ঢাকা ১১:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo আবু সাঈদ হত্যা মামলার দশম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ Logo চবি ছাত্রদলের নেতা মামুনকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করল কেন্দ্রীয় ছাত্রদল Logo নর্থসাউথ শিক্ষার্থীর কোরআন অবমাননার প্রতিবাদে হরগঙ্গায় কোরআন বিতরণ Logo দিনাজপুরে শিবিরকর্মী হত্যা মামলায় উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ ৫ জন কারাগারে Logo ঢাকায় আসছেন জাকির নায়েক Logo হাজার হাজার দেশপ্রেমিকের হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন হাসিনা: চিফ প্রসিকিউটর Logo ১৩টি ড্রেজারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ আ.লীগ-বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে Logo টিভিতে যে খেলা থাকছে আজ Logo মধ্যরাতে ঢাবি ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সং’ঘর্ষ Logo ১৭ বছর আন্দোলন করেছি বাসস্ট্যান্ড দখলের জন্য নয়: ইশরাক

চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ফের জনতার হাতে আটক যুবদল নেতা

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় আবারও আলোচনায় কথিত যুবদল নেতা শাহেদ। পারিবারিক বিরোধের মীমাংসার নামে স্থানীয় গোপালপুর বাজারে এক ব্যবসায়ীর পরিবারের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ করে।

বাজারজুড়ে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছেন জুয়েল মোল্লার ছেলে এই যুবক, যিনি নিজেকে গোপালপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি পরিচয় দিয়ে থাকেন। যদিও এর আগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলা যুবদলের সভাপতি জানিয়েছেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে কোনো তাদের কমিটিই নেই।

ঘটনার সূত্রপাত রোববার (১৫ জুন) রাত ১০টার দিকে। ফয়সাল নামের এক মুরগি ব্যবসায়ীর পারিবারিক বিরোধের জেরে শাহেদ ও তার প্রায় ১০ জন সহযোগী ফয়সালের দোকানে এসে তাকে বাইরে যেতে বলেন। সে দোকানেই অবস্থান করলে তাকে হুমকি দিয়ে বলেন, মীমাংসা না করলে ‘খবর আছে’।

পরদিন সোমবার (১৬ জুন) সকাল ১০টার দিকে আবারও দোকানে গিয়ে ফয়সালকে না পেয়ে তার বাবা মুল্লুক চান ওরফে মুন্নুর কাছে শাহেদ বলেন, ‘চাচা, কিছু টাকা দেন, সব ঠিক হয়ে যাবে, না হলে ঝামেলা হবে।’

বিকেলে শাহেদ আবার আসে, পরে টাকা না পেয়ে মুল্লুক চানকে ধাক্কা মেরে ক্যাশ বাক্স থেকে টাকা নিয়ে নেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবার। চিৎকার শুনে বাজারের লোকজন ছুটে এসে শাহেদকে আটক করে, তবে তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়।

এক পর্যায়ে ফয়সাল ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চাইলে, পুলিশের আগেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান আলফাডাঙ্গা পৌর যুবদলের সভাপতি মিজান ও তার লোকজন। পরে পুলিশ এলে মিজানের ‘ম্যানেজিং’ এ শাহেদকে ছাড়িয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

এ ঘটনার বিষয়ে কথা বলতে চাইলে ফয়সাল বলেন, ‘আমার পারিবারিক সমস্যাকে ঘিরে জোর করে টাকা দাবি করেছে। দোকানে না থাকায় বাবাকে হুমকি দিয়ে আমার বাবা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে ফেলে দিয়ে বাক্স থেকে টাকা নিয়েছে। আমরা থানায় জানিয়েছি কিন্তু প্রতিকার পাচ্ছি না।’

শুধু এই ঘটনাই নয়, এর আগে গত ৯ জুন কামারগ্রামের মুদি ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলামের দোকানে গিয়ে সিগারেট না থাকায় পিস্তল ঠেকিয়ে ২০ হাজার টাকা দাবি করে শাহেদ। পরে ড্রয়ার ভেঙে টাকা নিয়ে চলে যায়। ফয়সালের মতো রফিকুলও থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

পাশাপাশি ঈদের সময় বাড়ি বেড়াতে আসা এক গার্মেন্টস কর্মী কাওসার খানকেও রাস্তা আটকে মারধরের অভিযোগ রয়েছে শাহেদের বিরুদ্ধে।

বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, কাপড় ব্যবসায়ী জয়, কাঁচামালের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর খান এবং টিটিসি মোড়ের কাবুলের দোকানেও একই ধরণের হুমকি-চাঁদাবাজি চালিয়েছে শাহেদ। তারা বলেন, অন্য ব্যাবসায়ীরা থানায় অভিযোগ করেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে এমন হুমকি-চাঁদাবাজির ঘটনায় আতঙ্কে আগেভাগেই দোকান বন্ধ করতে হয়। অভিযোগ করার পরেও পুলিশ ব্যবস্থা না নেওয়ায় শাহেদ দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে।

এসব বিষয়ে অভিযুক্ত শাহেদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য চেষ্টা করলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়।

পৌর যুবদলের সভাপতি মিজান বলেন, ‘শাহেদ আমার লোক। ওর মা নেই। এ কারণে আমি ওকে দেখে শুনে রাখি, ১০০-২০০ টাকা দিলে তাতেই চলে। কামারগ্রাম আমার পৌরসভার বাইরে।’

তবে তাকে নিজ হাতে পুলিশি উপস্থিতিতে ছাড়িয়ে নেওয়ার প্রশ্নে কোনো স্পষ্ট উত্তর দেননি তিনি। বলেন, এগুলো নিয়ে গেম চলছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

আবু সাঈদ হত্যা মামলার দশম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ

চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ফের জনতার হাতে আটক যুবদল নেতা

আপডেট সময় ০৬:০৪:৫৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় আবারও আলোচনায় কথিত যুবদল নেতা শাহেদ। পারিবারিক বিরোধের মীমাংসার নামে স্থানীয় গোপালপুর বাজারে এক ব্যবসায়ীর পরিবারের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ করে।

বাজারজুড়ে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছেন জুয়েল মোল্লার ছেলে এই যুবক, যিনি নিজেকে গোপালপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি পরিচয় দিয়ে থাকেন। যদিও এর আগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলা যুবদলের সভাপতি জানিয়েছেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে কোনো তাদের কমিটিই নেই।

ঘটনার সূত্রপাত রোববার (১৫ জুন) রাত ১০টার দিকে। ফয়সাল নামের এক মুরগি ব্যবসায়ীর পারিবারিক বিরোধের জেরে শাহেদ ও তার প্রায় ১০ জন সহযোগী ফয়সালের দোকানে এসে তাকে বাইরে যেতে বলেন। সে দোকানেই অবস্থান করলে তাকে হুমকি দিয়ে বলেন, মীমাংসা না করলে ‘খবর আছে’।

পরদিন সোমবার (১৬ জুন) সকাল ১০টার দিকে আবারও দোকানে গিয়ে ফয়সালকে না পেয়ে তার বাবা মুল্লুক চান ওরফে মুন্নুর কাছে শাহেদ বলেন, ‘চাচা, কিছু টাকা দেন, সব ঠিক হয়ে যাবে, না হলে ঝামেলা হবে।’

বিকেলে শাহেদ আবার আসে, পরে টাকা না পেয়ে মুল্লুক চানকে ধাক্কা মেরে ক্যাশ বাক্স থেকে টাকা নিয়ে নেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবার। চিৎকার শুনে বাজারের লোকজন ছুটে এসে শাহেদকে আটক করে, তবে তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়।

এক পর্যায়ে ফয়সাল ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চাইলে, পুলিশের আগেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান আলফাডাঙ্গা পৌর যুবদলের সভাপতি মিজান ও তার লোকজন। পরে পুলিশ এলে মিজানের ‘ম্যানেজিং’ এ শাহেদকে ছাড়িয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

এ ঘটনার বিষয়ে কথা বলতে চাইলে ফয়সাল বলেন, ‘আমার পারিবারিক সমস্যাকে ঘিরে জোর করে টাকা দাবি করেছে। দোকানে না থাকায় বাবাকে হুমকি দিয়ে আমার বাবা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে ফেলে দিয়ে বাক্স থেকে টাকা নিয়েছে। আমরা থানায় জানিয়েছি কিন্তু প্রতিকার পাচ্ছি না।’

শুধু এই ঘটনাই নয়, এর আগে গত ৯ জুন কামারগ্রামের মুদি ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলামের দোকানে গিয়ে সিগারেট না থাকায় পিস্তল ঠেকিয়ে ২০ হাজার টাকা দাবি করে শাহেদ। পরে ড্রয়ার ভেঙে টাকা নিয়ে চলে যায়। ফয়সালের মতো রফিকুলও থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

পাশাপাশি ঈদের সময় বাড়ি বেড়াতে আসা এক গার্মেন্টস কর্মী কাওসার খানকেও রাস্তা আটকে মারধরের অভিযোগ রয়েছে শাহেদের বিরুদ্ধে।

বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, কাপড় ব্যবসায়ী জয়, কাঁচামালের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর খান এবং টিটিসি মোড়ের কাবুলের দোকানেও একই ধরণের হুমকি-চাঁদাবাজি চালিয়েছে শাহেদ। তারা বলেন, অন্য ব্যাবসায়ীরা থানায় অভিযোগ করেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে এমন হুমকি-চাঁদাবাজির ঘটনায় আতঙ্কে আগেভাগেই দোকান বন্ধ করতে হয়। অভিযোগ করার পরেও পুলিশ ব্যবস্থা না নেওয়ায় শাহেদ দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে।

এসব বিষয়ে অভিযুক্ত শাহেদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য চেষ্টা করলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়।

পৌর যুবদলের সভাপতি মিজান বলেন, ‘শাহেদ আমার লোক। ওর মা নেই। এ কারণে আমি ওকে দেখে শুনে রাখি, ১০০-২০০ টাকা দিলে তাতেই চলে। কামারগ্রাম আমার পৌরসভার বাইরে।’

তবে তাকে নিজ হাতে পুলিশি উপস্থিতিতে ছাড়িয়ে নেওয়ার প্রশ্নে কোনো স্পষ্ট উত্তর দেননি তিনি। বলেন, এগুলো নিয়ে গেম চলছে।