বলেছেন, ‘পরিস্থিতি খুবই খারাপ। হাসপাতালটিতে ৬০০ জন রোগী এবং ৩৭ জন শিশু রয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ, পানি ও খাবার কিছুই নেই। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ভেন্টিলেটর না থাকলে মানুষ মারা যাবে।’

সেখানকার স্থানীয় এক সাংবাদিক বলেছেন, হাসপাতালের সর্বত্র পচা লাশের দুর্গন্ধ। হাসপাতালের এক সার্জন বলেছেন, এখনকার পরিস্থিতি অমানবিক। আমাদের বিদ্যুৎ নেই। পানি নেই। খাবার নেই।

উল্লেখ্য, ইসরায়েলি সেনারা ধারণা করছে বড় বড় হাসপাতালগুলোর পাশেই রয়েছে হামাসের সুড়ঙ্গ টানেলের নেটওয়ার্ক। সেই অযুহাতে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফা ঘিরে রেখেছে ইসরায়েলি সেনারা। হাসপাতালের প্রধান প্রধান গেটে ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান নিয়ে অবস্থান নিয়েছে নেতানিয়াহু বাহিনী। হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশ বা বাইরে বের হতে গেলেই ইসরায়েলি স্নাইপাররা গুলি ছুড়ছে। এতে হাসপাতালের ভেতরে অবরুদ্ধ অবস্থায় মৃত্যুর প্রহর গুণছেন আহতরা।

জনপ্রিয় সংবাদ

রাস্তায় পরে থাকা মরদেহ খাচ্ছে কুকুর, নেই দাফনের জায়গা

আপডেট সময় ০৭:৫০:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৩

ফিলিস্তিনের গাজায় আল-শিফা হাসপাতালের উঠানে রাখা হচ্ছে মরদেহ, কুকুর খাচ্ছে সেসব লাশ। হাসপাতালের ভেতরে গণকবর দেয়া হয়েছে ১৭৯ জনকে। এরপরও ডজন খানেক মরদেহ পড়ে রয়েছে। এসব দাফনের আর জায়গা নেই। এর সঙ্গে প্রতিক্ষণে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন মরদেহ। হাসপাতালের মর্গও ভর্তি। বাধ্য হয়ে এবার মরদেহ রাখতে হচ্ছে হাসপাতালের উঠানে। সেখানে কুকুর সেসব খাচ্ছে। দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে এ ভয়াবহ পরিস্থিতির চিত্র উঠে এসেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বরাতে জানা গেছে, জায়গা অথবা সুযোগের অভাবে মরদেহ দাফন করতে না পারায় সেগুলোতে পচন ধরছে। এভাবে আরও কিছু দিন গেলে মরদেহ থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। এতে নতুন বিপর্যয় দেখা দেবে।

ডব্লিউএইচওর মুখপাত্র ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডমায়ার জানিয়েছেন, ‘হাসপাতালের আশপাশে মৃতদেহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। সেগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ করা যাচ্ছে না। কোথাও দাফনও করা যাচ্ছে না। এমনকি কোনো মর্গেও নেওয়া যাচ্ছে না।’

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুনির আল-বুর্শ নামের এক কর্মকর্তা সোমবার সকালে আলজাজিরাকে বলেছেন, রাস্তার কুকুররা আল-শিফা হাসপাতালের উঠানে বেসামরিক লোকদের মরদেহ খাচ্ছে। কারণ, বোমা হামলার মধ্যে মরদেহ কবর দেওয়া সম্ভব হয়নি।

একই হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান ডাক্তার আহমেদ মুখাল্লাতি বলেন, সুবিধার অভাবে বেশ কিছু শিশু ইতিমধ্যে মারা গেছে। জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ার ফলে শিশুদের মৃত্যু ঝুঁকি আরও বাড়ছে। লাশগুলো সব ধরনের ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য রোগের বড় উৎস হবে।

হাসপাতালের ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ)-এর প্রতিনিধিত্বকারী একজন সার্জন উদ্বেগ জানিয়ে বলেছেন, ‘পরিস্থিতি খুবই খারাপ। হাসপাতালটিতে ৬০০ জন রোগী এবং ৩৭ জন শিশু রয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ, পানি ও খাবার কিছুই নেই। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ভেন্টিলেটর না থাকলে মানুষ মারা যাবে।’

সেখানকার স্থানীয় এক সাংবাদিক বলেছেন, হাসপাতালের সর্বত্র পচা লাশের দুর্গন্ধ। হাসপাতালের এক সার্জন বলেছেন, এখনকার পরিস্থিতি অমানবিক। আমাদের বিদ্যুৎ নেই। পানি নেই। খাবার নেই।

উল্লেখ্য, ইসরায়েলি সেনারা ধারণা করছে বড় বড় হাসপাতালগুলোর পাশেই রয়েছে হামাসের সুড়ঙ্গ টানেলের নেটওয়ার্ক। সেই অযুহাতে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফা ঘিরে রেখেছে ইসরায়েলি সেনারা। হাসপাতালের প্রধান প্রধান গেটে ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান নিয়ে অবস্থান নিয়েছে নেতানিয়াহু বাহিনী। হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশ বা বাইরে বের হতে গেলেই ইসরায়েলি স্নাইপাররা গুলি ছুড়ছে। এতে হাসপাতালের ভেতরে অবরুদ্ধ অবস্থায় মৃত্যুর প্রহর গুণছেন আহতরা।