ঢাকা ০৮:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo মানিকগঞ্জ -২ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী প্রকাশ Logo জনপ্রতিনিধিরা শাসক নয় হবে খাদেম: সেলিম উদ্দিন Logo ‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন বাহিনীতে ১৭ হাজার নতুন সদস্য নেওয়া হবে’ Logo নির্বাচনে সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে সব ভোটকেন্দ্র Logo সরকারি খরচে বিদেশ সফর বন্ধ, কেনা যাবে না গাড়ি Logo ইসলামপন্থীরা বিজয়ী হলে এক পয়সাও দুর্নীতি হবে না: শায়খে চরমোনাই Logo গাইবান্ধায় বিয়ে বাড়িতে মাংস কম দেওয়ায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, নিহত ১ Logo আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লা’ঠিচা’র্জে বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ২০ শিক্ষার্থী আ’হ’ত Logo বন্যা পরিস্থিতি খাগড়াছড়ি: পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত Logo কিংবদন্তি শিল্পী ফরিদা পারভীনকে দেখতে হাসপাতালে মির্জা ফখরুল

তালা ভেঙ্গে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব দখলের হুমকি বিএনপি নেতার!

মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের তালা ভেঙে দখলে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন মতিন বক্স নামের জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির এক সদস্য। ১৬ জুন রাতে জেলা শহরের একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জেলার জ্যেষ্ঠ গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে নানা কটূক্তি ও অবমাননাকর মন্তব্য করার পর তিনি এ হুমকি দেন। তার বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলাজুড়ে সাংবাদিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তার এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য ও আগ্রাসী আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন জেলা ও উপজেলার গণমাধ্যমকর্মীরা।

তারা বলছেন, তার বক্তব্য সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় নগ্ন হস্তক্ষেপের সামিল, যা স্বৈরাচারী শাসনামলের দুঃসহ স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জেলার ঐতিহ্যবাহী মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক কমিটির সদস্যরা ১৭ জুন সন্ধ্যায় ক্লাবের কনফারেন্স হলে জরুরি সভায় মিলিত হন। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে তার দায়িত্বহীন ও অশোভন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। একই সঙ্গে সকল গণমাধ্যমকর্মীকে ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানানো হয়।

ঘটনার পর মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক বকশী ইকবাল আহমদ মৌলভীবাজার সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর–৮৭৬) করেন। জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, ১৬ জুন রাত অনুমান ৯টার দিকে শহরের এম সাইফুর রহমান রোডের ওয়েস্টার্ন রেস্টুরেন্টে আয়োজিত এক ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মতিন বক্স (৫৫), পিতা–মৃত আনোয়ার বক্স, তার বক্তব্যে বলেন, ‘প্রেসক্লাবের তালা ভেঙে তা দখল নেবো এবং অন্যদের সেখানে বসাবো।’ এ সময় তিনি জেলা জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের নিয়েও নানা কটূক্তি করেন। পরবর্তীতে ওই বক্তব্য তিনি নিজ ফেসবুক আইডি ও অন্যদের মাধ্যমেও ভাইরাল করেন।

জিডিতে আরও উল্লেখ করা হয়, মতিন বক্সের এমন বক্তব্যের কারণে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে, তিনি কিংবা তার ইন্ধনে কেউ প্রেসক্লাবে অনধিকার প্রবেশ করে ক্ষতি সাধন করতে পারে বা সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালাতে পারে। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে তার নানা অপকর্ম নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর থেকেই তিনি জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তার ও তার অনুসারীদের ফেসবুক আইডি থেকে নানা ধরনের কুৎসা রটাতে থাকেন। এ ছাড়া তিনি প্রায়ই রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক, পুলিশ ও অন্যান্যদের নিয়ে তার সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়ান ও অপপ্রচার চালান।

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফয়জুল করিম ময়ুন ও সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন বলেন, বিএনপি কখনো স্বাধীন সাংবাদিকতায় হস্তক্ষেপ করে না। দীর্ঘদিন পর সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কাজ করার পরিবেশ পেয়েছেন। সেখানে দলীয় পরিচয়ে কেউ বাধা সৃষ্টি করলে তা দল সমর্থন করবে না। মতিন বক্সের বক্তব্য একান্তই তার ব্যক্তিগত, এর দায় দল নেবে না। বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি, দলীয় ফোরামে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গাজী মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে একটি জিডি করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

মানিকগঞ্জ -২ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী প্রকাশ

তালা ভেঙ্গে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব দখলের হুমকি বিএনপি নেতার!

আপডেট সময় ১২:২১:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫

মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের তালা ভেঙে দখলে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন মতিন বক্স নামের জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির এক সদস্য। ১৬ জুন রাতে জেলা শহরের একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জেলার জ্যেষ্ঠ গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে নানা কটূক্তি ও অবমাননাকর মন্তব্য করার পর তিনি এ হুমকি দেন। তার বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলাজুড়ে সাংবাদিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তার এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য ও আগ্রাসী আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন জেলা ও উপজেলার গণমাধ্যমকর্মীরা।

তারা বলছেন, তার বক্তব্য সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় নগ্ন হস্তক্ষেপের সামিল, যা স্বৈরাচারী শাসনামলের দুঃসহ স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জেলার ঐতিহ্যবাহী মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক কমিটির সদস্যরা ১৭ জুন সন্ধ্যায় ক্লাবের কনফারেন্স হলে জরুরি সভায় মিলিত হন। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে তার দায়িত্বহীন ও অশোভন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। একই সঙ্গে সকল গণমাধ্যমকর্মীকে ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানানো হয়।

ঘটনার পর মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক বকশী ইকবাল আহমদ মৌলভীবাজার সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর–৮৭৬) করেন। জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, ১৬ জুন রাত অনুমান ৯টার দিকে শহরের এম সাইফুর রহমান রোডের ওয়েস্টার্ন রেস্টুরেন্টে আয়োজিত এক ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মতিন বক্স (৫৫), পিতা–মৃত আনোয়ার বক্স, তার বক্তব্যে বলেন, ‘প্রেসক্লাবের তালা ভেঙে তা দখল নেবো এবং অন্যদের সেখানে বসাবো।’ এ সময় তিনি জেলা জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের নিয়েও নানা কটূক্তি করেন। পরবর্তীতে ওই বক্তব্য তিনি নিজ ফেসবুক আইডি ও অন্যদের মাধ্যমেও ভাইরাল করেন।

জিডিতে আরও উল্লেখ করা হয়, মতিন বক্সের এমন বক্তব্যের কারণে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে, তিনি কিংবা তার ইন্ধনে কেউ প্রেসক্লাবে অনধিকার প্রবেশ করে ক্ষতি সাধন করতে পারে বা সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালাতে পারে। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে তার নানা অপকর্ম নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর থেকেই তিনি জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তার ও তার অনুসারীদের ফেসবুক আইডি থেকে নানা ধরনের কুৎসা রটাতে থাকেন। এ ছাড়া তিনি প্রায়ই রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক, পুলিশ ও অন্যান্যদের নিয়ে তার সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়ান ও অপপ্রচার চালান।

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফয়জুল করিম ময়ুন ও সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন বলেন, বিএনপি কখনো স্বাধীন সাংবাদিকতায় হস্তক্ষেপ করে না। দীর্ঘদিন পর সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কাজ করার পরিবেশ পেয়েছেন। সেখানে দলীয় পরিচয়ে কেউ বাধা সৃষ্টি করলে তা দল সমর্থন করবে না। মতিন বক্সের বক্তব্য একান্তই তার ব্যক্তিগত, এর দায় দল নেবে না। বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি, দলীয় ফোরামে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গাজী মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে একটি জিডি করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।